করোনা, কূটনীতিকদের চিকিৎসায় বিশেষ হাসপাতাল

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ঢাকাস্থ বিদেশি কূটনীতিকদের অভয় দিয়েছে সরকার। তাদের জানানো হয়েছেÑ বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ ছড়ানো করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রতিরোধে নানামুখী সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ সরকার জরুরি পদক্ষেপ নিচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় কূটনৈতিক জোন খ্যাত গুলশান-বনানী ও বারিধারা এলাকায় সংক্রমণ ঠেকাতে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। কূটনৈতিক মিশন এবং কূটনীতিকদের বাসভবন এলাকায় বাইরের লোকজনের অবাধ যাতায়াতে বিধি-নিষেধ আরোপসহ সতর্কতামূলক বাড়তি ব্যবস্থা রয়েছে। তারপরও কোন কূটনীতিক বা তাদের পরিবারের সদস্যের করোনা আক্রান্তের লক্ষণ স্পষ্ট হলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদের চিকিৎসা-সেবা নিশ্চিত করা হবে। কূটনৈতিক পরিবারের সদস্যদের জন্য বসুন্ধরা ও উত্তরা এলাকার একাধিক হাসপাতালে কিছু বেড-কেবিন এবং আইসিইউ নির্দিষ্ট করে রাখা হবে বলেও জানানো হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ উদ্বিগ্ন ইউরোপের ৯ রাষ্ট্রদূতকে করোনা পরিস্থিতির সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। ইইউ রাষ্ট্রদূতদের চাওয়ার প্রেক্ষিতে ব্রিফিংটি অনুষ্ঠিত হয় জানিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা রাতে মানবজমিনকে বলেন, সেখানে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে তারা তাদের একান্ত ব্যক্তিগত উদ্বেগের কথাগুলোও জানিয়েছেন।
জানতে চেয়েছেনÑ ঢাকায় কোনো কূটনীতিক বা তাদের পরিবারের কেউ করোনা আক্রান্ত হলে সরকার বিশেষ কোন ব্যবস্থা নেবে কী? সরকারের তরফে পররাষ্ট্র সচিব করোনা পরিস্থিতি এবং সরকারের প্রস্তুতির বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেন। একই সঙ্গে উদ্বিগ্ন কূটনীতিকদের আশ্বস্ত করেন এই বলে যে, দেশবাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ব্যতিব্যস্ত থাকলেও সরকার বিদেশি কূটনীতিকদের প্রতি কোন হেলা করছে না বরং তাদের বিষয়টি অগ্রধিকারে রয়েছে। কূটনীতিক এবং তাদের পরিবারের কারও করোনার লক্ষণ দেখা দিলে পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ জরুরি সেবা নিশ্চিতে নির্দিষ্ট হাসপাতাল আগে থেকে প্রস্তুত থাকবে। ব্রিফিং সূত্র জানায়, সেখানে কূটনীতিকদের দ্বিতীয় উদ্বেগ ছিলÑ ইউরোপের সঙ্গে ঢাকার ফ্লাইট বন্ধ বিষয়ে। প্রশ্ন ওঠে ফ্লাইট বন্ধ থাকার ওই মুহুর্তে পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে ইউরোপীয় কূটনীতিক, তাদের পরিবারের সদস্য এবং নাগরিকদের ঢাকা ছাড়ার ব্যবস্থা কি অবশিষ্ট থাকলো? জবাবে সচিব স্পষ্ট করে বলেন, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে প্রত্যেক দেশই নিজ নিজ বিবেচনায় কিছু উদ্যোগ এবং সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। বাংলাদেশ বৃটেন ছাড়া ইউরোপের সঙ্গে বাংলাদেশের বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। দুনিয়ার সঙ্গে ঢাকার ফ্লাইট যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ নয় জানিয়ে সচিব বলেন, বৃটেন, চীন, থাইল্যান্ড ও তাইওয়ানÑ ওই চারটি রুট চালু রাখা হচ্ছে, বিশেষ প্রয়োজনে যাতায়াতের বিবেচনায়। কেবল ইউরোপ নয়, যে কোন অঞ্চলের কূটনীতিক, তাদের পরিবারের সদস্য এবং নাগরিকরা ওই রুট ব্যবহার করে পছন্দের গন্তব্যে যেতে পারেন। তাছাড়া তারা একসঙ্গে যেতে চাইলে এক বা একাধিক বিমান ভাড়া করতে পারেন। চাটার্ড ফ্লাইটে গ্রুপ ভিত্তিক এমন যাতায়াত নির্বিঘœ করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাজনৈতিক সাপোর্ট এবং বিমান মন্ত্রণালয় কারিগরি সমর্থন দিবে বলেও নিশ্চিত করেন পররাষ্ট্র সচিব। উল্লেখ্য, এ বিষয়ে জানতে চাইলে এক দিন আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতদের উদ্বেগ সংক্রান্ত বার্তা আমরা পেয়েছি। আমাদের অবস্থানও তাদের জানিয়েছি। আমরা তাদের দুটি অপশন দিয়েছি। এখনও খোলা এমন চার রুটের যে কোন রুটে তারা ফিরতে পারেন। নতুবা নিজেরা চাটার্ড ফ্লাইট নিয়ে আসতে পারে। আমরা তাদের ফ্লাইট পরিচালনায় অনুমতি দেবো এবং সুবিধাদি নিশ্চিত করবো।