নভেল করোনাভাইরাসে কমল বিশ্বজুড়ে খাবারের দাম

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ চার মাস ধরে ঊর্ধ্বমুখী ছিল খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক। এ মধ্য দিয়ে এবার বাড়তি দামে খাবার কিনে নতুন বছর শুরু করে বিশ্ববাসী। তবে পরিস্থিতি পাল্টেছে। গত ফেব্রুয়ারিতে খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচকে নিম্নমুখী প্রবণতার প্রভাব পড়েছে। মূলত নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাব এর পেছনে মূল প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। ভাইরাসটির প্রকোপে কিছু খাদ্যপণ্যের চাহিদা ব্যাপক হারে কমে গেছে। ফলে খাদ্যপণ্যের সম্মিলিত মূল্যসূচক নিম্নমুখী হতে শুরু করেছে। জাতিসংঘের খাদ্য-বিষয়ক সংস্থা সম্প্রতি এ তথ্য প্রকাশ করেছে। খবর এফএও।
দ্য ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের (এফএও) ফুড প্রাইস ইনডেক্স অনুযায়ী, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক দাঁড়িয়েছে ১৮০ দশমিক ৫ পয়েন্টে। জানুয়ারির তুলনায় গত মাসে খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক মূল্যসূচক ১ দশমিক ৯ পয়েন্ট বা ১ শতাংশ কমেছে। তবে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক দাম এখনো ঊর্ধ্বমুখী। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারির তুলনায় এবারের সূচকমান ১৩ দশমিক ৫ পয়েন্ট বা ৮ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে। গত মাসে ভোজ্যতেল ও খাদ্যশস্যের দামে পতন দেখা দিয়েছে। তবে দুগ্ধপণ্য ও চিনির দাম চাঙ্গা ছিল।
গত মাসে খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক দাঁড়িয়েছে ১৬৭ দশমিক ৮ পয়েন্টে, যা আগের মাসের তুলনায় ১ দশমিক ৫ পয়েন্ট কম। চাল বাদে বাকি সব ধরনের খাদ্যশস্যের দামই ফেব্রুয়ারিতে কমতির দিকে ছিল। ফলে পণ্যটির গড় মূল্যসূচক কমে গেছে। প্রতিকূল পরিবেশের জেরে শীর্ষ চাল উৎপাদনকারী দেশগুলোতে এবার উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে খাতসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এতে সরবরাহ সংকটের আশঙ্কায় পণ্যটির দাম দুই মাস ধরে বাড়তির দিকে।
দীর্ঘ সময় পর ফেব্রুয়ারিতে ভোজ্যতেলের দাম ১০ দশমিক ২ শতাংশ কমেছে। এ সময় ভোজ্যতেলের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক দাঁড়িয়েছে ১৫৮ দশমিক ১ পয়েন্টে, যা আগের মাসের তুলনায় ১৮ দশমিক ২ পয়েন্ট কম। ২০১৯ সালের জুলাই থেকে পণ্যটির দাম ধারাবাহিকভাবে বাড়ছিল। মূলত পাম অয়েলের বাজারে রেকর্ড পতন ভোজ্যতেলের গড় মূল্যসূচক কমাতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। আগের মাসের তুলনায় গত মাসে পণ্যটির দাম ১২ শতাংশ কমেছে। এর জেরে ধরে কমেছে সূর্যমুখী, সরিষা ও সয়াবিন তেলের দামও। এছাড়া দুই মাস ধরে নিম্নমুখী রয়েছে আমিষ পণ্যের বাজার। ফেব্রুয়ারিতে আমিষ পণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক দাঁড়িয়েছে ১৭৮ দশমিক ৬ পয়েন্টে, যা আগের মাসের তুলনায় ৩ দশমিক ৭ পয়েন্ট বা ২ শতাংশ কম। এর আগে টানা ১১ মাস পণ্যটির বাজার চাঙ্গা ছিল।
তবে অন্যসব খাদ্যপণ্যের দাম কমলেও বেড়েছে দুগ্ধপণ্য ও চিনির দাম। এফএও জানিয়েছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দুগ্ধপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক আগের মাসের তুলনায় ৯ দশমিক ২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০৯ দশমিক ৮ পয়েন্টে। এ নিয়ে টানা চার মাস পণ্যটির বাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে। অন্যদিকে এ সময় আগের মাসের তুলনায় ৯ পয়েন্ট বেড়ে চিনির বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক ২০৯ দশমিক ৭ পয়েন্টে উঠেছে, যা ২০১৭ সালের মে মাসের পর থেকে সর্বোচ্চ। এ নিয়ে পাঁচ মাস ধরে পণ্যটির দাম বাড়ছে। বৈশ্বিক উৎপাদন হ্রাসের বিপরীতে পণ্যটির চাহিদা চাঙ্গা রয়েছে, যা পণ্যটির দাম বাড়িয়ে তুলছে।