হাশিমপুরে আনসার সদস্য হোসেন হত্যা মামলায় কুখ্যাত মুন্নাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর সদর উপজেলার হাশিমপুর বাজারে আলোচিত সাবেক চরমপন্থি ও বিশেষ আনসার সদস্য হোসেন আলী হত্যা মামলায় আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে ডিবি পুলিশ। এতে কুখ্যাত সন্ত্রাসী ও সর্বহারা পার্টির ক্যাডার মুন্না আলমসহ ১৮ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। মামলার তদন্ত শেষে আদালতে এই চার্জশিট দাখিল করেন ডিবি পুলিশের এসআই মফিজুল ইসলাম পিপিএম। তবে হোসেন আলী তরফদার হত্যাকাণ্ডে জড়িত কিলার দুর্ধর্ষ জুয়েল ডিবি পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তার নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।
চার্জশিটে অভিযুক্তরা হচ্ছে, সদর উপজেলার হাশিমপুরের মৃত আমিরুল ইসলাম বুলির ছেলে মুন্না আলম, আরাফাত হোসেনের ছেলে আলী রাজ বাবু ওরফে ছোট বাবু, রবিউল ইসলামের ছেলে মাসুম হোসেন রুবেল, নিজাম উদ্দিনের ছেলে রফিকুল ইসলাম, কায়েতখালী মোল্লাপাড়ার সাইফুল ইসলামের ছেলে আনোয়ার হোসেন, কায়েতখালী গ্রামের দশরথ সরকারের ছেলে তারক সরকার, একই গ্রামের মধ্যপাড়ার মহাসীন আলী ওরফে হোসেন আলীর ছেলে রাসেল কবির ওরফে রাসেল, নুর ইসলাম মোল্লার ছেলে হাবিল হোসেন ওরফে বার্মিজ, মুকুন্দ কুমার বিশ্বাসের ছেলে বিজয় কুমার বিশ্বাস, হাশিমপুর গ্রামের মৃত রেজাউল ইসলামের ছেলে পিকুল হোসেন, কেনায়েত বিশ্বাসের ছেলে সুজন হোসেন, মিলন হোসেন ওরফে ডেগ মিলনের ছেলে সজল হোসেন, মৃত ফকির আহম্মেদ বিশ্বাসের ছেলে আব্দুর রহমান, আরাফাত হোসেনের ছেলে স্বপন হোসেন, মৃত বাবর আলীর ছেলে রাকিবুল ইসলাম ওরফে লেলিন, আড়পাড়া গ্রামের মোদাচ্ছের আলী ফকিরের ছেলে আলমগীর হোসেন ডিটু, ফুলবাড়ি গ্রামের মৃত লুৎফর রহমানের ছেলে আমিনুর রহমান মিঠু ও রহেলাপুর গ্রামের শাহিনুর রহমান ওরফে শাহিন ওরফে সাগর। এর মধ্যে ১০ জন আসামিকে ডিবি পুলিশ বিভিন্ন সময় আটক করে। আটক আনোয়ার হোসেনসহ কয়েকজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।
উল্লেখ্য, সাবেক চরমপন্থি ও বিশেষ আনসার সদস্য হোসেন আলী তরফদার হাশিমপুর তরফদারপাড়ার মৃত আরশাদ আলী তরফদারের ছেলে। ২০১৯ সালের ৩০ নভেম্বর বেলা ১১টার দিকে হাশিমপুর বাজারে প্রতিপক্ষ চরমপন্থিরা তাকে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে ও ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। স্থানীয় আধিপত্য বিস্তার এবং নানা বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহত হোসেন আলী তরফদার এক সময় চরমপন্থি সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৯৯৯ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার আমলে তিনি যশোর টাউন হল ময়দানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের উপস্থিতিতে অন্যদের সাথে অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। পরে সরকার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তাকে বিশেষ আনসার সদস্য পদে নিয়োগ দেয়। সেই থেকে তিনি আনসারে চাকরি করছিলেন। কিন্তু আনসারে চাকরি করলেও তিনি চরমপন্থি আদর্শ লালন করতেন। স্থানীয় প্রতিপক্ষ সর্বহারা পার্টির ক্যাডারদের সাথে আধিপত্য বিস্তারসহ নানা কারণে তিনি বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। ইতোপূর্বে তার প্রতিপক্ষ সর্বহারা পার্টির আমিরুল ইসলাম বুলি ও বাবলা বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় নেপথ্যের হোতা হিসেবে অনেকে হোসেন আলী তরফদারকে সন্দেহ করতেন। এসব বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষ চরমপন্থিরা তাকে হত্যা করে।