লোহাগড়ায় স্ত্রীকে তাড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ প্রবাসী স্বামীর বিরুদ্ধে

0

লোহাগড়া (নড়াইল) সংবাদদাতা ॥ নড়াইলের লোহাগড়ায় এক প্রবাসীর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে নির্যাতনের পর বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগে জানা গেছে, ২০০৩ সালে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা থানার কৃষ্ণপুর গ্রামের তজিবর মোল্লার মেয়ে সাবিনা ইয়াসমিনের (৩০) লোহাগড়ার ইতনা ইউনিয়নের চরপাচাইল গ্রামের বেলায়েত হোসেন গাজীর ছেলে মনির হোসেন গাজীর সাথে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে তিনটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে ভালই চলছিল তাদের সংসার। ২০১২ সালে মনির হোসেন গাজী চাকরি করতে ওমানে চলে যান। তখন তিন কন্যাকে নিয়ে সাবিনা ইয়াসমিন ভালই ছিলেন। গত প্রায় ছয় মাস আগে মনির হোসেন দেশে আসেন। দেশে আসার পর স্ত্রী সাবিনাকে তাড়িয়ে দেন। সাবিনা আশ্রয় নেন বাপের বাড়িতে। মেয়েদের মায়ার টানে গত শনিবার (৭ মার্চ) সকালে সাবিনা তার শ^শুর বাড়িতে যান মেয়েদের সাথে দেখা করতে। কিন্তু সাবিনার স্বামী, ননদ কামনা, চাচাত ননদ রেশমা মিলে সাবিনাকে মারপিটে জখম করে বলে অভিযোগ। স্থানীয় লোকজন সাবিনাকে উদ্ধার করে লোহাগড়া হাসপাতালে ভর্তি করেন। সাবিনা বলেন, ‘আমার স্বামী এখন অনেক টাকার মালিক। তাই নতুন বিয়ে করতে চান। আমাকে তালাক দিতে বলেছেন। আমি তালাক দিতে রাজি না হওয়ায় আমাকে মারপিট করেছেন। আমার স্বামী মেয়ে পছন্দ করেছেন, তিনি বিয়ে করবেন। আমাকে ননদ কামনা গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। হুমকি দিয়েছে স্বামীকে তালাক না দিলে মেরে ফেলবে। তিনি আরো বলেন, আমার মেয়ে সানজিদা অষ্টম, খাদিজা সপ্তম ও লিজা তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। সংসারে কোন অশান্তি ছিল না। কিন্তু স্বামীর নতুন বিয়ে করার চিন্তাই অশান্তির কারন’। রবিবার কথা হয় সাবিনা ইয়াসমিনের সাথে। তিনি জানান, ২০১৪ সালে ওমান থেকে আমার স্বামীর বন্ধুরা আমাকে ফোনে জানান, আপনার স্বামী সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। মুখ চেনা যাচ্ছে না। আমাকে অন্য একটা শরীর দেখানো হয়েছে। দেশে আসার কথাও আমার কাছে গোপন রাখা হয়েছিল। স্বামী দেশে এসে কয়েকমাস ঢাকায় ছিলেন। পরে লোহাগড়াতে এসেছেন। আমি গোপন খবর পেয়ে শ^শুর বাড়িতে গিয়ে স্বামীকে দেখতে পাই। একপর্যায়ে স্বামী ও তার লোকজন আমাকে মারপিট করেন। আমি আদালতে মামলা দায়ের করি। মামলাটি বর্তমানে চলমান রয়েছে। অভিযুক্ত মনির হোসেন গাজীকে পাওয়া না গেলেও তার বোন কামনা বলেন, আমরা সাবিনাকে মারপিট করিনি। আমার ভাইতো সাবিনাকে তালাক দিয়েছে। মনির হোসেন গাজীর চাচা মো. হুমায়ুন কবীর জানান, দেশে আসার পর মনির তার স্ত্রী সাবিনাকে তালাক দিয়েছে। জনপ্রতিনিধিসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা শালিস করেছেন। সাবিনা আদালতে মামলা করেছে। আসামিরা জামিনে আছেন। তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী সাবেক স্বামীর বাড়িতে আসবে কেনো। অপরদিকে, সাবিনা বলছেন, আমি কোন তালাকের কপি পাইনি। ইতনা ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো. ফায়েক আলী খান জানান, সাবিনাকে মারপিট করেছে কিনা বলতে পারবো না। মনির হোসেন তার স্ত্রী সাবিনাকে তালাক দিয়েছেন শুনেছি। সাবিনা আদালতে মনিরের নামে মামলা করেছেন এতটুকু জানি। লোহাগড়া হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, সাবিনা ইয়াসমিন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। চিকিৎসা চলছে। লোহাগড়া থানার ওসি মো. আলমগীর হোসেন বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।