কোথা থেকে এলো ‘কোয়ারেন্টাইন’?

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ১৮৯০ এর দশকে সুইজারল্যান্ড থেকে আসা একদল লোককে কলেরা জীবাণু বহন করছে এমন সন্দেহে ইতালিতে কোয়ারেন্টাইন করা হয় করোনার প্রাদুর্ভাবের কালে ‘কোয়ারেন্টাইন’ শব্দটি আমাদের প্রতিদিন অনেকবার শুনতে হয়। কিন্তু এই আলোচিত শব্দটি কোথা থেকে এলো? এর অর্থই বা কী? অবশ্য সহজ একটা মানে ব্যবহারিকভাবে আমরা ইতিমধ্যে জেনে গেছি। ‘কোয়ারেন্টাইন’ মানে কোনো রোগের সংক্রমণ এড়াতে নিজেকে গৃহবন্দী করা ও অন্যদের সঙ্গে যথাসম্ভব সংস্পর্শহীন রাখা। কিন্তু ঐতিহাসিকভাবে বিষয়টি বিস্তৃত ব্যাখ্যার দাবি রাখে। যার জন্য পিছিয়ে যেতে হবে চতুর্দশ শতকে। তখন আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের অন্যতম পথ ছিল ‘সিল্ক রুট’, যা বিস্তৃত ছিল এশিয়া মহাদেশ থেকে ভূমধ্যসাগর হয়ে ইউরোপের গ্রিস ও ইতালি পর্যন্ত। ১৩৪০ সালে সম্ভবত মধ্য এশিয়া থেকে এই সিল্ক রুটের বাণিজ্যপথ ধরেই ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ল এক মারণ রোগ। ‘বিউবোনিক প্লেগ’ নামের এই রোগে মারা যার লাখ লাখ মানুষ। যদিও একে সাধারণত ‘ব্ল্যাক ডেথ’ নামে অভিহিত করা হয়। অবশ্য প্রতি দশকেই কখনো না কখনো ইউরোপে ফিরে আসত এই ভয়ংকর ‘ব্ল্যাক ডেথ’, আকার নিত মহামারির, প্রাণ যেত অগণিত মানুষের। ১৩৭৩ সালে যখন ইউরোপে ফের প্রাদুর্ভাব ঘটল এই রোগের। তখন ইতালির বন্দরনগরী ভেনিসের প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিরা সিদ্ধান্ত নেন- বাইরে থেকে আসা কোনো জাহাজে প্লেগে আক্রান্ত রোগী আছে এমন সন্দেহ হওয়ামাত্রই সেই জাহাজের ভেনিসে ঢোকার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। আরও বলা হয়, সংশ্লিষ্ট জাহাজকে ভেনিসে ঢোকার আগে একটি দ্বীপে চল্লিশ দিন অপেক্ষা করতে হবে। ইতালীয় ভাষায় চল্লিশকে বলা হয় ‘কোয়ারান্তেনা’। এবং সংক্রমণ-প্রতিরোধে ওই চল্লিশ দিনের দূরবর্তী অপেক্ষার সময়কে বলা হতো ‘কোয়ারান্তিনারো’। সেই থেকেই ইংরেজি শব্দ ‘কোয়ারেন্টাইন’-এর উৎপত্তি। এখন অনেকেই হয়তো ভাবছেন- সাম্প্রতিক করোনা পরিস্থিতিতে ইতালির ক্ষতির বিষয়টি। হ্যাঁ, একে নিয়তির পরিহাসই বলা যায়।–ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অবলম্বনে