করোনার বিপজ্জনক পরিস্থিতি মোকাবেলায় যশোরে আরও দুটি হাসপাতাল প্রস্তুত

0

স্টাফ রিপোর্টার॥ যশোরে করোনাভাইরাসের বিপজ্জনক পরিস্থিতি মোকাবেলায় আরও দুটি বেসরকারি হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। গতকাল প্রতিরোধ কমিটির এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর আগে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের একটি ওয়ার্ড ও ইবনেসিনা হাসপাতাল বাছাই করা হয়েছিল। এদিকে, ভারত থেকে দেশে ফিরে আসা ৪৬ জনকে গতকাল কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। করোনাভাইরাস পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য নতুন করে আরও ৯ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এ নিয়ে এ পর্যন্ত ৫৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর ভেতর ২২টি পরীক্ষা রিপোর্ট আসলেও কারোর দেহে করোনাভাইরাস মেলেনি।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভা গতকাল বেলা ১১টায় যশোর কালেক্টরেট সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধে পূর্বের সভায় নোভা হাসপাতাল নির্বাচিত করা হয়েছিল। গতকালের সভায় হাসপাতালের উপরতলায় পরিবারের বসতি থাকায় তা তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। নতুন করে জেনেসিস হাসপাতাল ও কুইন্স হাসপাতাল এবং পূর্বের সভায় গৃহীত ইবনেসিনা হাসপাতাল চিকিৎসার জন্যে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। যশোরে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিপজ্জনক হলে ওই তিনটি হাসপাতাল হবে এবং যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের একটি ওয়ার্ড ব্যবহার করা হবে। এছাড়া পরিস্থিতি সামাল দিতে জরুরি প্রয়োজনে জেলা প্রশাসক তার ক্ষমতা বলে যে কোন বেসরকারি হাসপাতাল ব্যবহার করতে পারবেন বলে সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের আরও একটি ওয়ার্ড প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য নির্ধারণ করা হয়। উপজেলা সরকারি হাসপাতালে ৫০ বেড এবং বাইরে ৫০ বেড প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশন ওয়ার্ড করার পূর্ববর্তী সিদ্ধান্তের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। এ সময় শার্শা উপজেলার বেনাপোলে ভারত থেকে দেশে ফিরে আসা যাত্রীদের বহনের জন্য ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দুটি অ্যাম্বুলেন্সের ভেতর একটি শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জেলা কমিটির সভাপতি যশোর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় সদস্য সচিব সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন, সেনা কর্মকর্তা লে. কর্নেল নেয়ামুল হালিম খান, যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. দিলীপ কুমার রায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সালাহউদ্দিন সিকদার, যশোর সিএমএইচ-এর একজন সেনা কর্মকর্তা এবং গণপূর্ত বিভাগ, ইসলামী ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ও বিভিন্ন হাসপাতাল কিনিকের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, বেনাপোল স্থলবন্দরে ভারত থেকে দেশে ফিরে আসা ৪৬ জনকে গতকাল প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে। এর ভেতর ৫ জনকে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। অন্যদের পাঠানো হয় স্থানীয় পৌর কোয়ারেন্টিনে। তাদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে। গত ৬ এপ্রিল রাতে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল কোয়ারেন্টিনে ভর্তি করা হয়েছিল ৩ জন। গতকাল মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ড থেকে করোনা সন্দেহে ১ নারীকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে। তাদের ভেতর করোনা সন্দেহে ৩ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এদিকে, মোট ৯ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সব মিলে এ পর্যন্ত নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৫৬ জন রোগীর। এর ভেতর গতকাল ২২টি রিপোর্ট যশোর সিভিল সার্জন অফিসে আসে। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী সকলে করোনাভাইরাস মুক্ত বলে সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন জানিয়েছেন।