কে হচ্ছেন উনের উত্তরসূরি?

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উন জীবিত না মৃত? সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আর পশ্চিমা কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে এ নিয়ে চলছে জোর জল্পনা-কল্পনা। মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে কেউ দাবি করেছেন উন জীবিত, তবে অবস্থা গুরুতর। আবার কেউ দাবি করেছেন উত্তর কোরিয়ার শীর্ষনেতা কোমায় আছেন। উনের স্বাস্থ্যের পরামর্শ দিতে শুক্রবার চীন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের একটি দল উত্তর কোরিয়ায় পাঠানোর পর এই জল্পনা-কল্পনা আরও বেগ পেয়েছে। ‘যাহা রটে তাহা কিছুতো বটে’ সেই প্রবাদের আলোকেই বলা যায়, পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রটির শাসকের শারীরিক পরিস্থিতি খুব বেশি সুবিধার নয়। নইলে পশ্চিমাদের বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনো প্রচার-প্রচারণার বিরুদ্ধে সরব উত্তর কোরিয়ার সংবাদমাধ্যমের এ ব্যাপারে এখনও নিশ্চুপ থাকার কথা নয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সত্যিকারার্থেই উনের মৃত্যু হয়ে থাকলে এই দেশটির হাল ধরবেন কে?
মেরিন করপস ইউনিভার্সিটির সিকিউরিটি স্টাডিজের অধ্যাপক জেমস জয়েনার এক নিবন্ধে লিখেছেন, কিম জং উন উত্তর কোরিয়ার শাসক গোষ্ঠীর তৃতীয় প্রজন্ম। উনের বাবা ও দাদা মৃত্যুর আগে উত্তরসূরী নির্ধারণের সুযোগ পেয়েছিলেন। তাই তাদের মৃত্যুর পর ক্ষমতার হস্তান্তরটা নির্বিবাদেই হয়েছিল। তবে উনের সন্তানরা বয়সে এখনও অনেক ছোট। সেই হিসেবে তার সন্তানদের ক্ষমতায় বসাতে পারছে না কমিউনিস্ট পার্টি বা সামরিক বাহিনী। কিম পরিবারের সদস্যদের মধ্যে এরপর বাকি থাকে উনের একমাত্র বোন কিম ইয়ো জং। গত বছর থেকেই বোনকে দলের উচ্চ পর্যায়ের দায়িত্ব দিয়েছিলেন উন। কিন্তু পারমাণবিক শক্তিধর এই দেশটি একজন নারীকে ক্ষমতায় বসাবে কিনা সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। নিরাপত্তা বিশ্লেষক স্টিভ মেৎজ ওয়ার্ল্ড পলিটিকস রিভিউতে এক কলামে লিখেছেন, কোনো উত্তরসূরী না পাওয়া গেলে উত্তর কোরিয়ার পুরো শাসন ব্যবস্থা ধসে পড়া অসম্ভব কিছু নয়। আর সেই দৃশ্যটি ভালো কিছু হবে না। স্টিভ মেৎজ লিখেছেন, ‘সবচেয়ে বিপজ্জনক ব্যাপার হচ্ছে, পুরো ব্যবস্থাটি ধসে পড়বে। কারণ উত্তর কোরিয়ার যুদ্ধবাজ নেতারা জোড়াতালি দিয়ে ছোট ছোট রাজ্যগুলোকে শাসন করে আসছেন। ফলে এখানে ভয়াবহ চিত্রটি হচ্ছে গৃহযুদ্ধ ও মানবিক বিপর্যয়। নগদ অর্থের জন্য হয়তো যুদ্ধবাজ নেতারা পারমাণবিক, জৈব ও রাসায়নিক অস্ত্র অন্যদের কাছে বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা করবে কিংবা একে অন্যের বিরুদ্ধে এসব অস্ত্র প্রয়োগ করবে।’ অবশ্য এ ধরনের কিছু ঘটলে চীন যে দ্রুত হস্তক্ষেপ করবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ বেইজিং খুব ভালোভাবেই জানে, তার এই আঞ্চলিক ঘনিষ্ঠ মিত্রটির পতন মানে হচ্ছে, নিজের সীমান্তে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রবেশের সুযোগ করে দেওয়া। তাই ক্ষমতার লড়াই যদি বেঁধেই যায়, আর তাতে উনের বোন কিম ইয়ো জং বা কমিউনিস্ট পার্টির অন্য কোনো নেতা টিকে থাকতে পারেন তাহলে তাকে পুরোপুরি সহায়তা করবে চীন। আর পরিস্থিতি যদি গৃহযুদ্ধের দিকে মোড় নেয় তাহলে কালবিলম্ব না করে সরাসরি পিয়ংইয়ংয়ের ওপর হস্তক্ষেপ করবে বেইজিং।