৪ দিনের রিমান্ডে আলোচিত সাদিয়া

0

খুলনা ব্যুরো॥ শ্রমিক লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী সাদিয়া আক্তার মুক্তার চার দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমিরুল ইসলাম তার এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে গ্রেপ্তারের পর মঙ্গলবার তাকে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। ঢাকা ও নরসিংদীতে যুব মহিলা লীগ নেত্রী পাপিয়ার ‘পাপরাজ্যের’ নানা কাহিনী উদ্ঘাটনের সময় বেরিয়ে এলো সাদিয়ার অপরাধ জগতে অবগাহনের খবর। সাদিয়া আক্তার মুক্তা (৩২) এখন ‘টক অব দ্য খুলনা’। নানা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৩১শে জুলাই তাকে বহিষ্কার করা হয়। সমপ্রতি খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি বিশেষ টিম বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকায় সাদিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে। তার বাসা থেকে ১২ ভরি ৩ আনা চোরাই সোনা এবং সোনা বিক্রির ২ লাখ ৮২ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, সাদিয়া স্বর্ণ চোরাই সিন্ডিকেটের হোতা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জের নিশানবাড়িয়া এলাকার মৃত আলতাফ সরদার ও মৃত মোসাম্মৎ ফরিদা বেগমের দ্বিতীয় কন্যা সাদিয়া। তার পিতা নগরীর সোনাডাঙ্গা থানার পাশে মুদি দোকানের ব্যবসা করতেন। দেড় যুগ আগে ঢাকার জুরাইন এলাকার ছেলে শুকুর আলীর সঙ্গে সাদিয়ার বিয়ে হয়। এ সময় শুকুর প্লট ও জমির ব্যবসা করতেন। সাদিয়া রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার পর স্থানীয় আওয়ামী লীগের সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না। তবে কয়েক বছর আগে কেন্দ্র থেকে খুলনা মহানগর মহিলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক পদটি বাগিয়ে নেন তিনি।
অভিযোগ অস্বীকার করে সাদিয়ার বড় ভাই মানিক বলেন, আমার বোন ষড়যন্ত্রের শিকার। সে কোনো ধরনের চোরাই স্বর্ণের সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত নয়। তবে রাজনীতি করায় তার অনেক শক্র হয়েছে। এছাড়া শুকুর জমির ব্যবসা করার কারণেও শত্রু বেড়েছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছনে শুকুরের ৪ কাঠা জমি আছে, যা নিয়ে পার্শ্ববর্তী লোকজনের সঙ্গে ঝামেলা আছে। তবে তিনি স্বীকার করেন যে, শুকুর কয়েকদিন ধরে আত্মগোপনে রয়েছেন। ঘটনার বিষয়ে সাদিয়ার স্বামী শুকুর আলীর ব্যবহৃত সেলফোনে একাধিকবার ফোন এবং ক্ষুদে বার্তা দিলেও তিনি কোনো উত্তর দেননি। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি (সাউথ) মোহাম্মদ এহসান শাহ বলেন, সাদিয়া সোনা চোরাই সিন্ডিকেটের মূল হোতা। তার বিরুদ্ধে খিলগাঁও থানায় স্বর্ণালংকার চুরির মামলা আছে। পুলিশ চক্রটির সব সদস্যকে পাকড়াওয়ের চেষ্টা চালাচ্ছে। তার স্বামী শুকুর পলাতক। তার বিষয়েও খোঁজ নেয়া হচ্ছে। সাদিয়া দম্পতির সোর্স অব ইনকাম নিয়ে সন্দেহ আছে। এ চোরাই সিন্ডিকেটের সঙ্গে পুলিশ বা রাজনীতিবিদ কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাকে চারদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে সাদিয়া দীর্ঘদিন চোরাই সিন্ডিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। রিমান্ডের জিজ্ঞাসাবাদে আরো তথ্য পাওয়া যাবে।