শহিদুলের জবানবন্দি: মনিরামপুর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ দু’ ব্যক্তি চাল বিক্রি করেন মামুনের কাছে

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরের মনিরামপুরে সরকারি ৫৫৫ বস্তা চাল উদ্ধারের মামলায় আটক শহিদুল ইসলামের আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি থেকে চাঞ্চল্যকর আরও তথ্য মিলেছে। মনিরামপুর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চুসহ দুই ব্যক্তি বিজয়রামপুরের সেই ভাই ভাই রাইস অ্যান্ড চাতালের মালিক আব্দুল্লাহ আল মামুনের কাছে ত্রাণের ১৬ মেট্রিক টন চাল বিক্রি করেছিলেন বলে তিনি জবানবন্দিতে বলেছেন। ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকায় চাল বিক্রি করা হয়। ভাইস চেয়ারম্যান উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক। তবে মামলার তদন্ত সংস্থা ডিবি পুলিশ এ বিষয়ে কোনকিছু জানাতে অপরাগতা প্রকাশ করেছে।
উল্লেখ্য, কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির সরকারি ৫৫৫ বস্তা চাল উদ্ধারের মামলায় ডিবি পুলিশের হাতে আটক তাহেরপুর গ্রামের সোলাইমান মোড়লের ছেলে শহিদুল ইসলাম গত ১০ মে রোববার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। এই জবানবন্দির প্রকৃত এবং বিস্তারিত তথ্য পাওয়া গেছে। এতে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। তার দেয়া জবানবন্দি থেকে জানা যায়, ‘গত ৩০ মার্চ শহিদুল ইসলাম মিলের নামে চালের বরাদ্দের খবর জানতে খাদ্যগুদামে গিয়েছিলেন। পরে সেখান থেকে বেরিয়ে এলে জুড়ানপুর গ্রামের কুদ্দুস, একই গ্রামের রবীন দাসের ছেলে জগদীশ দাস ও বিজয়রামপুর গ্রামের মৃত লুৎফর রহমানের ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুনের সাথে তার দেখা হয়। ওই তিনজন সেখানকার জনৈক কামরুলের কাঠগোলায় বসেছিলেন। তাদের মধ্যে চাল বিক্রি নিয়ে আলাপ হচ্ছিলো। সেখানে কথা হয়, আব্দুল্লাহ আল মামুন মনিরামপুর উপজেলার ভাইস চেয়াম্যান উত্তম চক্রবর্তী এবং কুদ্দুসের কাছ থেকে ১৬ মেট্রিক টন চাল ৫ লাখ টাকায় কিনবেন। এ সময় শহিদুল ইসলামকে চাল কেনার কথা বললে তিনি ত্রাণের চাল হওয়ায় তা কিনতে অপরাগতা প্রকাশ করেন এবং সেখান থেকে চলে যান। এ ঘটনার পর ৪ এপ্রিল খুলনা থেকে ৫ ট্রাক চাল আসে মনিরামপুরের সরকারি গুদামে। সেখান (মনিরামপুর সরকারি খাদ্যগুদাম) থেকে আবার এক ট্রাক চাল গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বিজয়রামপুরের আব্দুল্লাহ আল মামুনের ভাই ভাই রাইস মিল অ্যান্ড চাতালে পাঠিয়ে দেন। এরপর ওইদিন রাতে আব্দুল্লাহ আল মামুন ও ট্রাকচালক চালসহ আটক হন। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু এবং কুদ্দুস ত্রাণের এই চাল ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছিলেন।’ উল্লেখ্য, গত সোমবার এ সংক্রান্ত প্রকাশিত সংবাদে শহিদুল ইসলাম ১৬ মেট্রিক টন চাল মামুন, কুদ্দুস এবং বাচ্চু নামে অপর একজনের কাছ থেকে কেনেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু আসলে তিনি নিজে চাল কেনার কথা বলেননি। প্রকৃতপক্ষে উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু এবং কুদ্দুসের কাছ থেকে মামুন চাল কিনেছিলেন বলে আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে শহিদুল ইসলাম উল্লেখ করেছেন। এদিকে ডিবি পুলিশের ওসি মারুফ আহম্মদ আটক শহিদুল ইসলামের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদানের তথ্য স্বীকার করলেও প্রকাশ পাওয়া আসামিদের বিষয়ে কোনকিছু বলতে রাজি হননি।