চৌগাছায় ধানকাটা শ্রমিক সংকটের আশঙ্কা

0

এম এ রহিম চৌগাছা (যশোর)॥ যশোরের চৌগাছায় ধানকাটা শ্রমিক সংকটের আশঙ্কায় চাষীরা। ধান পুরো এখনও পাক ধরেনি। অনেকে এখনও ধানে সেচ দিচ্ছেন। তবে আগাম জাতের ধান উঠতে শুরু করেছে। উপজেলায় পাকা ধানের শীষে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন। পুরোদমে ধান কাটা শুরু হতে সপ্তাহখানেক সময় লাগতে পারে। বৈরী আবহাওয়া ও করোনা প্রাদুর্ভাবে শ্রমিক সংকটের আশঙ্কা করছেন ধান চাষীরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে পৌরসভাসহ ১১ টি ইউনিয়নে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৭ হাজার ৮’শ ২০, হেক্টর জমিতে। অর্জন হয়েছে ১৮ হাজার ৫’শ হেক্টর। সম্ভাব্য উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৬ হাজার ৯’শ ২০ মেট্রিকটন। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে চাষ হওয়ায় ৪ হাজার ৮০ মেট্রিক টন ধান বেশি উৎপাদন হওয়ার আশা করছেন কৃষি অফিস।
করোনার থাবায় বিশ্বজুড়ে চলছে লকডাউন। থেমে গেছে বিশ্ব অর্থনীতির চাকা। স্থবির হয়ে পড়েছে কর্মজীবি মানুষের জীবনধারা। বন্ধ হয়ে গেছে সব ব্যবসা-বাণিজ্য। এ পরিস্থিতিতেও ক্ষেত-খামারে কাজ করছেন কৃষক। করোনাও থামাতে পারেনি গ্রামঞ্চলের কৃষকদের। সর্বদা অর্থনীতির চাকাকে মেরামতের কাজে ব্যস্ত তারা। উপজেলার চাঁদপাড়া গ্রামের ধানচাষী আলী হোসেন বলেন, ‘এ বছরে ৮ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। ইতি মধ্যে ধান পাকতে শুরু করেছে। এক সপ্তাহের মধ্যে ধান কাটা শুরু হবে। তিনি বলেন ফলনও ভালো হবে আশা করছিন। তবে বৈরি আবহাওয়া ও করোনা প্রাদূর্ভাবের ফলে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে’।
উপজেলার রাকৃষ্ণপুর গ্রামের ধান চাষী আবু সিদ্দিক ও আব্দুল হামিদসহ অনেকে জানান, ‘এ বছর ধানের জমিতে অন্য বছরের তুলনায় বেশি সেচ দিতে হয়েছে। পোকামাকড়ের উপদ্রবও ছিল বেশি। তার পরেও ভালো ফলনের আশা করছি। শ্রমিক সংকটের আশঙ্কা থাকলেও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে খুব একটা সমস্য হবে না। এ সময় তারা কৃষকের নিকট থেকে সরাসরি ন্যায্য মুল্যে সরকারি ধান ক্রয়ের দাবীও করেন। উপজেলার কৃষি উপ-সহকারী কর্মককর্তা চাদআলী জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ধান কাটা নিয়ে প্রতি বছর কৃষক-শ্রমিকের বিপুল প্রস্তুতি থাকলেও এ বছরের প্রোপট পুরোপুরি ভিন্ন। এবার ধান কাটার চেয়ে বেশি মনোযোগী হতে হবে স্বাস্থ্য সুরায়। সাধারণত কৃষক-শ্রমিকরা ধান কাটার সময় এক সাথে থাকা খাওয়া, একে অন্যের কৃষিযন্ত্রপাতি ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু এ বছর করোনার ফলে দুরুত্ব বজায় না রাখলে বিপদ হতে পারে। তাই আমাদের পক্ষ থেকে সামাজিক দুরুত্ব বজায় রেখে কৃষি কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রইচ উদ্দীন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যেই এই সমস্যা উপলব্ধি করে কৃষক ও শ্রমিকের যাতায়াতের সুব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। কৃষক-শ্রমিকের জন্য সব জায়গায়, হাত ধোয়ার সাবান-পানির ব্যবস্থা থাকতে হবে। প্রত্যেকের পৃথক মাস্ক ও গামছা ব্যবহার করতে হবে। কৃষিসরঞ্জাম ও উপকরণগুলো ব্যবহারের আগে-পরে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। তা না হলে কৃষকের জন্যও মহা বিপদ আসতে পারে।