চৌগাছায় পুকুর থেকে বালি উত্তোলনে ক্ষতি হচ্ছে ভূমির

0

স্টাফ রিপোর্টার, চৌগাছা (যশোর) ॥ যশোরের চৌগাছায় নিরীহ এক ব্যক্তির পুকুর থেকে জোরপূর্বক বালি উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে এক প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ভূ-গর্ভস্থ্য থেকে অবৈধভাবে দিনের পর দিন বালি উত্তোলনের ফলে পাশের সমতল জমিতে দেখা দিয়েছে ভাঙন, নষ্ট হচ্ছে ফলন্ত আম গাছ। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দিয়েও বন্ধ হয়নি বালি উত্তোলন। ভূক্তভোগীসহ এলাকাবাসী অবৈধভাবে বালি উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
উপজেলার পাতিবিলা ইউনিয়নের হয়াতপুর গ্রামের মৃত শমসের আলীর ছেলে বজলুর রহমানের একটি পুকুর থেকে অবৈধভাবে জোরপূর্বক বালি উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে একই গ্রামের রওশন আলীর বিরুদ্ধে। গ্রামটির সরকারি আবাসিক প্রকল্পের পাশে বজলুর রহমানের ১ একর জমির পুকুর থেকে দিনের পর দিন বালি উত্তোলন করছেন রওশন আলী। স্থানীয় ভূমি অফিসের নায়েবকে ম্যানেজ করে বালি তুলে তা অবাধে বিক্রি করছেন বলে জানান এলাকাবাসী। পুকুরপাড়ে ভুক্তভোগীর আরও ২ বিঘা জমি জুড়ে রয়েছে আমবাগান। পুকুর থেকে বালি উত্তোলন করে তা রাখা হচ্ছে আম বাগানের মধ্যে। এর ফলে ধরন্ত আম গাছ মারা যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। বেশ কিছু আম গাছ রওশন আলীর সাঙ্গপাঙ্গরা ভেঙে ফেলেছেন বলে অভিযোগ। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী গত ১১ মার্চ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের পর ঘটনাস্থলে যান উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নারায়ন চন্দ্র পাল, ৩/৪ দিন বন্ধ থাকে বালি উত্তোলন। এরপর পুনরায় তিনি বালি তুলছেন এবং পাশের আম বাগানের ক্ষতিসাধন করছেন রওশন আলী। সোমবার সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, বজলুর রহমানের ওই পুকুর থেকে রওশনের লোকজন ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে বালি উত্তোলন করছেন। এ সময় নাম প্রকাশ না করার শর্তে উত্তোলন কাজে নিয়োজিত শ্রমকিরা বলেন, আমরা জোন হিসেবে রওশনের কাজ করি। কাজ করলে টাকা আর না করলে কোন টাকা পাই না। স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলেন, ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা (নায়েব) টাকা খেয়ে অবৈধভাবে পাতিবিলা ও হয়াতপুর গ্রামের অসংখ্য জায়গা থেকে বালু উত্তোলনের অনুমতি দেন। নায়েবের উপর যদি কোন চাপ আসে সঙ্গেসঙ্গে তিনি বালি উত্তোলনের মূল মালিককে সতর্ক করেন এবং কিছুদিনের জন্য তা বন্ধ থাকে। পরিবেশ শান্ত হলে পুনরায় বালি উত্তোলন শুরু হয়। ভূক্তভোগী বজলুর রহমান জানান, রওশন আলী তার পুকুর থেকে জোর করে দিনের পর দিন বালি উত্তোলন করছেন। আমি নিষেধ এমনকি অভিযোগ করেও কোন ফল পাইনি। বালি উত্তোলনকারী রওশন আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। পাতিবিলা ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা (নায়েব) লিপ্টন হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমি বদলি হয়ে মনিরামপুর উপজেলায় আছি। চলতি মাসের ২৩ তারিখ নতুন কর্মস্থলে যোগদান করেছি। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নারায়ন চন্দ্র পাল জানান, এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়ে বালি উত্তোলন বন্ধ করে দিয়েছি। পুনরায় সেখান থেকে বালু উত্তোলন হচ্ছে এ বিষয়ে জানা নেই, তবে খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি বালি উত্তেলন করা হয় তাহলে উত্তোলনকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান।