যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে রোগীকে চিকিৎসা না দিয়ে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ : তদন্তের নির্দেশ

0

বিএম আসাদ ॥ যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের চিকিৎসকের বিরুদ্ধে সন্তান সম্ভাব্য এক নারীকে চিকিৎসা না দিয়ে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় তত্ত্বাবধায়ক সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
জান্নাতি বেগম (২৮) নামে ওই প্রসূতিকে গত ৯ মে দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের একজন চিকিৎসক প্রসূতি (ইওসি) হিসেব জান্নাতি বেগমকে এ হাসপাতালে ভর্তি করে রেখে যান। সাথে করোনামুক্ত সনদও দিয়ে যান। জান্নাতি বেগমের মাতা বৃদ্ধা চায়না বেগম তার সাথে থেকে দেখভাল করছেন। চায়না বেগম ও তার স্বজনরা জানিয়েছেন, ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করার পর একজন পুরুষ ও একজন মহিলা চিকিৎসক সন্ধ্যায় জান্নাতিকে চিকিৎসা দিতে যান। এ সময় তারা (চিকিৎসক) জিজ্ঞাসা করেন তিনি (জান্নাতি) করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কি-না। চায়না বেগম চিকিৎসককে জানান, হ্যাঁ, করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। এখন করোনামুক্ত। একথা বলার সাথে সাথে মহিলা চিকিৎসক রোগীর প্রতি অগ্নিশর্মা হয়ে ওঠেন এবং বলেন, করোনায় আক্রান্ত হয়েছিল তা আগে বলোনি কেন ? এ প্রশ্ন করে জান্নাতি ও তার মাতা চায়না বেগমকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। তিনি বৃদ্ধা চায়না বেগমকে ‘চড়িয়ে দাঁত ফেলে দেবো, মাজায় লাথি মেরে সোজা করে ফেলবো ইত্যাদি বলে রোগী ও স্বজনকে লাঞ্ছিত ও নাজেহাল করেন। চিকিৎসকের এ আচরণে রোগী ও তার মাতা চরম অপমানিত হন। অপমান সইতে না পেরে তারা লেবার ওয়ার্ডে বেডে বসে কান্নাকাটি করতে থাকেন। তবে, কোন চিকিৎসক তাকে চিকিৎসা দিতে গিয়েছিলেন তা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত হতে পারেননি রোগীর সঙ্গে চিকিৎসকের এ ধরনের অশোভন আচরণের বিষয় নিয়ে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. দিলীপ কুমার রায়ের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দৈনিক লোকসমাজকে বলেন, ঘটনাটি আমার কানে এসেছে। এ ধরনের আচরণ চরম অন্যায় আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, আমি করোনামুক্ত জান্নাতিকে ভাল পরিবেশে চিকিৎসার জন্য মহিলা পেয়িং ওয়ার্ডের কেবিনে দিয়েছি এবং কোন চিকিৎসক রোগী ও স্বজনের সাথে দুর্ব্যবহার করেছে তার অনুসন্ধান এবং তদন্তের জন্য গাইনি বিভাগের সিনিয়র চিকিৎসক ডা. ইলা মন্ডল ও ডা. নার্গিস আক্তারকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। এরপর তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন জানিয়েছেন, চৌগাছা উপজেলার বানুরহুদা গ্রামের আলমগীর হোসেনের স্ত্রী জান্নাতি গর্ভবতী। গত ২৩ মার্চ তার করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ সংক্রমণ ধরা পড়ে। পরে নিজ বাড়িতে হোম আইসোলেশনে এবং চৌগাছা হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে জান্নাতি করোনামুক্ত হয়। দু’দফা পরীক্ষা শেষে তাকে ৯ মে করোনামুক্ত বলে সার্টিফিকেটও দেয়া হয়েছে। এরপরও যদি কোন চিকিৎসক তার এবং পরিবারের লোকজনের সাথে দুর্ব্যবহার করে থাকে তাহলে তা চরম অন্যায় হয়েছে।