ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাতেও মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের হট স্পট ঢাকা। দেশের ৫০ শতাংশের বেশি সংক্রমণ হয়েছে এই শহরে। যাত্রাবাড়ী, রাজারবাগ, মিরপুর, কাকরাইল, মহাখালী, মুগদা, মোহাম্মদপুর, তেজগাঁও, লালবাগ, উত্তরা, ও বাবুবাজারসহ বেশ কয়েকটি এলাকা এখন করোনার রেড জোন। আর ঝুঁকিপূর্ণ এসব এলাকায় মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। গত ২৬শে মার্চ থেকে দেশ কার্যত লকডাউন চলমান। সম্প্রতি বিধি- নিষেধ কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। ফলে করোনায় আক্রান্ত এলাকায়ও খোলা হয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসহ দোকানপাট। এসব এলাকার জীবনযাত্রা যেন অনেকটাই স্বাভাবিক। যত্রতত্র ঘোরাফেরা করছেন সাধারণ মানুষ। নানা অজুহাতে বাসার বাইরে বের হচ্ছে মানুষ। সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত না করে বাসার বাহিরে বের হওয়ায় বাড়ছে করোনার ঝুঁকি।
আইইডিসিআরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী রাজারবাগে করোনা আক্রান্ত ২০০, বৃহত্তর মিরপুরে ১৭৮, কাকরাইলে ১৭৩, যাত্রাবাড়ীতে ১৬৯, মহাখালীতে ১৪৬, মুগদায় ১৪৯ ও মোহাম্মদপুরে ১২৬ জন। এছাড়া তেজগাঁও, লালবাগ, উত্তরা, মালিবাগ ও বাবুবাজারে করোনা আক্রান্ত রয়েছেন ৭০-এর বেশি মানুষ। আইইডিসিআর ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান তাহমিনা শিরীন গনমাধ্যমকে বলেন, আমরা এমন অনেককেই পেয়েছি যাদের কোন লক্ষণ ছিল না কিন্তু তাদের কোভিড-১৯ পজিটিভ। এমন মানুষ যখন ঘোরাফেরা করবে তাদের মাধ্যমে সংক্রমণ হওয়ার বেশি হবে। গার্মেন্টসে যারা কাজ করছেন তাদের মধ্যেও এমন শঙ্কা থাকতে পারে। গতকাল থেকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার শর্তে খুলে দেয়া হয়েছে শপিংমল ও দোকানপাট। খুলছে পুরান ঢাকা, সদরঘাট, পাটুয়াটুলি, ইসলামপুর এলাকার পাইকারি মার্কেটগুলো। ধানমন্ডি, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, উত্তরা এলাকায়ও খোলা হয়েছে দোকানপাট। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজধানীর ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে প্রতিনিয়ত বের হচ্ছে সাধারণ মানুষ। খাবার কিংবা নিত্যপন্য জিনিসের অজুহাতে এক এলাকা থেকে যাচ্ছেন অন্য এলাকায়। ফলে রাস্তাঘাট, দোকানপাটে বাড়ছে ভিড়। ভিড় বাড়ছে মহল্লার অলি-গলিতে। অনেকই জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছেন। মেতে উঠছেন হাসি-তামাশায়। কেউ কোথাও কোনো স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করছে না। তিন ফিট দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলা হলেও তা মানছে না। যার কারণে ক্রমেই ঝুঁকি বাড়ছে।
মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা সামস্-উল আলম মিঠু বলেন, এই এলাকায় প্রথম থেকেই করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এখন ব্যাপকহারে ছড়িয়েছে। তবে মানুষের মাঝে তার কোন প্রভাব দেখছি না। লোকজন আগের মতোই চলাচল করছে। মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডসহ রাস্তার পাশে ছোট ছোট দোকানপাট খুলে বসছে দোকানিরা। অলি-গলিতে ঘোরাঘোরি করে বেড়াচ্ছে বিভিন্ন রকমের মানুষ। এতে করোনার সংক্রমণ আরো বাড়তে পারে। এখানে সামাজিক দুরত্বের অনেক ঘাটতি রয়েছে । এতে বিপদ বাড়াতে পারে। কাকরাইলের ব্যবসায়ী আকবর হোসেন বলেন, কাকরাইলে মানুষের উপস্থিতি দিনে দিনে বাড়ছে। স্বাস্থ্যবিধি সবাই মেনে চলতে পারছে না। একই সঙ্গে একাধিক ক্রেতা এসে জড়ো হয়। খালি হাতেই অনেকে মালামাল নেয়। এতে যে কেউ করোনার ঝুঁকিতে পড়তে পারে। মিরপুরের এক হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী জানান, নিয়ম শিথিল করার কারণে দোকান খুলেছেন। দোকানে ক্রেতাদের উপস্থিতি বাড়ছে। এইসব ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে কার্যকর লকডাউন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়লে সংক্রমণ বাড়বে বলেই মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।