যশোরে আইসোলেশনে থাকা করোনা উপসর্গের হাজতির পলায়ন, দুই পুলিশ সদস্য কোজড

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর ২৫০ শয্যা যশোর জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডের জানালার গ্রিল ভেঙে হ্যান্ডকাপসহ পালিয়ে গেছে সুজন ওরফে শাকিল (২৫) নামে এক হাজতি। সে নবম শ্রেণির একজন স্কুলছাত্রী অপহরণ মামলার আসামি। গত রোববার রাতে সে পালিয়ে যাওয়ার পর গতকাল সোমবার পর্যন্ত তাকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। এদিকে হাজতি সুজন পালিয়ে যাওয়া এ ঘটনায় কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে দুজন পুলিশ সদস্যকে কোজ করা হয়েছে। অপরদিকে হাজতি সুজন পালিয়ে যাওয়ায় তার বিরুদ্ধে সোমবার কোতয়ালি থানায় মামলা করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। একই সাথে পাহারার দায়িত্বে থাকা ১৩ জন কারারক্ষীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে।
সুজন ওরফে শাকিল রাজবাড়ির পাংশা উপজেলার বাহাদুরপুর কাজীপাড়া মল্লিক বাড়ির রনজিত মল্লিকের ছেলে। বর্তমানে সে যশোর শহরের বারান্দী মোল্লাপাড়া আমতলার জনৈক হাসান মহুরির বাড়িতে ভাড়া থাকে।
যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলর তুহিন কান্তি খাঁন জানান, গত ১০ এপ্রিল হাজতি সুজন তাকে জানায় তার শরীরে জ্বর অনুভূত হচ্ছে, সে অসুস্থ বোধ করছে। ফলে তার শরীরে করোনা ভাইরাসের উপসর্গ থাকায় এদিন রাত সাড়ে ৭টার দিকে তাকে যশোর ২৫০ শয্যা যশোর জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। তার হাতে হ্যান্ডকাপ লাগানো ছিলো। ওয়ার্ডের সামনে কারারক্ষীরা পাহারায় ছিলেন। এরপর গত রোববার রাত ১০টার দিকে সুজন হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডের পেছনের জানালার গ্রিল ভেঙে হ্যান্ডকাপসহ পালিয়ে যায়।
এদিকে খবর পেয়ে ওই রাতেই যশোর কেন্দ্রীয় কারগারের ডিআইজ প্রিজন ছগির মিয়া, সিনিয়র সুপার সুব্রত কুমার বালা ও কোতয়ালি থানা পুলিশের ইনসপেক্টর (তদন্ত) শেখ তাসমীম আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। অপরদিকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আরিফ আহমেদ খান জানান, রোববার রাত ১০টার দিকে সুজন নামে ওই বন্দি হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়। তবে কীভাবে পালিয়ে গেছে তা তিনি জানেন না।  জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম জানান, হাসপাতাল থেকে আসামি সুজন পালিয়ে যাওয়ায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে দুজন পুলিশ সদস্যকে কোজ করা হয়েছে। এরা হচ্ছেন, পুলিশের নায়েক মো. নাজমুল ও কনস্টেবল আসাদ।
পুলিশ জানায়, সানজিদা ইয়াসমিন চুমকি নামে একজন স্কুলছাত্রী অপহরণ মামলার আসামি সুজন। স্কুলছাত্রী চুমকি শহরের পুরাতন কসবা আজিজ সিটির বাসিন্দা জিয়াউর রহমানের মেয়ে। গত ১০ এপ্রিল এ ঘটনায় তিনি কোতয়ালি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হলে সুজনকে আটক করা হয়েছিলো।
কোতয়ালি থানা পুলিশের ইনসপেক্টর (তদন্ত) শেখ তাসমীম আলম জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের আসামি সুজন হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় সোমবার কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। কারাগারের জেলর তুষার কান্তি খাঁন মামলাটি করেছেন। এ মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন থানা পুলিশের এসআই মোখলেচ্ছুজ্জামান। তিনি আরো জানান, আসামি সুজনকে এখনো আটক করা যায়নি। তবে তাকে আটকের জন্য তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে সোমবার বিকেলে কারাগারের সিনিয়র সুপার সুব্রত কুমার বালা জানান, যেহেতু সুজন আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলো, সেকারণে দূরত্ব বজায় রেখে তাকে পাহারার দায়িত্ব পালন করছিলেন কারারক্ষীরা। এরই মধ্যে পালিয়ে যায় সুজন। এ কারণে সুজনের পাহারার দায়িত্বে থাকা ১৩ জন কারারক্ষীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলছে।