পণ্য আমদানি শুরু চায় ব্যবসায়ীরাও, কমবে দাম

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে দেশের অবরুদ্ধ অবস্থায় ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার সবধরনের পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। এতে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন উভয় দেশের ব্যবসায়ীরা। এই অবস্থায় দুই দেশের ব্যবসায়ীরা এগিয়ে এসেছেন, বিশেষ করে ভারতীয় নিত্যপ্রয়োজনীয় ও পচনশীল পণ্য আমদানি শুরু করার জন্য। তবে বিষয়টি নির্ভর করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্লিয়ারেন্সের উপর।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই মুহূর্তে দেশে অঘোষিত লকডাউন থাকলেও পণ্যপরিবহনে তেমন সমস্যা হচ্ছে না। কিন্তু মধ্যস্থতাকারীরা এগিয়ে না আসায় পণ্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই জেলা পর্যায়ের সঙ্গে ঢাকায় পণ্যমূল্যে অনেক ব্যবধান দেখা যাচ্ছে। এই অবস্থায় ভারত থেকে পণ্য আমদানি শুরু হলে রমজানের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর দাম কমবে বলে আশা করছেন ব্য্যবসায়ীরা। বেনাপোল-পেট্রাপোল চেকপোস্টের নো-ম্যানস ল্যান্ডে ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্য লোড-আনলোডের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভারত-বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা। বুধবার দুপুরে দুই দেশের নো-ম্যানস ল্যান্ডে এই বিষয়ে জরুরি বৈঠক হয়। বৈঠকে জানানো হয়, বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় দুই দেশের ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এতে আরো জানানো হয়, বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় পেট্রাপোল বন্দরের সেন্ট্রাল পার্কিং থেকে বনগাঁ পৌরসভার কালিতলা পার্কিং পর্যন্ত ২ হাজার ২১৪ পণ্যবোঝাই ভারতীয় ট্রাক দাঁড়িয়ে রয়েছে। এসব ট্রাকে পাটবীজসহ বিভিন্ন ধরনের পচনশীল পণ্য ও শিল্প কল-কারখানায় ব্যবহৃত কাঁচামাল রয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী, ভারতীয় ট্রাকচালকরা বাংলাদেশে আসলে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে রাখবে পেট্রাপোল পুলিশ। তাই সংগঠনের নেতারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ভারতীয় ট্রাক নো-ম্যানস ল্যান্ড পর্যন্ত আসবে। বাংলাদেশি ট্রাকচালক ও শ্রমিকরা সেখান থেকে মালামাল লোড-আনলোড করে নেবে। তবে এজন্য বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) অনুমতি লাগবে। আর পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মতির উপর। এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (আনসার ও সীমান্ত) মো. সাহেদ আলী বলেন, নো-ম্যানস ল্যান্ড ব্যবহার করে কার্যক্রম চালুর বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাকি বিষয়েও আশা করছেন, ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসবে।
বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা যদি নো-ম্যানস ল্যান্ড থেকে পণ্য গ্রহণ করে তাহলে বেনাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ সহযোগিতা করার ঘোষণা দিয়ে রেখেছে। একই সঙ্গে করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে বন্দর ব্যবহারকারীদের স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক হ্যান্ড গ্লাভস, মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার অথবা সাবান পানির ব্যবস্থা থাকবে বলেও কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এদিকে, গত ২৭ এপ্রিল পণ্যবাহী জাহাজ চালুর বিষয়ে সম্মতি জানিয়ে বাংলাদেশকে চিঠি দেয় ভারত। এর প্রেক্ষিতে করোনাভাইরাসের কারণে এক মাসেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর গত বুধবার থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পণ্যবাহী জাহাজ চালানোর অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। চাহিদা অনুযায়ী এখন যে কোনো সময় দুই দেশের মধ্যে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল করতে পারবে। গত ২৩ মার্চ থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।