সুন্দরবনে চোরা হরিণ শিকারী চক্র তৎপর জীবিত হরিণ ও হরিণের মাংস উদ্ধার

0

মনিরুল হায়দার ইকবাল, মোংলা (বাগেরহাট) ॥ সুন্দরবনে চোরা হরিণ শিকারী চক্রের আনাগোনা বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে বনে লকডাউনের সুযোগ কাজে লাগিয়ে শিকারী চক্র হরিণ শিকারে মেতে উঠেছে। এ অবস্থায় পূর্ব সুন্দরবনে অনেকটা অঘোষিত রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে। সীমিত করা হয়েছে বনরক্ষীদের সকল প্রকার ছুটি। গত তিন সপ্তাহের ব্যবধানে সুন্দরবনের গহীন থেকে বিপুল পরিমাণ হরিণধরা ফাঁদ ও বনসংলগ্ন লোকালয় থেকে জীবিত হরিণ ও জবাই করা হরিণের মাংস উদ্ধার করা হয়েছে।পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) জয়নাল আবেদীন জানান, করোনার এ সময় লকডাউনে সবাই যখন কিছুটা স্থবির সে সময় একাধিক চোরা শিকারীচক্র সুন্দরবনে ফাঁদ পেতে হরিণ শিকারের অপরাধে মেতে উঠেছে। গত তিন সপ্তাহে বনের বিভিন্ন স্থান থেকে হরিণ ধরা বিপুল পরিমাণ নাইলনের দড়ির ফাঁদ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১০ এপ্রিল বনের কচিখালী ডিমেরচর এলাকায় ৫শ ফুট, ১৭ এপ্রিল দুপুরে চান্দেশ্বর এলাকায় ৭ শ ফুট এবং ২৮ মার্চ বিকেলে চরখালী এলাকা থেকে ৫শ ফুট ফাঁদ উদ্ধার করা হলেও কোন শিকারীকে আটক করা সম্ভব হয়নি। এ সব ঘটনায় বন আইনে ৩টি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।
এ ছাড়া গত তিন দিনের ব্যবধানে লোকালয় থেকে দুটি জীবিত হরিণ ও জবাই করা হরিণের মাংস উদ্ধার করা হয়েছে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে বনরীরা শরণখোলা উপজেলার সুন্দরবনের লাগোয়া সোনাতলা গ্রামে অভিযান চালান। অভিযানে ওই গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের বাড়ির পাশের গোবরের স্তুপ থেকে ককশিটে বক্সে ভরা ওই হরিণের মাংস উদ্ধার করা হয়। তবে এ সময় জড়িত কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে বন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ দিকে গত শুক্রবার ও বুধবার রাতে পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার দুটি গ্রাম থেকে দুটি জীবিত হরিণ গ্রামবাসী উদ্ধার করে বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করেছেন। পরে হরিণ দুটি সুন্দরবনে অবমুক্ত করা হয়। স্থানীয়দের ধারণা, এ হরিণ দুটি চোরা শিকারী চক্র সুন্দরবন থেকে জবাই করার উদ্দেশ্যে ধরে এনে ছিলো। পরে শিকারী চক্রের কবল থেকে হরিণ দুটি ছুটে গিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করে। পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ( ডিএফও ) বেলায়েত হোসেন জানান, সীমিত করা হয়েছে বনকর্মীদের সকল প্রকার ছুটি। বনের অভ্যন্তরে চোরা শিকারী অনুপ্রবেশ রোধে ইতোমধ্যে জোরদার করা হয়েছে বনরক্ষীদের টহল তৎপরতা। তিনি দাবি করে বলেন, করোনার সময় হরিণ শিকারীচক্র তৎপর হলেও বনরক্ষীদের কঠোর নজরদারির কারণে তারা সফল হচ্ছে না।