যশোরে ত্রাণের দাবিতে কর্মহীন মানুষের বিক্ষোভ, বরাদ্দ অপ্রতুল দাবি মেম্বারের

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরে ত্রাণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন কর্মহীন দরিদ্র মানুষ। গতকাল শনিবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে যশোর-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে এ বিক্ষোভ করেন তারা। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে সেনাসদস্যরা ত্রাণের আশ^াস দিয়ে তাদের ঘরে ফেরান। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির দাবি, প্রয়োজনের তুলনায় বরাদ্দ কম হওয়ায় মানুষ ঘরের বাইরে চলে আসছে। যশোর সদর উপজেলার নওয়াপাড়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নদীপাড়ের বাসিন্দারা ত্রাণ না পেয়ে শনিবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময় বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় বসে ও শুয়ে পড়েন। শাহানা নামে একজন বিক্ষোভকারী অভিযোগ করেন, একমাস ধরে কর্মহীন হয়ে ঘরে রয়েছেন তারা। সরকার থেকে ত্রাণের ঘোষণা দেয়া হলেও তাদের ভাগ্যে কিছুই জোটেনি। স্থানীয় মেম্বারের কাছে জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়েও কোন লাভ হয়নি। তারা জানিয়েছেন বরাদ্দ পেলে দেয়া হবে। ফলে ক্ষুধার জ¦ালা সইতে না পেরে আজ তারা রাজপথে নেমে এসেছেন। কিন্তু পুলিশ এসে তাদের প্রতি সহমর্মিতা না দেখিয়ে উল্টো লাঠিচার্জ করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। রাসেল হোসেন নামে একজন জানান, ‘রোজা রেখেছি। ঘরে খাবার নেই বলে রাস্তায় এসেছি যাতে প্রশাসন বিষয়টি জানতে পারে। পুলিশকেও ফোন দিয়ে জানিয়েছি। কিন্তু পুলিশ এসে উল্টো আমাদের মারপিট করেছে। পুলিশ কি এভাবে মারার অধিকার রাখে? একজন রোজাদারকে পুলিশ মারলো আল্লাহ এর বিচার করবেন।’ নার্গিস নামে এক নারী বলেন, ‘আমরা অনেকে না খেয়ে রোজা রেখেছি, ইফতার কী দিয়ে করবো জানিনা। আমরাতো বঙ্গবন্ধুর লোক। আমরা না খেয়ে থাকবো কেন?’ সাজ্জাদ নামে অপর একজন বলেন, ‘দুদিন ধরে না খেয়ে আছি। ক্ষুধার জ¦ালা কী সেই বোঝে যে না খেয়ে থাকে। ক্ষুধার জ¦ালা সইতে না পেরে রাজপথে নামতে বাধ্য হয়েছি। মেম্বার অন্যদের চাল-ডাল দেন, কিন্তু এই নদীপাড়ে কাউকে দেননি।’
এদিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা বিক্ষোভ প্রশমন করতে ব্যর্থ হলে দুপুর একটার দিকে খবর পেয়ে সেনাসদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে যান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এসময় তিনি তালিকা করে ঘরে ঘরে ত্রাণ পৌঁছে দেবার আশ^াস দেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ কামরুজ্জামান বলেন, তালিকা তৈরির নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সবার ঘরেই খাবার পৌঁছে দেয়া হবে। এদিকে স্থানীয় মেম্বার সাজ্জাদুল হক রিপন বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডে ৮ হাজার ভোটার। এর বাইরে বিভিন্ন এলাকার লোক ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করে। সব মিলিয়ে ২০ হাজার লোকের বসবাস। সেখানে আমি বরাদ্দ পেয়েছি মাত্র ৭০ ব্যাগ ত্রাণ। এর বাইরে বিভিন্ন জায়গা থেকে সহায়তা এনে দেবার চেষ্টা করছি। কিন্তু তাও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। যে কারণে মানুষ ঘরের বাইরে চলে আসছে। তাদের তালিকা করা হচ্ছে। দ্রুতই তাদের ত্রাণ পৌঁছে দেয়া হবে বলে জানান তিনি।