যশোরের আরএন রোডে লিটন-কালু গংয়ের অত্যাচার, অন্তঃসত্ত্বা নারী আহত

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর শহরের আর এন রোডের একটি বস্তির বাসিন্দারা স্থানীয় লিটন-কালু গংয়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। তাদেরকে নানাভাবে নির্যাতন চালানো হচ্ছে। গত বুধবার রাতে লিটন-কালু গংয়ের হামলায় তানিয়া খাতুন নামে অন্তঃসত্ত্বা এক নারীসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ বস্তিবাসী একজোট হয়ে হামলাকারীদের ধাওয়া করে। বর্তমানে সেখানে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিনে আর এন রোডস্থ সোনালী ব্যাংকের পেছনের শান্ত ও বাবলুর বস্তি হিসেবে পরিচিত সেখানকার বেশ কয়েকজন নারী অভিযোগ করেন, লিটন ও কালু এলাকার মৃত শাহাজান মিয়ার ছেলে। তারা এই দুই ভাইয়ের অত্যাচার নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। কারণে অকারণে তাদেরকে মারধর করা হয়। অনেক নারী তাদের হাতে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। প্রতিবাদ করলে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়া হয়। বছরের পর বছর ধরে তারা এভাবে তাদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে আসছেন।
চম্পা খাতুন নামে এক নারী জানান, গত রাত ৯টার দিকে পাশে লিটন-কালুদের একজন ভাড়াটিয়ার ঘরের টিনের ছাউনিতে ঢিল নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় তাদের বস্তির লোকজনকে দোষারোপ করা হয়। পরে লিটন ও কালু বহিরাগত লোকজন নিয়ে তাদের ওপর চড়াও হন। প্রতিবাদ করায় তারা চেয়ারে বসা বস্তির বাসিন্দা টুটুলের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী তানিয়া খাতুনের পেটে লাথি মারেন। এতে গুরুতর আহত হন তানিয়া খাতুন। এছাড়া লিটনের বোন বিলকিস দৌড়ে এসে তার (চম্পার) হাত কামড়ে দেন। আনোয়ারা বেগম নামে আরেক নারী জানান, তাকেও মারধর করেছেন লিটন-কালুরা।
এদিকে বস্তির বাসিন্দারের সাথে কথা বলার সময় সাংবাদিক এসেছে এ খবর পেয়ে লিটন ও কালু সেখানে আসেন। তারা সেখানে আসামাত্রই বস্তির নারী-পুরুষ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এ সময় তারা লিটনের প্রতি আঙ্গুল উঁচিয়ে বলতে থাকেন, এই লোক বহিরাগতদের এনে তাদের মারধর করেছেন। লিটন এ সময় তাদের ওপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করলে বস্তির লোকজন চরম ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠায় তিনি পিছু হঠেন। এরই মধ্যে লিটনের বিমাতা (বড় মা) ফরিদা বেগম সেখানে আসেন। তিনি লিটন ও কালুকে দেখিয়ে বলেন, এই দুজন তার ছেলেদের বস্তিতে ঝামেলা করে থাকেন। তাদের কারণে অনেক ভাড়াটিয়া চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
বস্তির বাসিন্দারা জানান, বুধবার রাতে হামলা হওয়ায় এবার তারা একজোট হয়ে লিটন-কালুদের প্রতিরোধ করেছেন। ধাওয়া করায় লিটনের ভগ্নিপতি মশিয়ার রহমান পালাতে গিয়ে একটি বাড়ির গ্রিলের সাথে ধাক্কা খেয়ে জখম হয়েছেন। তারা আরও জানান, লিটন-কালু কর্মহীন লোকজনকে ত্রাণ দেওয়ার নামে ঝামেলা করছেন। লোকজন ডেকে এনে এলাকায় ভিড় করানোর পর গুটি কয়েকজনকে খাদ্য দেন। অভিযুক্ত লিটন এ বিষয়ে বলেন, তার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ করা হচ্ছে তা সঠিক নয়। যোগাযোগ করা হলে কোতয়ালি থানা পুলিশের ইনসপেক্টর (তদন্ত) শেখ তাসমীম আলম জানান, গোলাযোগের অভিযোগ পেয়ে রাতেই সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছিলো।