কাউকে পেছনে ফেলে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়

0

লোকসমাজ ডেস্ক ॥ কাউকে পেছনে ফেলে টেকসই উন্নয়ন অর্জন সম্ভব হবে না বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জন করতে হলে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী নিয়ে কাজ করতে হবে। গুরুত্ব দিতে হবে সমাজের সব ধরনের, সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে। গতকাল রাজধানীর গুলশানে লেকশোর হোটেলে ‘কনফারেন্স অন ভিএনআর ২০২০ অব বাংলাদেশ: পজিশনিং নন স্টেট একটরস’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গ্লোবাল ক্যাম্পেইন ফর এডুকেশনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর রাশেদা কে চৌধুরী, দক্ষিণ এশিয়ার ওয়াটার এইডের ডিরেক্টর মো. খাইরুল ইসলাম, ইউএনডিপির প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জী, নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন।
সেমিনারে এসডিজি অর্জনে সুশাসন ও সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোর জবাবদিহিতার উপর জোর দিয়েছেন বিশিষ্টজনরা। বক্তারা বলেন, আগমী জুলাই মাসে এসডিজি পর্যালোচনামূলক তথ্য উপস্থাপন করা হবে। এতে সরকারি বেসরকারি সংস্থাগুলো স্বেচ্ছায় জাতীয় পর্যালোচনা তাদের নিজ নিজ প্রতিবেদন তুলে ধরবে। এ সময়ের মধ্যে এসডিজি নিয়ে বিভিন্ন সংস্থার পর্যালোচনার মাধ্যমে আগামী ১০ বছরের কর্ম পরিকল্পনা নির্ধারণ করা হবে বলে সেমিনারে বক্তারা উল্লেখ করেন। পাশাপাশি শিক্ষার গুনগত উন্নয়নে প্রাথমিক শিক্ষার মান বাড়ানোর তাগিদ দেন তারা। ২০১৬ থেকে ২০৩০। এই সময়ের মধ্যে মোট ১৭টি ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট উন্নয়ন হাসিলে, ১৬৯টি লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে জাতিসংঘ সদস্যভুক্ত দেশগুলো। যার মধ্যে দারিদ্র্য বিমোচন ও ক্ষুধামুক্তি, খাদ্যনিরাপত্তা ও উন্নত পুষ্টির লক্ষ্য অর্জন, টেকসই কৃষিব্যবস্থা, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন নিশ্চিত করা, সমতাভিত্তিক মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা অন্যতম। দেশের শীর্ষ কয়েকটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনারে এসডিজি অর্জনের বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের তৎপরতা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন বিশিষ্টজনরা। একই সঙ্গে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ও প্রাইভেট সেক্টরের অবদানের স্বীকৃতির বিষয়ে আরো আন্তরিক হওয়ার পরামর্শ দেন তারা।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন সরকারের একার পক্ষে অর্জন করা সম্ভব নয়। এজন্য সরকারি বেসরকারি উদ্যাগে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে কর্মসংস্থান বাড়ানোর তাগিদ দেন তিনি। এছাড়া নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধে আইনের কঠোর প্রয়োগের দাবি জানান তিনি। অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জানান, সরকার মানবাধিকারের সূচকে অনেক ভালো করেছে। ক্ষেত্র বিশেষে এশিয়ার অনেক দেশ থেকেও এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। দেশের মানবাধিকার সুরক্ষিত হলে অনেকাংশে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন করা সম্ভব। তিনি বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে প্রতিবছর ৬৬ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। এসডিজি বাস্তবায়নে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার ভূমিকা অপরিসীম। এসডিজি বাস্তবায়নে শতকরা ৬৪ শতাংশ বেসরকারি খাত থেকে আসে। এসডিজি বাস্তবায়নে আমাদের কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে, এই চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলার জন্য সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোর শক্তিশালী অংশীদারিত্ব প্রয়োজন। শাহরিয়ার আলম বলেন, এসডিজি অর্জনে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা মাফিক কাজ করছে সরকার। অভ্যন্তরীণ সম্পদের যথাযথ ব্যবহার সরকারের উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন তিনি। গুরুত্ব দেন, নাগরিক সমাজ ও সরকারের শক্ত বন্ধনের উপর। গ্লোবাল ক্যাম্পেইন ফর এডুকেশনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, বর্তমানে এসডিজি বাস্তবায়নের সময় এটা নিয়ে এখন আর চিন্তা করার কিছু নেই। এখন এতে তরুণ এবং সংস্থা সমূহের সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে।