বিটিআরসিকে ১ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ গ্রামীণফোনের নগদ প্রবাহ কমেছে ৭৫ শতাংশ

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ উচ্চ আদালতের নির্দেশে এ বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে (বিটিআরসি) ১ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে গ্রামীণফোন লিমিটেড। বকেয়া রাজস্ব বাবদ বিটিআরসির দাবীকৃত অর্থের বিপরীতে কোম্পানিটি এ অর্থ দিয়েছে। কোম্পানির কাছ থেকে বড় অংকের নগদ অর্থ বেরিয়ে যাওয়ার কারণে চলতি ২০২০ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) শেয়ারপ্রতি পরিচালন নগদ প্রবাহ প্রায় ৭৫ শতাংশ কমেছে।
প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে বিটিআরসিকে পরিশোধ করা অর্থকে অন্যান্য অস্থায়ী সম্পদ হিসেবে দেখিয়েছে গ্রামীণফোন। এর মানে হচ্ছে ভবিষ্যতে আইনি লড়াই শেষে কোম্পানিটি এ অর্থ ফেরত পাওয়ার প্রত্যাশা করছে। চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে এ খাতে কোম্পানিটির অর্থের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৫৭ কোটি টাকা, যা এর আগের বছরের একই সময়ে ছিল মাত্র ৫৫ কোটি টাকা। অস্থায়ী সম্পদ ১ হাজার কোটি টাকা বেড়ে যাওয়ার কারণে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) আলোচ্য সময়ে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩৬ টাকা ৩১ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২৮ টাকা ৪০ পয়সা।
চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে গ্রামীণফোনের রাজস্ব আয় হয়েছে ৩ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা, যা এর আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৩ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির রাজস্ব আয় বেড়েছে ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১ হাজার ৬৯ কোটি টাকা, যা এর আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৮৪৯ কোটি টাকা। মুনাফা বেড়েছে ২৫ দশমিক ৮১ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে (ইপিএস) ৭ টাকা ৯২ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৬ টাকা ২৯ পয়সা। এদিকে আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি পরিচালন নগদ প্রবাহ (এনওসিএফএস) হয়েছে ২ টাকা ৮৪ পয়সা, যা এর আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১১ টাকা ৩১ পয়সা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির এনওসিএফএস কমেছে ৭৪.৮৮ শতাংশ। নগদ প্রবাহ কমার কারণ হচ্ছে বিটিআরসিকে দেয়া ১ হাজার কোটি টাকা কোম্পানিটি তার প্রান্তিক আর্থিক প্রতিবেদনে সরবরাহকারী, ঠিকাদার ও অন্যদের অর্থ পরিশোধ হিসেবে নগদ প্রবাহ বিবরণীতে দেখিয়েছে। এ বছরের ৩১ মার্চ শেষে এ খাতে কোম্পানির ২ হাজার ১০৯ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে, যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে এ খাতে ব্যয় ছিল ১ হাজার ৭৫ কোটি টাকা।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৪ নভেম্বর বিটিআরসির নিরীক্ষা দাবির ১২ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ২ হাজার কোটি টাকা তিন মাসের মধ্যে বিটিআরসিকে পরিশোধ করতে সময় বেঁধে দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। এ আদেশের ওপর গত ২৬ জানুয়ারি রিভিউ পিটিশন দাখিল করে গ্রামীণফোন। শুনানি শেষে ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ১ হাজার কোটি টাকা পরিশোধে গ্রামীণফোনকে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। সে অনুযায়ী একদিন বাকি থাকতেই গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বিটিআরসিকে এক হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করে গ্রামীণফোন।