বীরের মর্যাদা নিয়ে উহান ছাড়ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ চীনের হুবেই প্রদেশের উহান রেলস্টেশনে সম্প্রতি সৃষ্টি হয়েছে এক আবেগঘন পরিবেশ। করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে দীর্ঘ দুই মাস লড়াইয়ের পর উহান ছাড়তে শুরু করেছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাদের কঠোর পরিশ্রম আর ত্যাগের বিনিময়ে বিশ্বে প্রথম করোনা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে চীন। ফলে দেশটির বিভিন্ন প্রদেশ থেকে উহানে আসা স্বাস্থ্যকর্মীরা সেখান থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নিতে শুরু করেছেন। উহানে করোনা মোকাবিলায় নিযুক্ত থাকা স্বাস্থ্যকর্মীরা দেশজুড়ে বীর আখ্যা পেয়েছেন। দেশটির গণমাধ্যমগুলোতে তাদের বীরত্বের কথা প্রচারিত হচ্ছে। মঙ্গলবার স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রথম ব্যাচ উহান ছাড়েন। এতে ছিলেন ৩৭৮৭ জন সদস্য। আগামী কয়েক সপ্তাহে বাকি সবার ফেরার কথা রয়েছে। করোনা ভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসায় প্রায় এক ডজন হাসপাতাল নির্মাণ করে চীন। এসব স্বাস্থ্যকর্মীরা সেসব হাসপাতালে কর্তব্যরত ছিলেন। তবে এখন ওই হাসপাতালগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। নতুন করে সংক্রমণের হার নেমে এসেছে শূন্যের কাছে। ফলে বিদায় নিতে শুরু করেছেন সবাই।
উহান ছাড়ার সময় একটি মেডিকেল টিমের নার্স ফান রুই বলেন, আমি এখানে ৪৩ দিন ছিলাম। দ্রুতই আমি এই জায়গার জন্য আবেগ অনুভব করতে শুরু করি। সুন্দর শহর কিংবা মজাদার খাবারের জন্য নয়, এখানকার মানুষদের জন্য আমি উহানকে ভালোবেসে ফেলেছি। সর্বশেষ করোনা রোগীকে সুস্থ করার পর আমরা এখানে নেচেছি, উৎসব করেছি। ফান রুইয়ের মতো স্বাস্থ্যকর্মীরা চীনে এখন বীর হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন। তাদেরকে স্থানীয়রা বাড়িতে নিমন্ত্রণ করছেন। অনেকেই নিজের শহর ঘুরিয়ে দেখাচ্ছেন বিদায়ের পূর্বে। কেউ কেউ তাদের জন্য নিয়ে আসছেন বিশেষ খাবার। স্বাস্থ্যকর্মীরা বলছেন, তাদের মনে হচ্ছে উহান এখন তাদের দ্বিতীয় বাড়ি। সুযোগ পেলেই তারা এই ভালোবাসা পেতে উহান ফিরে আসতে চান।
স্বাস্থ্যকর্মীরা যখন ট্রেনে উঠছিলেন তখন উহানের ৩০০০ পুলিশ কর্মকর্তা তাদেরকে স্যালুট প্রদান করেন। স্থানীয় কমিউনিস্ট পার্টির নেতারা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। উহানের মানুষ চিরদিন তাদের অবদান মনে রাখবে বলে জানান তারা। চীনের উহান থেকেই করোনা ভাইরাস বিস্তার শুরু করে। এখন পর্যন্ত সব থেকে ভয়াবহ করোনা উপদ্রবও দেখেছে এই শহরটিই। এখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চীনের সরকার সারা দেশ থেকে স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে আসে। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে দ্রুত নিয়ন্ত্রণে চলে আসে উহানের করোনা পরিস্থিতি। এতে আক্রান্ত হন অনেক স্বাস্থ্যকর্মী, প্রাণও হারান বেশ কয়েকজন। তাদের এ অবদানের জন্য চীনে এখন তারা বীরের মর্যাদা পাচ্ছেন।