এনসিটিবির প্রস্তাব বিবেচনার দাবি রাখে

0

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) চলতি শিক্ষাবর্ষ আগামী ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। করোনার কারণে শিাক্রম গত তিনমাস বন্ধ এবং আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটি বৃদ্ধির প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে তারা এ প্রস্তাব দিয়েছে। তারা দীর্ঘ বন্ধ বা ছুটিতে শিক্ষার বিশাল তি পুষিয়ে নিতে প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তিও দিয়েছে। এনসিটিবি বলেছে, শিক্ষাবর্ষের ছুটি ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ালে ২০২১ সালে ছুটি কমিয়ে শিক্ষাবর্ষের সময় ঠিক রাখা যাবে। গতকাল দৈনিক লোকসমাজে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত খবরে আরো বলা হয়েছে, এনসিটির চেয়ারম্যান নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেছেন, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটি বাড়লে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষাবর্ষ নিলে সিলেবাস কমানোর কোনো প্রয়োজন পড়বে না। ২১ সালের মার্চে নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হলে ছুটি কমিয়ে সবকিছু ঠিকরাখা সম্ভব। তিনি জানান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালক, আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডর চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক ও মাউশি পরিচালক অধ্যাপক শাহিদুল খবিরসহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ভার্চুয়াল বৈঠকে আলোচনা করেন। বৈঠকে সিলেবাস কমানোর পওে মত আসে। এ নিয়ে যুক্তি পাল্টা যুক্তির প্রেক্ষিতে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্ভব হয়নি।
আসলে বিষয়টি বেশ জটিল ও বিশেষ বিবেচনার বিষয়। দেশে করোনাভাইরাসের সূচনালগ্নে ১৭ মার্চ থেকে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করা। এরপর দীর্ঘদিন শিক্ষাদান বন্ধ থাকার পর সম্প্রতি টিভি ও মোবাইলে পাঠদান শুরু হয়েছে। সংসদ টিভিতে স্কুল ও মোবাইলে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের কিছু কাস শুরু হয়েছে। অত্যন্ত সংপ্তি সময়ের এ কাস একতরফাভাবে হচ্ছে। এতে সরকার হয়তো দাবি করতে পারে, দেশ ডিজিটাল করার কারণে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও শিার কোন ত্রুটি হয়নি। বাস্তবতা আসলে কি তাই? বাস্তবতা আসলে একটু ভিন্ন। শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মাত্রই বিষয়টি জানেন। প্রথমদিকে মাধ্যমিক লেবেলে কিছুটা গ্রহণযোগ্যতা পেলেও এখন আর পাচ্ছে না। বিষয়টা এমন হয়েছে যে, পড়ানোর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তাই পড়ানো হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা কতটুকু শিখলো তা গুরুত্ব পাচ্ছে না। তাছাড়া গ্রাম পর্যায়ে সবার বাড়ি টিভি না থাকাও একটা বিষয় হয়েছে। আমরা অবশ্য সরকারের উদ্যোগকে খাটো করে দেখছি না। অবশ্যই খুব ভালো উদ্যোগ এবং মেধাবীরা সুযোগটি কাজে লাগিয়ে উপকৃত হয়েছে। তবে এর ওপর ভিত্তি করে যদি সিলেভাস কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয় তাহলে তা হবে আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত। আমরা আশা করবো, সরকারের নীতিনির্ধারকরা এ পথে যাবেন না। আমরা মনে করি, এনসিটিবির ফেব্রুয়ারি পর্যস্ত শিক্ষাবর্ষ বৃদ্ধি এবং মার্চ ২১ থেকে ছুটি কমিয়ে ডিসেম্বরে সমাপ্তির প্রস্তাবনা অবশ্যই বিবেচনারযোগ্য। এতে শিক্ষার্থীদের পাঠ ও জ্ঞান অর্জন অনেকটা পূর্ণ হবে। আশা করি, সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে ভাববে।