জিকে শামীমের জামিন, রাষ্ট্রপক্ষের ‘জানা নেই’

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ টেন্ডার মোগল জিকে শামীম। গত বছর সেপ্টেম্বরে গ্রেপ্তারের পর শিরোনামে আসে তার নাম। অর্থ পাচার, অস্ত্র আর মাদক আইনে মামলা হয় তার বিরুদ্ধে। অস্ত্র ও মাদক মামলায় চার্জশিটও দাখিল হয় আদালতে। সেই জিকে শামীম গতকাল হঠাৎ করেই আবার শিরোনাম হন। মাস খানেক আগে হাইকোর্ট থেকে দু’টি মামলায় জামিন পান তিনি। কিন্তু তা এতদিন খবরে আসেনি। খোদ রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেছেন, তিনি বিষয়টি জানেন না।
গত ৪ এবং ৬ই ফেব্রুয়ারি অস্ত্র ও মাদক আইনের দুই মামলায় জি কে শামীম হাইকোর্ট থেকে জামিন পান। একটি মামলায় ছয় মাস এবং অন্য মামলায় এক বছরের জামিন হয় তার। জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জিকে শামীমের আইনজীবী শওকত ওসমান। তিনি বলেন, জিকে শামীম দু’টি মামলাতে জামিন পেয়েছেন। তবে এখনই তিনি মুক্তি পাচ্ছেন না। কারণ তার বিরুদ্ধে আরো দুটি মামলা রয়েছে। জিকে শামীম হাইকোর্টে দু’টি বেঞ্চ থেকে জামিন পান। এরমধ্যে একটি বেঞ্চে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি এটর্নি জেনারেল ফজলুর রহমান খান বলেছেন, তিনি বিষয়টি জানেন না। গতকাল তিনি বলেন, জিকে শামীমের অন্য মামলা নিয়ে গিয়েছিলো, ক্যাসিনোর এবং আরো কিছু মামলা নিয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু অস্ত্র মামলার কথা আমার তো জানা নেই। আমি তো কোর্টে থাকি সারাদিন। আমার জানা মতে জিকে শামীমের কোন মামলায় জামিন হয়নি। এটা আমার দেখতে হবে। রোববার পর্যন্ত একটু অপেক্ষা করেন। আমাকে একটু কনফার্ম হতে হবে। সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ এ প্রসঙ্গে বলেন, হাইকোর্ট থেকে কারো জামিন নিতে হলে সংশ্লিষ্ট কোর্টে জামিন আবেদনটি জমা দিতে হয়। রাষ্ট্রপক্ষকে অবশ্যই নোটিশ দেয়া হয়। তারপর আদালতে মামলার শুনানি হয়। অথচ জি কে শামীমের জামিন হবে, আর রাষ্ট্রপক্ষ জানবে না বিষয়টি মোটেও সমীচীন কথা নয়। যুবলীগ নেতা হিসেবে পরিচিত জি কে শামীমকে রাজধানীর গুলশানের নিকেতনের বাসা থেকে গত বছর ২০শে সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। যুবলীগ নেতা পরিচয়ে গণপূর্তের টেন্ডারের ওপর তার একক নিয়ন্ত্রণ ছিল। সরকারি শ’ শ’ কোটি টাকার কাজ পায় তার প্রতিষ্ঠান জি কে বিল্ডার্স। র‌্যাবের অভিযানে তার কাছ থেকে নগদ প্রায় দুই কোটি টাকা, পৌনে ২০০ কোটি টাকার এফডিআর, আগ্নেয়াস্ত্র ও মদ পাওয়া যায়। তার বিরুদ্ধে গুলশান থানায় তিনটি মামলা দায়ের করে র‌্যাব। জিকে শামীমের বিরুদ্ধে গত ২১শে অক্টোবর মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন। জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ২৯৭ কোটি আট লাখ ৯৯ হাজার ৫৫১ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। অস্ত্র মামলায় এরই মধ্যে বিচার শুরু হয়েছে। অস্ত্র মামলার চার্জশিটে বলা হয়, জি কে শামীম একজন চিহ্নিত চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, অবৈধ মাদক ও জুয়ার ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। এদিকে টেন্ডারকাণ্ডে জি কে শামীমের নাম আসায় তার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরকারের চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। জি কে শামীমকে গ্রেপ্তারের পর শুরু হওয়া ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার অনেকের সঙ্গে জি কে শামীমের ঘনিষ্টতা ছিল। এছাড়া সম্প্রতি রাজধানীর একটি পাঁচতারা হোটেলে অপরাধ জগৎ গড়ে তোলার কারণে গ্রেপ্তার বহিস্কৃত যুব মহিলা লীগ নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার সঙ্গেও জি শামীমের যোগসূত্র ছিল বলে তথ্য এসেছে।