সম্মুখযুদ্ধের স্মৃতি বহন করছেন মহেশপুরের মুক্তিযোদ্ধা সাত্তার

0

মহেশপুর (ঝিনাইদহ) সংবাদদাতা ॥ ঝিনাইদহের মহেশপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আব্দুস সাত্তার ভয়াবহ সম্মুখযুদ্ধের স্মৃতি আজও বহন করে চলেছেন। মহেশপুর পশু হাসপাতালপাড়ার মৃত কাজী আব্দুল জলিলের কাজী আব্দুস সাত্তার। ১৯৭১ সালের ২৪ এপ্রিল তৎকালীন ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট যশোর সেনানিবাস থেকে প্রথমে তিনি বেরিয়ে আসেন। চৌগাছা উপজেলার মাসিলা গ্রামে আব্দুস সাত্তার ২০ বছর বয়সে মুজাহিদ বাহিনীর ১৭ জন সঙ্গী নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করে। তৎকালীন ওই কোম্পানির দায়িত্বে ছিলেন মেজর হাফিজ উদ্দিন। মাসিলা থেকে পরে বেনাপোল কাস্টমস কলোনিতে কয়েকদিন অবস্থানের পর ভারতের বনগাঁর হরিপুর ক্যাম্পে মিলিত হন। মুক্তিযুদ্ধে যুদ্ধকালীন তার জীবনের একটি বড় যুদ্ধ। মৌলভী বাজারের কমলগঞ্জের অন্তর্গত ধলয় বিওপি দখল করার জন্য বীরশ্রেষ্ঠ হামীদুর রহমানের সাথে কাজী আব্দুস সাত্তারও ছিলেন। তৎকালীন মেজর জিয়া উদ্দিনের নেতৃত্বে সি-কোম্পানির ৯নং প্লাটুনের সৈনিক ছিলেন হামীদুর রহমান। ১৯৭১ সালের ২৮ অক্টোবর ভোরে প্রতিপক্ষের গুলিতে হামীদুর রহমান শহীদ হন। দখল হয় ধলয় বিওপি। এ সময় আব্দুস সাত্তার, আফছার আলী, শাহাজান, আব্দুল আজিজ, মিকাইল, নুর ইসলাম, ওয়াজেদ সহ আরও কয়েকজন মিলে হামীদুর রহমানের লাশ উদ্ধার করে আমপাশা গ্রামের রাস্তার পাশে দাফন করেন। এরপর তারা সিলেটের কানাইঘাট জালালপুর যুদ্ধে অংশ নেন। এ সময় কোম্পানি কমান্ডার মাহাবুব শহীদ হন (বর্তমানে স্থানটি মাহাবুবনগর হিসেবে পরিচিত)। সিলেট শহরের এমসি কলেজ ক্যাম্পে থাকা অবস্থায় ১৬ই ডিসেম্বর বাংংলাদেশ বিজয় অর্জন করে। এর এক সপ্তাহ পর ঢাকা কুর্মিটোলা গলফ গ্রাউন্ডে অবস্থান করে ১৯৭২ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি বাড়ি এসে আব্দুস সাত্তার জানতে পারেন, তার বাবাকে রাজাকাররা ধরে নিয়ে খান সেনাদের কাছে তুলে দিয়েছে। এ সময় ৪/৫দিন রেখে অমানুষিক নির্যাতন করে। অর্ধমৃত অবস্থায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় মুক্তিযুদ্ধে অংশে নেওয়া ছেলেকে তুলে দেওয়ার জন্য। কিন্তু তার আগেও ৪ঠা ডিসেম্বর মহেশপুর মুক্তি বাহিনীর প্রতিরোধের মুখে খান সেনারা মহেশপুর ছাড়তে বাধ্য হয়। বর্তমানে কাজী আব্দুস সাত্তার এক ছেলে, ২মেয়ে, স্ত্রী নিয়ে মহেশপুরে পৈতৃক ভিটায় বসবাস করছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের ৩০০টাকার ভাতা থেকে তিনি ভাতা পেয়ে থাকেন।