রাস্তায় বাজারে ভিড়, চলছে যে যার মত

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ মহামারী করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে জনগণকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলতে বললেও তা অনেকেই মানছেন না। বিশেষ করে রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে এ নিয়ম মানা হচ্ছে না। যে যার ইচ্ছা মতো গা ঘেঁষাঘেঁষি করে বাজার করছেন। এছাড়া যারা বাজার করতে আসছেন তারা মানছেন না ডিএমপির ওয়ানওয়ে রাস্তায় চলার নির্দেশনা। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, কাওরান বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে এমন দৃশ্যই চোখে পড়েছে। এদিকে এই ধরনের চিত্র দেশের অন্য জেলাগুলোতেও দেখা যাচ্ছে বলে জানা গেছে। রাজধানীর সবচেয়ে বড় কাঁচাবাজার কাওরান বাজারে সামাজিক দূরত্বের বজায়ের কোনও উদ্যোগ দেখা যায়নি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন বলছে, তারা সবাইকে সামাজিক দূরত্ব বাজায় রাখার জন্য বললেও কেউ তা মানছে না।
অপরদিকে, ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের অভিযোগ, করোনা প্রতিরোধে এই বাজারে সিটি করপোরেশনের কোনও উদ্যোগ তাদের চোখে পড়েনি। ফলে এখান থেকে ভাইরাসটি আরো ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা সচেতন মহলের। তবে অনেকের দাবি, আসলে কেউ জীবিকার প্রয়োজনে, কেউ বাজার করতে, কেউ বা অহেতুক ঝুঁকি নিয়েই বাজারে ভিড় করছে। মোড়ে মোড়ে যানবাহন আর মানুষের জটলা চোখে পড়েছে।
কাওরান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেচাকেনায় ব্যস্ত শত শত মানুষ। সেখানে নেই কোনও সামাজিক দূরত্বের বালাই। গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে বাজার করছেন সবাই। গাদাগাদি অবস্থায় কেনাকাটা করে বাসায় ফিরছেন তারা। এই বাজারে কোনও ধরনের সচেতনতামূলক ব্যানারও দেখা যায়নি। এমনকি বাজার মনিটরিংয়ে সরকারি-বেসরকারি কোনও লোকের উপস্থিতিও ছিল না। তবে হাতে গোনা কয়েকজনকে মাস্ক ও ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) পরে বাজার করতে দেখা যায়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনার প্রকোপ ঠেকাতে কাওরান বাজারে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে কোনও পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। নিয়োগ করা হয়নি কোনও স্বেচ্ছাসেবকও। ডিএনসিসির নিজস্ব কর্মী দিয়ে তদারকিও করা হচ্ছে না। তবে করোনা পরিস্থিতির শুরুতে হাত ধোয়ার জন্য ব্যবস্থা করা হলেও এখন সেগুলোও নেই। বাজার করতে আসা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মাহদি আকন্দ বলেন, বাজারে যারা আসছেন তাদের অনেকের মধ্যেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলার কোনো আগ্রহ দেখছি না। আমি নিজে দূরত্ব বজায় রেখে চললেও অন্য একজন এটা না মানায় খুব ঝুঁকির মধ্যে থাকতে হচ্ছে। এখানে এসে দেখি কে আগে কিনবে সেই জন্য সবাই ব্যস্ত। কাওরান বাজারে ভ্যান নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মোস্তফা মিয়া বলেন, ‘এখানকার কেউ দূরত্ব মানছে না। সবাই নিজের ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত। জীবন নিয়ে কেউ চিন্তা করে না। মাছের পাইকারি বাজারেও একই চিত্র। মাছ ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন হাকডাক আর মাছ কেনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে ক্রেতারা তাদের কাছে গিয়ে দরদাম করছেন। শত মানুষের জটলা মাছের বাজারে। এদিকে লকডাউনের মধ্যে সীমিত পরিসরে দোকান খুলে দেয়ার নির্দেশে জমে উঠেছে ইফতার বাজার। আর প্রতিটি দোকানেই ক্রেতারা ভীড় করছে ইফতার কিনতে। কিন্তু কোন দোকানেই মানছেন না স্বাস্থ্য সুরক্ষার নিয়মাবলি।