চৌগাছায় পানির স্তর নিচে নেমে গেছে বিপাকে কৃষক

0

এম এ রহিম চৌগাছা (যশোর)॥ যশোরের চৌগাছায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় বোর সাথী ফসল নিয়ে মহাবিপাকে কৃষকরা। একদিকে বৈশাখের প্রখর রোদে দাপদাহে শুকাচ্ছে বোর েেতর পানি। অন্যদিকে পানির অভাবে উঠতি সাথী ফসল শুকিয়ে নষ্ট হচ্ছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নে চলতি মৌসুমে প্রায় ১৭ হাজার ৩শ হেক্টর জমিতে ইরি-বোর ধান চাষ করা হয়েছে। উপজেলায় মোট ১১ হাজার ৪শ ১৩ টি সেচ পা¤প রয়েছে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ চালিত গভীর নলকূপ ১৫৬ টি এর মধ্যে বিএডিসির রয়েছে ১৮টি ও অগভীর ৫৯৪ টি। ডিজেল চালিত সেচ পা¤প ১০ হাজার ৫শ টি এবং সোলার পা¤প রয়েছে ৭টি। পানিরস্তর নিচে নেমে যাওয়ায় সেচ পা¤েপ পানি কম উঠছে। কেউ কেউ মাটি খুঁড়ে ১০/১২ ফুট নিচে মেশিন বসিয়ে পানি তোলার চেষ্টা করছেন। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, সেচ কৃষকের সেচ পাম্পে পানি অনেক কম উঠছে। অনেকে বাধ্য হয়ে ১০ ফুট পর্যন্ত গর্ত করে পাম্প মাটির নিচে বসিয়ে জমিতে পানি দিচ্ছেন। উপজেলার সিংহঝুলী, পাশাপোল ও সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নে এ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে।
এদিকে বোর মৌসুমে উপজেলার বেশিরভাগ গ্রামের নলকূপে পানি উঠছেনা। অনেকেই ১০/১২ ফুট মাটি খুড়ে মটর বসিয়ে পানি তোলার চেষ্টা করছেন। সুকপুকুরিয়া ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল হামিদ, পাশাপোল ইউনিয়নের মৎস্যরাঙ্গা গ্রামের আব্দুল খালেক, সিংহঝুলী গ্রামের কৃষক বাদলসহ উপজেলার অনেক কৃষক জানান, ১০০ থেকে ১৩০ ফুট গভীরে পাইপ বসিয়ে ঠিকঠাক মতো পানি উঠছে না পাম্পে। ১০/১৫ বছর আগেও ৭০ থেকে ৮০ ফুট মাটির নিচে ছিল পানির লিয়ার। সারা বছওে কোন সময় পানির সমস্যা দেখা যায়নি। উপজেলার সব এলাকায় বেশ ভালো পানি পাওয়া যেত। এ সময় তারা কৃষকরা বলেন, সেচপাম্পে পানি কম ওঠায় ইরি-বোরো আবাদে জ্বালানি খরচ অনেক বেড়ে গেছে। সিংহঝুলী গ্রামের বাসিন্দা চৌগাছা প্রেসকাবের সিনিয়র-সহসভাপতি সাংবাদিক রহিদুল ইসলাম খান বলেন, তার গ্রামের অধিকাংশ টিউবওয়েলে পানি উঠছেনা। যে কারণে সুপেয় খাবার পানির চরম সংকট দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কয়েকহাজার টিউবওয়েলে পানি কম উঠছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রইচ উদ্দীন বলেন, ভুগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নামায় সেচকাজে কৃষকের সমস্যা হচ্ছে। তবে ভারি বৃষ্টি হলে পানির স্তর ঠিক হয়ে যাবে। সেচ নির্ভর ইরি-বোরো চাষ কমিয়ে আউশ ও আমন চাষ বেশি বেশি করতে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। যশোর বিএডিসি সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, চৌগাছা উপজেলায় ভুগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। আমাদের পাম্প গুলো ১০/১২ ফুট মাটি খুড়ে নিচে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে দুই একদিন বৃষ্টি হলে এ সমস্যা কেটে যাবে।