করোনা আতঙ্কে রোগী শূন্য খুমেক হাসপাতাল

0

খুলনা প্রতিনিধি॥ করোনা ভাইরাস সংক্রমণ আতঙ্কে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ (খুমেক) হাসপাতাল রোগী শূন্য হয়ে পড়ছে। হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে একজনের মৃত্যুর পর রোগীরা হাসপাতাল ছেড়েছেন। এছাড়া সম্পূর্ণ হাসপাতালটিকে করোনা ইউনিট করার ঘোষণা দিয়ে কর্তৃপক্ষও কোনও নতুন রোগী ভর্তিও করছেন না।
জানা গেছে, স্বাভাবিক সময়ে খুমেক হাসপাতালে প্রায় দেড় হাজার ভর্তি রোগী ভর্তি থাকে। সেখানে ২৫ মার্চ ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ২৮০ জন। ৫০০ শষ্যার এ হাসপাতালে এখন অর্ধেক বেডই খালি। আর ২৬ মার্চের মৃত্যুর ঘটনার পর ২৭ মার্চ পুরো হাসপাতালই রোগী শূন্য হয়ে গেছে। এদিকে খুলনা জেনারেল হাসপাতালেও রোগী ভর্তি কমে গেছে। খুলনার উপজেলাগুলোতেও সাধারণ রোগের চিকিৎসা সেবা গ্রহণের হার ৩০ ভাগে নেমে এসেছে বলে জানা গেছে।
খুমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. এ টি এম মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, এখানে করোনার প্রভাবে দিনকে দিন রোগী ভর্তি কমে গেছে। ২৬ মার্চ এক রোগীর মৃত্যুর পর ডাক্তার নার্সসহ ১৬ জনকে কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়। এরপর হাসপাতাল রোগী শূন্য হয়ে যায়। আর এ হাসপাতালটিকে করোনা ওয়ার্ড করার পরিকল্পনা নেওয়ার কারণে নতুন করে রোগী ভর্তি নেওয়া হচ্ছিল না। খুমেক হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সিনিয়র স্টাফ নার্স রমা রানী দাশ বলেন, করোনার প্রভাবে রোগী কমতে কমতে ২৫ মার্চ দুপুরে মাত্র ১০ জন ছিল। ২৬ মার্চ রাতে সবাই নিজ দায়িত্বে চলে যেতে চায়। তখন তাদেরকে ব্যবস্থাপত্র দিয়ে দেওয়া হয়।
খুমেক হাসপাতালের ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডে ভর্তি রোগী মোস্তফা কামাল পাশার (৭০) স্ত্রী পারুল বেগম বলেন, সোমবার এখানে তার স্বামীকে ভর্তি করানো হয়েছে। স্ট্রোক করার পর তাকে পিরোজপুর থেকে এখানে আনা হয়েছে। তিনদিনেও তার জ্ঞান ফেরেনি। তবে হাসপাতালে একজনের মৃত্যুর পর আতঙ্ক দেখা দেয়। এ কারণে তারা হাসপাতাল ছেড়েছেন। খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ বলেন, খুলনার জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে রোগী ভর্তির হার ৩০ ভাগে নেমে এসেছে। এখন করোনার প্রভাবের কারণে অন্যান্য রোগী হাসপাতাল বা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসছেন না। খুলনা জেনারেল হাসপাতালের ২৫০টি বেডের ৭০ ভাগি এখন খালি থাকছে। উপজেলা পর্যায়ে এখন সব হাসপাতালেই ৫০ বেডের। কিন্তু সেখানেও সিট খালি থাকছে। তবে, ফোনে পরামর্শ গ্রহণের হার বেড়েছে। জেলা ও উপজেলার জন্য ১০ চিকিৎসক ও টিম এ জন্য সার্বক্ষণিক কাজ করছেন। তিনি বলেন, খুলনা জেনারেল হাসপাতালটিকে করোনা কোয়ারেন্টিন ইউনিট করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে এখানে নতুন রোগী ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না।