করোনা রোধে পশ্চিমবঙ্গে কয়েকটি জেলা হট স্পটের আওতায়

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েই যাচ্ছে দিনের পর দিন। কমার কোনো লক্ষণ নেই। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৪৪৭ জনে। মৃত্যু ঘটেছে ২৩৯ জনের। সুস্থ হয়েছেন ৬৪৩ জন। এই সংক্রমণে প্রথম স্থানে আছে মহারাষ্ট্র। দ্বিতীয় স্থানে দিল্লি। আর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সমস্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের ভিডিও কনফারেন্স হওয়ার পর লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই পশ্চিমবঙ্গ সরকার তার নিজ রাজ্যে করোনাভাইরাস রোধে কঠোর পদক্ষেপ নিলো। পশ্চিমবঙ্গের ৯-১০টি জেলাই হট স্পট হিসেবে চিহ্নিত করে সেখানে আরও ১৪ দিন সম্পূর্ণরূপে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। ‘নবান্ন’ থেকে মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা সাংবাদিকদের জানান, কলকাতার একাংশ, হাওড়ার একটা বড় অংশ, মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদীয়, সল্টলেক, দমদম, কালিগঞ্জ ও আলিপুর দুয়ারকে হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর।
মুখ্যসচিব সাংবাদিকদের আরও জানান, এই জেলাগুলো থেকেই সমগ্র পশ্চিমবঙ্গে করোনা ছড়িয়ে পড়ছে চেইন সিস্টেমে। এককথায় এই জেলাগুলোই হচ্ছে করোনার মূল ঘাঁটি। সেই কারণে এই জেলাগুলোকে হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এদিকে, বাড়ানো হলো লকডাউনের মেয়াদ আরও ১৪ দিন। এই সময়ে এই জেলাগুলোতে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকবে দোকানপাট, বাজার, রাস্তা। এই এলাকাগুলোর মানুষজন ঘর ছেড়ে বাইরে বের হতে পারবে না বা অন্য এলাকার কেউ এই এলাকায় প্রবেশ করতে পারবে না। পশ্চিমবঙ্গে করোনা রোধে রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছেন চিকিৎসক ও বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়ের একাংশ। চিকিৎসকেরা প্রথম দিন থেকেই বলে আসছেন, করোনাভাইরাসকে রোধ করার একমাত্র রাস্তায় হলো ঘরে থাকা, ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, দূরত্ব বজায় রাখা, স্যানিটাইজার ও মাস্ক ব্যবহার করা। তারা লকডাউন আরও কঠোর করার আর্জি জানিয়েছিলেন সরকারকে। এত দিনে তা কার্যকর হচ্ছে দেখে সরকারকে সাধুবাদ জানিয়েছেন তারা। এই করোনা প্রতিরোধে ভারতের প্রধানমন্ত্রী যখন সমস্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে আলোচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ঠিক সেই সময় তার দলের প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তার বক্তব্য—করোনা নিয়ে রাজ্য সরকার তথ্য গোপন করেছে। আক্রান্তের সংখ্যা এবং মৃতের সংখ্যা রাজ্য সরকার সঠিকভাবে তুলে ধরেনি। তার এই অভিযোগকে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করে মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা বলেন, ‘রাজ্যের কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে রাজনীতির নোংরা খেলা না খেলে আসুন আমরা একজোট হয়ে এর মোকাবিলা করি।’