ভারত থেকে বাংলাদেশি উদ্ধার কার্যক্রম আপাতত স্থগিত! ফ্লাইটে ফিরেছেন ৯৯৬, সড়ক পথে কয়েক ‘শ

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ দিল্লি থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি আর চেন্নাই থেকে ইউএস-বাংলার ৫টি- মোট ৬ স্পেশাল ফ্লাইটে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে করোনার কারণে দীর্ঘ সময় ভারতে আটকে থাকা ৯৯৬ বাংলাদশিকে। আকাশ পথে ফেরার সূযোগ না পেয়ে কিংবা স্পেশাল ফ্লাইটের অপেক্ষায় না থেকে ভোগান্তি মাথায় নিজ উদ্যোগে এই ক’দিনে স্থলসীমান্ত দিয়ে ফিরেছেন আরও কয়েক ‘শ বাংলাদেশি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, যাদের ফেরা জরুরি ছিল অর্থাৎ শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠ রোগী, তাদের স্বজন এবং শিক্ষার্থী- সব মিলে প্রায় দেড় হাজার বাংলাদেশি ফেরানো সম্ভব হয়েছে। তবে এখনও হাজার খানেক ফেরার বাকী রয়েছেন। কিন্তু নানা কারণে ভারতে আটকে পড়া বাংলাদেশি উদ্ধার কার্যক্রম আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। সর্বশেষ পরিচালিত স্পেশাল ফ্লাইটে শনিবার চেন্নাই থেকে ৫ শিশুসহ ১৬৬ জন ফিরেছেন জানিয়ে- আটকে পড়াদের উদ্ধারে দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশনা এবং দিল্লিস্থ বাংলাদেশ মিশনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় চেন্নাই রুটে পরিচালিত ৫ টি স্পেশাল ফ্লাইটে শিশু, রোগীসহ মোট ৮৩৩ বাংলাদেশিকে তারা ফিরিয়ে এনেছেন। আটকে পড়া বাংলাদেশিদের সংখ্যা বিবেচনায় চেন্নাইতে ৬ এবং কলকাতায় দু’টি- মোট ৮ স্পোশাল ফ্লাইট পরিচালনার প্রস্তাব করা হয়েছিল জানিয়ে মিস্টার ইসলাম বলেন, সরকারের তরফে কেবল চেন্নাই রুটে (আপাতত) ৫ টি ফ্লাইট পরিচালনার নির্দেশনা বা অনুমোদন ছিল। সে হিসাবে পরবর্তী নির্দেশনা না থাকায় আর কোন ফ্লাইট যাচ্ছে না।
যদিও চেন্নাই এবং কলকাতা উভয় রুটেই ফ্লাইটের ডিমান্ড রয়েছে। দিল্লিস্থ বাংলাদেশ মিশনও বলছে, লকডাউন শিথিল না হওয়া পর্যন্ত কলকাতায় কেউ ঢুকতে বা বের হতে পারবে না। আর চেন্নাইকে করোনার এপি সেন্টার ঘোষণা করেছে দিল্লি। ফলে চেন্নাই এবং কলকাতায় এই মুহুর্তে ফোনো ফ্লাইট চালানো সম্ভব হচ্ছে না। সড়ক পথে বিশেষ স্থলবন্দরেও এখন কড়াকড়ি।
নয়া দিল্লীস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশনের সরবরাহ করা তথ্য মতে, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা-সহ সীমান্তবর্তী রাজ্যসমূহ থেকে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ মিশনগুলির সহায়তায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আটকেপড়া বাংলাদেশী দেশে ফিরে গেছেন। দিল্লী ও কলকাতা মিশনের মাধ্যমে ভারত সরকারের প্রয়োজনীয় অনুমোদন নিয়ে তাদের ফেরানো হয়েছে। গত ২৫ শে মার্চ থেকে ভারতজুড়ে লকডাউন শুরুর আগে থেকেই ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনসমূহ সার্বক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আটকে পড়াদের সহায়তার জন্য হটলাইন, হেল্পলাইন চালু করে। এই সব ফোনে গত এক মাসে প্রায় ১০ সহস্রাধিক কল আসে এবং যোগাযোগকারীদেরকে প্রয়োজনীয় তথ্য ও পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করা হয়। তাদের সকলের তালিকাও করা হয়েছে । প্রাপ্ত তথ্য থেকে অনুমিত হয় যে প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার বাংলাদেশী ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে অবস্থান করছিলেন । তালিকাভুক্তদের অনেকের সাথেই দূতাবাস নিজ উদ্যোগে যোগাযোগ করে সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করে । ছাত্রছাত্রীদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের জন্য বিশেষ হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ খোলা হয় ও একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গ্রুপটির সমন্বয়ের জন্য দায়িত্ব পালন করেন। উক্ত গ্রুপে ছাত্রছাত্রীদের সাথে বিগত সপ্তাহসমূহে কয়েকশত বার্তা বিনিময় হয়। মুলত বেশির ভাগেরই দেশে ফেরার আকুতি ছিল। বাংলাদেশ মিশন জানায়, শুক্রবার অপরাহ্নে দিল্লী থেকে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে ফেরা এক শিশুসহ ১৬৩ জনের অধিকাংশই ছিলেন রোগী । তবে স্পেশাল ওই ফ্লাইটে বেশ কিছু ছাত্র-ছাত্রীও ফিরেছেন। ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার মোহাম্মদ ইমরানের নেতৃত্বে দূতাবাস কর্মকর্তাদের একটি দল তাদের ফ্লাইটে ওঠার পূর্বে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানসহ আন্তরিক বিদায় জানায়।