৪ শতাধিক পোশাক কারখানায় উৎপাদন শুরু

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানা চালুর প্রথম দিন রোববার প্রায় ৪ শতাধিক তৈরি পোশাক প্রতিষ্ঠান সীমিত আকারে উৎপাদন শুরু করেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এদিকে করোনা ভাইরাসে অবরুদ্ধ অবস্থার মধ্যে গাজীপুরে কারখানা চালুর প্রথম দিনই বকেয়া বেতন পরিশোধ ও লে-অফ কারখানা খোলার দাবিতে বিক্ষোভ করেছে শ্রমিকরা। ফলে বিক্ষোভের সময় সামাজিক দূরত্ব মানা সম্ভব না হওয়ায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঝুঁকি রয়েগেছে তবে উদ্যোক্তাদের দাবি, সামাজিক দূরুত্ব নিশ্চিত করতে কারখানার অভ্যন্তরের যন্ত্রপাতি স্থানান্তর করে পরিবর্তনের মাধ্যমে গড়ে ৩০ শতাংশ শ্রমিক দিয়ে প্রথম দিনের উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে।
এই ৩০ শতাংশ শ্রমিকদের বেশিরভাগই কারখানার আশে-পাশে বসবাস করেন। তবে কিছু শ্রমিক গণপরিবহন বন্ধ থাকার মধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে শিল্পাঞ্চলে ফিরেছেন। এ মুুহূতে ঢাকার বাইরের শ্রমিকদের কারখানায় না আনার জন্য কঠোরভাবে নির্দেশ দেয়া হয়েছে পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএর পক্ষ থেকে।
বিজিএমইএ সূত্রে জানা যায়, সীমিত পরিসরে কারখানা খোলা রাখার সুযোগ চেয়ে ৮৫৮টি কারখানা কর্তৃপক্ষ থেকে সংগঠনের কাছে আবেদন আসে। তবে করোনা সংক্রমণের পর রপ্তানি আদেশ বাতিলের সাধারণ ঘটনার পর কোন কারখানায় এই মুহূর্তে কি ধরনের কাজ রয়েছে- সে বিষয়ে একটি জরিপ চালিয়েছে বিজিএমইএ। গত কয়েক দিন ধরে পরিচালিত এই জরিপের ফলের ভিত্তিতে জরুরি কাজের কারখানাগুলোকে খুলে দেয়ার জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে খোলার অনুমতি পাওয়া কারখানার সংখ্যা প্রায় ৪ শতাধিক। ঢাকা মেট্রো এলাকা, এবং নারায়ণগঞ্জের তুলনামূলক বড় কারখানাগুলোকে এক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। কারখানা মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার সকাল থেকেই মাস্ক এবং হাত মোজা পড়ে কারখানায় ঢুকতে দেয়া হয়েছে শ্রমিকদের। প্রবেশ মুখে শ্রমিকদের শরীরের তাপমাত্রা মাপা হয়। হাত ধোয়ার পর্যাপ্ত উপকরণও ছিল। সব মিলিয়ে কোনো ধরনের সমস্যা ছাড়াই প্রথম দিনের উৎপাদন কার্যক্রম চলেছে। গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার বলেন, যত বেশি সংখ্যক কারখানা খুলে দেয়া হবে বলে আশঙ্কা ছিল তত বেশি শেষ পর্যন্ত রোববার খোলা হয়নি। ঢাকার ভেতরের খুব কম কারখানাই খোলা হয়েছে। তার অভিযোগ, সব কারখানায় স্বাস্থ্য বিধি পুরোপুরি মানা সম্ভব হয়নি।
কারখানা খোলার শর্ত হিসেবে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে বিজিএমইএ একটি গাইডলাইন করেছে। এই গাইডলাইন সদস্য কারখানায় পাঠিয়েছে। এতে বলা হয়, কারখানায় প্রবেশের আগে শ্রমিকদের শরীরের তাপমাত্রা মেপে দেখতে হবে। কারখানা ভবনের বাইরে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে। শ্রমিক কর্মচারীসহ কারখানায় প্রবেশের ক্ষেত্রে সকলের জুতায় জীবাণুনাশক স্প্রে করতে হবে। এছাড়া কারখানায় প্রবেশের আগে জুতাগুলো যেন পলিব্যাগে রেখে একটি নির্দিষ্ট রাখতে হবে। এসব স্বাস্থ্য বিধি মানা হচ্ছে কিনা তা তদারক করতে মনিটরিং টিম গঠন করেছে বিজিএমইএ। তবে রপ্তানি আদেশের কাজ না থাকা কিংবা কম থাকা কারখানাগুলো সরকারি সাধারণ ছুটির সঙ্গে মিল রেখে আগামী ৫ই মে পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিজিএমইএর সহসভাপতি আরশাদ জামাল বলেন, গতবারের দুঃখজনক অভিজ্ঞতার কারণে এবার আগে-ভাগেই বিজিএমইএ এ বিষয়ে সতর্ক পদক্ষেপ নিয়েছে। সব সদস্য কারখানাকে বলে দেয়া হয়েছে যাতে দূর দূরান্তের কোন শ্রমিককে এ মুহূর্তে আনা না হয়। শ্রমিক নেতা সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইলসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অনেক শ্রমিক শিল্পাঞ্চলে আসতে শুরু করেছে। ঝুঁকি নিয়ে তারা আসছে। কারো কোনো বাধা তারা মানছে না। আসলে চাকরি হারানোর আতঙ্ক থেকেই এই ঝুঁকিটা নিচ্ছেন তারা।