রাজগঞ্জে স্বামী পরিত্যাক্তা নারীর সর্বস্ব লুটে নিয়েছে প্রতারক জিএম বাবু

0

স্টাফ রিপোর্টার॥ যশোরের মনিরামপুরে জিএম বাবু নামে এক প্রতারক সাংবাদিকতার প্রভাব খাটিয়ে স্বামী পরিত্যাক্তা এক নারী শিক্ষিকার সর্বস্ব লুটে নিয়েছে। তিনি এখন বিচারের আশায় ছেলে-মেয়ে নিয়ে পথে পথে ঘুরছেন। গতকাল যশোর প্রেসকাবে এক সংবাদ সম্মেলন ওই শিক্ষিকা লিখিতভাবে এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে মোছাঃ মেহেরুন্নেছা খাতুন জানান, তিনি একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার পর মনিরামপুরের রাজগঞ্জ বাজারে ৩ সন্তান নিয়ে ডাক্তার আব্দুস সামাদের বাসায় ভাড়া থাকতেন। ২০১৭ সালে রাজগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে অর্থ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে এক সালিশে জিএম বাবুর সাথে তার পরিচয় হয়। পরে সে বাসায় গিয়ে ছেলে-মেয়েদের আদর করতে থাকেন। এভাবে যাতায়াতের এক পর্যায়ে জিএম বাবু জোরপূর্বক শিক্ষিকাকে শ্লীলতাহানী ঘটায়। লোকলজ্জায় তখন মেহেরুননেছা ঘটনাটি চেপে যান। এরপর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে জিএম বাবু তাকে ভোগ করতে থাকেন। বিভিন্ন সময় উপকার করে দেয়ার নামে তার জমি বিক্রি করা ৪ লাখ টাকা, সোনালী ব্যাংক রাজগঞ্জ শাখা হতে উত্তোলিত ৭ লাখ ২০ হাজার টাকা নেয়। এরপর ক্যাবল লাইন ও ইজিবাইক ব্যবসা বাবদ ৪ লাখ টাকা, নগদ ৬৫ হাজার টাকা, ডিপিএস থেকে ৪৬ হাজার টাকা, বিয়ে না করেও স্বামী সেজে ব্যুরো বাংলাদেশ থেকে ৪ লাখ টাকা ও যশোর শহর থেকে স্বর্ণালংকার এবং মোবাইল ফোন কেনার কথা বলে ১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন প্রতারক জিএম বাবু। এরপর প্রতিবন্ধী ছেলের চিকিৎসা করানোর কথা বলে মেহেরুননেছাকে ভারতের কলকাতায় নিয়ে যান। সেখানে ৪/৫ দিন হোটেলে রেখে খেয়াল খুশিমতো জিএম বাবু তাকে ব্যবহার করেন। মেহেরুননেছা আরও জানান, বিয়ে করার জন্যে চাপাচাপি সৃষ্টি করলে ধুরন্ধর জিএম বাবু নানা কৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে যায়। বৈধ কোন আয়ের পথ না থাকলেও জিএম বাবু মেহেরুন্নেছার সমস্ত টাকা আত্মসাৎ করে বাঁকড়া বাজারে মোটরসাইকেলের শো-রুম করে। সোনালী ব্যাংক রাজগঞ্জ শাখায় তার (মেহেরুন্নেছার) একটি একাউন্ট আছে। ব্যাংকের চেক বইয়ের পাতা চুরি করে ৩০ লাখ টাকা উঠাতে যায়। তখন ওই ব্যাংকের ম্যানেজার ছিলেন ইসরাইল হোসেন, চেকটি ডিজঅনার হয়ে যায়। এভাবে ২২ লাখ ৩১ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন এবং ২৭-২৮ মাস ধরে ওই শিক্ষিকাকে ভোগ করেন। কিছু বললে জিএম বাবু শিক্ষিকার সন্তানদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এ অবস্থায় অসহায় হয়ে শিক্ষিকা মেহেরুন্নেছা প্রতিমন্ত্রীর দ্বারস্থ হন। পরে মনিরামপুর থানায় জিএম বাবুর বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে থানার ওসি মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে আদালতে মামলা করেন মেহেরুন্নেছা। বিষয়টি জানাজানি হলে যশোরের একটি পত্রিকার মালিক তার পত্রিকা থেকে জিএম বাবুকে বাদ দেন। এখন জিএম বাবু ওই শিক্ষিকার কাছ থেকে লুটে নেয়া অর্থ ফেরত না দেয়ার কৌশল হিসেবে ক্ষতি করার পাঁয়তারা চালাচ্ছেন। সংবাদ সম্মেলনে মেহেরুন্নেছাসহ তার ৩ ছেলে-মেয়ে উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে জিএম বাবুর সাথে তার ০১৭১৩৪২৩২৬৪ নং মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে ফোন রিসিভ করেনি।