চৌগাছায় সেনাবাহিনীর টহল জনশূন্য বাজার ॥ সর্বত্রই এক ধরনের অতংক

0

স্টাফ রিপোর্টার চৌগাছা (যশোর) ॥ যশোরের চৌগাছায় স্থানীয় প্রশাসনকে সহযোগীতা করার লক্ষে কাজ শুরু করেছেন সেনাবাহিনী। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসন উপজেলা সদরসহ প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চলে ছুটছেন এবং করোনা ভাইরাস সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করছেন। ওষুধ ও মুদি দোকান ছাড়া সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এদিকে হাসপাতালে অন্য দিন গুলোর মতই স্বাভাবিক ভাবে রোগী আসছেন, তবে ভর্তিযোগ্য না হলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষেই রোগীরা ফিরছেন বাড়িতে।
করোনা ভাইরাস আতংকে আতংকিত হয়ে পড়েছেন সীমান্তবর্তী উপজেলা চৌগাছার মানুষ। টেলিভিশন, পেপার পত্রিকা ও সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মানুষ খবর পেয়ে সময় যত পার হচ্ছে ততই যেন আতংকিত হয়ে পড়ছেন। প্রশাসনসহ বিভিন্ন বেসরকারী সংগঠন মানুষকে আতংকিত না হয়ে করোনা ভাইরাস নিয়ে সতর্ক হওয়ার আহবান জানিয়ে কাজ করছেন। তবে বিভিন্ন দেশ থেকে বাড়িতে ফিরে আসা মানুষ গুলোই যেন আতংকের অন্যতম কারন বলে অনেকের সাথে কথা বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে স্থানীয় প্রশাসন ও সেনাবাহিনী বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের তালিকা নিয়ে ওই এলাকায় যাচ্ছেন এবং তাদেরকে ১৪ দিনের কোয়ারিন্টনে থাকতে বলছেন। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নারায়ন চন্দ্র পাল জানান, প্রতি দিনই বিভিন্ন জায়গা থেকে অসংখ্য ফোন আসছে। আমরা ফোন পাওয়ার সাথে সাথে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যাচ্ছি এবং বিদেশ ফেরতদের হোম কোয়ারিন্টনে রাখার ব্যবস্থা করছি। শুক্রবার তিনি উপজেলার সিংহঝুলী ও চৌগাছা সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে গেছেন এবং বিদেশ ফেরতদের খোঁজ খবর নিয়েছেন। তবে অধিকাংশ বিদেশ ফেরতদের বাড়িতে পাওয়া যায়নি বলে তিনি জানান।
ভাইরাস মোকাবেলায় চৌগাছা পৌরসভাসহ বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠান বা ব্যাক্তি ওষুধ স্প্রে, জীবানুনাশক ওষুধ মানুষের হাতে দেয়া, মাস্ক বিতরণসহ নানা কাজ শুরু করেছেন। বৃহস্পতিবার চৌগাছা পৌরসভার উদ্যোগে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশে ওষুধ স্প্রে করেছেন, শুক্রবারও এই কায্যক্রম অব্যহত ছিল। একই ভাবে চৌগাছা ডিভাইন গ্রুপ, হাসিব ইলেকট্রনিক্্র পৌর সদরের সড়কের ওলি গলিতে জীবানুনাশক ওষুধ স্প্রে করেছেন। চৌগাছা এম আহমদ আলী সাহিত্য ও সংস্কৃতিক পরিষদের পক্ষ হতে আহমদনগর বাজার ও মসজিদের মুসল্লিদের মাঝে মাস্ক বিতরণ করেছেন। এ ছাড়া বেসরকারী সংগঠন ও ব্যক্তির উদ্যোগে জরুরী কাজে বাজারে আসা মানুষের হাতে জীবানুনাশক ওষুধ লাগিয়ে দিয়েছেন। চলছে সচেতনতা মূলক প্রচার মাইক। এদিকে শুক্রবার চৌগাছার সাপ্তাহিক হাটের দিন হওয়া সত্ত্বেও বাজার ছিল জনশূন্য। ওষুধ, মুদি দোকান এবং সবজির বাজার ছাড়া সব কিছুই বন্ধ রয়েছে। প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চলের সব দোকানপাট বন্ধ রয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বিগত দিন গুলোর মতই প্রতি দিনই নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে মানুষ হাসপাতালে আসছেন। এরমধ্য হতে যে সব রোগী ভর্তি হওয়ার মত তাদেরকে ভর্তি নেয়া হচ্ছে বাকিদের চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। জরুরী বিভাগের চিকিৎসক হাদিউর রহমান সিয়াম জানান, অন্য সময়ের মত ঠান্ডা জনিত কারনে প্রতি দিনই ৫/৭ জন রোগী হাসপাতালে আসছে। এ সব রোগীর অবস্থা দেখে আমরা চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি, কোন কোন রোগীকে হাসপাতালের কেবিনে ভর্তি রাখা হচ্ছে। সেখানে দু’এক দিন রাখার পর তেমন কোন উন্নতি না হলে তাকে যশোর রেফার করা হচ্ছে। তবে সেই সংখ্যা খুবই কম বলে তিনি জানান।