বাংলাদেশে করোনায় প্রথম মৃত্যু : আরও ৪ জন ঝুঁকিতে

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ দেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে বুধবার (১৮ মার্চ) একজন মারা গেছেন। করোনা আক্রান্ত আরও ৪ জন ঝুঁকিতে রয়েছেন। মৃতব্যক্তির বয়স ৭০-এর বেশি। তিনি বিদেশফেরত নন, তবে বিদেশ থেকে আসা এক আত্মীয়ের মাধ্যমে তিনি সংক্রমিত হয়েছিলেন। সংক্রমণের পর তিনি আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এছাড়া তিনি ডায়াবেটিক, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি সমস্যা ও হৃদরোগে ভুগছিলেন। বুধবার (১৮ মার্চ) দুপুরে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯-এ নতুন আক্রান্ত হওয়া চার জনের প্রত্যেকেই অন্যান্য রোগের (কো-মরবিডিটি) কারণে ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। বুধবার (১৮ মার্চ) করোনা আক্রান্ত হয়ে দেশে প্রথম মৃত্যুর কথাও জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সংবাদ সম্মেলনে আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘নতুন করে চারজন আক্রান্ত হাোয়ায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৪ জনে। নতুন আক্রান্তদের বয়স যথাক্রমে ৫০, ৪০, ৩০ এবং ২০ বছর। নতুন করে আক্রান্তের মধ্যে একজন নারী ও তিন জন পুরুষ। আক্রান্তদের একজন আগে যারা আক্রান্ত ছিলেন তাদের পরিবারের সদস্য। বাকি তিন জন বিদেশ থেকে এসেছেন। এদের দুই জন ইতালি, একজন কুয়েত থেকে এসেছেন। তাদের মধ্যে একজনের উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিক রয়েছে; আরেক জনের কিডনির সমস্যা রয়েছে এবং অপর একজনের স্ট্রোকের ইতিহাস রয়েছে। তবে তাদের করোনার লক্ষণ-উপসর্গ মৃদু, কিন্তু তাদের প্রত্যেকে অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হওয়ায় ঝুঁকিতে রয়েছেন। অধ্যাপক সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ অন্যান্য দেশও বলেছে, তাদেরই মৃত্যুঝুঁকি বেশি যাদের কো-মরবিডিটি বা অন্য রোগ রয়েছে এবং যারা ‍বয়স্ক। আমাদেরও ‍যিনি মারা গিয়েছেন তিনিও অনেকগুলো রোগে আক্রান্ত ছিলেন। ৭০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির ডায়াবেটিক, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনিতে সমস্যা ও হার্টে রিং পরানো ছিল। কোভিড-১৯ সংক্রমণ অত্যন্ত ছোঁয়াচে কিন্তু মারাত্মক নয় জানিয়ে অধ্যাপক সেব্রিনা বলেন, যেহেতু রোগটি ছোঁয়াচে তাই একে প্রতিরোধে জরুরি এবং প্রতিরোধের জন্য সচেতন হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এতে মৃত্যুঝুঁকি থাকে না, তবে বয়স্ক এবং যারা অন্য দীর্ঘমেয়াদি অসুখে আক্রান্ত তাদের জন্য এটা ঝুঁকিপূর্ণ। এসব মানুষকে অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে নিজের ঘরে থাকার পরামর্শ দেন তিনি। আইইডিসিআরে সরাসরি না আসার অনুরোধ করা হয়েছিল, কিন্তু তারপরও এখানে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৫ জন এখানে এসেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, এ পর্যন্ত নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৪১ জনের। ওয়ার্ল্ড মিটার ইনফোর তথ্যানুযায়ী এখন পর্যন্ত করোনায় বিশ্বে দুই লাখ চার হাজার ৪৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৮২ হাজার ৮৬৬ জন এবং মারা গেছেন আট হাজার ২৩২ জন।
প্রসঙ্গত, প্রথম ইতালি থেকে আসা দুই পুরুষ এবং দেশে থাকা তাদের একজনের এক নারী আত্মীয় করোনায় আক্রান্ত হন। গত ৮ মার্চ এ তথ্য জানায় আইইডিসিআর। তারা তিন জনই চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এরপর গত ১৪ মার্চ জার্মানি ও ইতালি থেকে আসা আরও দুই ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হন। বর্তমানে তারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরপর বুধবার পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ জন। নতুন করে আক্রান্তের মধ্যে একজন নারী ও তিন জন পুরুষ রয়েছেন। আক্রান্তদের একজন আগে যারা আক্রান্ত ছিলেন তাদের পরিবারের সদস্য। বাকি তিন জন বিদেশ থেকে এসেছেন। এদের দুই জন ইতালি, একজন কুয়েত থেকে এসেছেন। এখন পর্যন্ত ১৬ জন আইসোলেশনে আছেন। আর ৪২ জন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে আছেন।