ওপেক-নন ওপেক সমঝোতা আলোর মুখ দেখছে জ্বালানি তেলের উত্তোলন হ্রাস চুক্তি

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ দীর্ঘ আলোচনা ও দরকষাকষির পর অবশেষে সমঝোতায় পৌঁছেছে ওপেক-নন ওপেক দেশগুলো। ফলে আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক উত্তোলন হ্রাসের কাঙ্ক্ষিত চুক্তি। ওপেক সূত্রে জানা গেছে, চুক্তির আওতায় ওপেক-নন ওপেক দেশগুলো সম্মিলিতভাবে জ্বালানি পণ্যটির বৈশ্বিক সরবরাহের ২০ শতাংশ কমিয়ে আনবে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রও এ শর্ত মেনে চলবে। খবর রয়টার্স ও অয়েলপ্রাইসডটকম।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের রেকর্ড দরপতনের লাগাম টানতে এবং চলমান মূল্যযুদ্ধ নিরসনে নজিরবিহীন ঐকমত্যে পৌঁছেছে সৌদি আরব, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। এ তিনটি দেশসহ ওপেক-নন ওপেক জোট অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন সম্মিলিতভাবে দৈনিক গড়ে ৯৭ লাখ ব্যারেল কমিয়ে আনবে। এর মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি পণ্যটির সরবরাহ ২০ শতাংশ কমে আসবে বলে আশা করছে জোটটি। আগামী ১ মে থেকে চুক্তিটি কার্যকর হবে। কার্যকর থাকতে পারে পরের বছরের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। ওপেকের ইতিহাসে আগে কখনই জ্বালানি পণ্যটির উত্তোলন এতটা কমিয়ে আনা হয়নি।
এমনকি যুক্তরাষ্ট্র আগে কখনো ওপেক-নন ওপেক দেশগুলোর চুক্তির শর্ত মেনে চলেনি। তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। জ্বালানি তেলের বাজারে চলমান সৌদি-রুশ মূল্যযুদ্ধ নিরসনে এগিয়ে এসেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। টেলিফোনে কথা বলেছেন সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুলআজিজ আল সৌদ ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে। মূলত ট্রাম্পের আহ্বানে ওপেক-নন ওপেক দেশগুলো দীর্ঘ দরকষাকষির পর চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছতে সক্ষম হয়েছে।
এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজারে ভারসাম্য ফেরাতে সৌদি আরব ও রাশিয়ার এ উদ্যোগ কার্যকরী। টুইট করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি লেখেন, ওপেক প্লাস জোটের চুক্তি চূড়ান্ত হয়েছে। এটা যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তেল খাতের হাজারো কর্মীর বেকার হয়ে পড়া ঠেকাতে ভূমিকা রাখবে।
সৌদি আরবের জ্বালানিমন্ত্রী আবদুলআজিজ বিন সালমান জানান, চূড়ান্ত চুক্তি হলেও অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের সম্মিলিত উত্তোলন দৈনিক ১ কোটি ২৫ লাখ ব্যারেল পর্যন্ত কমে আসতে পারে। কেননা আগামী দিনগুলোয় সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কুয়েত জ্বালানি পণ্যটির উত্তোলন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমাবে। একই সঙ্গে জোটবহির্ভূত কানাডা, ইন্দোনেশিয়া, ব্রাজিল, নরওয়ে ও যুক্তরাষ্ট্রও জ্বালানি পণ্যটির দৈনিক উত্তোলন ৪০-৫০ লাখ ব্যারেল কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এদিকে আমদানিনির্ভর দেশগুলোকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মজুদ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ)। যদিও প্যারিসভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটির এ পরামর্শের আগেই অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মজুদ বাড়ানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান।