গভীর রাতে দরিদ্রদের বাড়িতে খাবার নিয়ে হাজির এসপি

0

স্টাপ রিপোর্টার॥ গভীর রাতে হতদরিদ্র মানুষের বাড়িতে চাল, ডাল, তেল, লবণ ও সাবান পৌঁছে দিলেন যশোরের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন। এই সময়ে এসব পেয়ে খুশি কর্মহীন মানুষগুলো। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, জেলা পুলিশের উদ্যোগে তাদের এ সহায়তা অব্যাহত থাকবে। আর দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াতে তিনি বিত্তবানদের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছেন। খাদ্য সহায়তা হিসেবে প্রতিটি পরিবারকে দেওয়া হয়েছে ৫ কেজি চাল, ২ কেজি ডাল, এক লিটার তেল, এক কেজি লবণ ও দু’টি সাবান।
দেশে অঘোষিত লকডাউন থাকায় মানুষ ঘরে বন্দি। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন শ্রমজীবীরা। সরকার ত্রাণ সহায়তা চালু করলেও তা প্রযোজনের তুলনায় অপ্রতুল। যে কারণে তাদের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে এসেছে যশোর পুলিশ বিভাগ। নিজেদের অর্থায়নে তারা শুরু করেছে খাদ্য সহায়তার কাজ। পুলিশ সুপার বলেন, ‘সরকারের আদেশে সবাই ঘরে আছেন। ফলে যারা রিকশা চালান, দিনমজুর সেইসব খেটে খাওয়া মানুষ দুরাবস্থা আছেন। কাজ না পেয়ে অনেকে না খেয়ে আছেন এমন সংবাদ আমাদের কানে এসেছে। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে কিছু টাকা একত্রে করে আমরা চাল, ডাল, লবণ, তেল, সাবান বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে বিতরণ করছি। দিনের বেলায় অনেক মানুষ জড়ো হয়ে যায়, যে কারণে আমরা রাতে এসেছি। আগেই খোঁজ নিয়ে তালিকা করা কিছু পরিবারের সদস্যদের এ সহায়তা দিচ্ছি। যাতে স্টে হোম ও সোস্যাল ডিসটেন্সের নিয়ম রক্ষা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ত্রাণ বিতরণকালে দরিদ্র পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা প্রকৃত অর্থেই খুব কষ্টে আছেন। সামান্য সাহায্য পেয়েও তারা খুশি হয়েছেন। তারা অনেকে না খেয়ে, আবার অনেকে দু-এক বেলা খেয়া দিন পার করছেন বলে জানিয়েছেন। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পেয়ে মহাখুশি কর্মহীন মানুষগুলো। ট্রাকচালক নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘এসপি সাহেব ঘরের দরজায় খাবার নিয়ে এসেছেন, বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না। মনে হচ্ছে স্বপ্ন দেখছি। কাজে বের হতে না পারায় গত তিনদিন ঘরে যা ছিল, তা শেষ। এই চাল, ডাল না পেলে ছেলে-মেয়ের খুব কষ্ট হতো।’ জুয়েল মিয়া নামে একজন রাজমিস্ত্রির হেলপার জানান, তিনদিন ধরে ঘরে বসে আছেন। এক টাকাও রোজগার নেই। এমন সময় পুলিশের পক্ষ থেকে চাল, ডাল পেয়ে খুব খুশি হয়েছেন। পুলিশ সুপার মুহাম্মাদ আশরাফ হোসেন জানিয়েছেন, তিনিসহ জেলা পুলিশের একাধিক টিম রাতের মধ্যেই ২০০ পরিবারের ঘরে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেবেন।