করোনা মোকাবিলায় গণপরিবহন এড়িয়ে চলার পরামর্শ

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ রোধের অংশ হিসেবে গণপরিবহন এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। গতকাল শনিবার রাজধানীর আইইডিসিআরে কোভিড-১৯ নিয়ে আয়োজিত নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা সম্ভব হলে গণপরিবহন ব্যবহার না করার অনুরোধ জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এএসএম আলমগীর ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. মো. আমীনুল হাসান। অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা বলেন, গত ২১ জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত দেশে মোট ৪৮ সন্দেহভাজনকে আইসোলেশনে নিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়েছে। বর্তমানে আছেন তিনজন। তিনি বলেন, বিদেশ থেকে কেউ এলেই যে তার মধ্যে সংক্রমণ রয়েছে তা ঠিক নয়, কিন্তু সাবধানতা নিতে হবে। তাই বিদেশ থেকে এলে নিজস্ব গাড়ি ব্যবহার এবং গাড়ির জানালা খুলে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। একই সঙ্গে বিদেশ থেকে কেউ এলে পরিবারের সবাইকে বিমানবন্দরে না যাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, যত কম মানুষ সেই গাড়িতে থাকবেন ততই ভালো। বিশ্ব পরিস্থিতি সম্পর্কে অধ্যাপক ডা. মীরজাদী বলেন, যে ৮৯টি দেশে রোগী শনাক্ত হয়েছে তার মধ্যে লোকাল টান্সমিশন বা স্থানীয়ভাবে সংক্রমণ হয়েছে ৪৩টি দেশে। এই ৪৩টি দেশের মধ্যে ৩৩টিতে গত ২৪ ঘণ্টায় রোগী পাওয়া গেছে। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ভুটান, ক্যামেরুন, সার্বিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে করোনা নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে এবং গুজবে কান না দিয়ে আইইডিসিআরের তথ্যে ভরসা রাখার আহ্বান জানিয়ে আইইডিসিআর পরিচালক বলেন, গতকাল তিন জনসহ মোট ১১১ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়েছে। এদের কারও শরীরে এখন পর্যন্ত কোভিড ১৯-এর উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।
তিনি জানান, আইইডিসিআরের হটলাইনে ১৭৮টি কল এসেছে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত, একজন সরাসরি এসেছেন সেবা নিতে। তিনি আরও জানান, বিশ্বে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৯৮ হাজার ১৯২ জন। এরমধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৮৭৩ জন। মোট মারা গেছেন ৩ হাজার ৪০০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৯৯ জন। মোট রোগীর মধ্যে চীনেই রয়েছে ৮০ হাজার ৭৭১ জন। সংবাদ সম্মেলনে ইরান, ইতালি ও ভারতের পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। ভারতের সঙ্গে যেহেতু বাংলাদেশের বর্ডার রয়েছে তাই দেশটির রোগীর সংখ্যা বেশি বিশ্লেষণ করা হয় জানিয়ে অধ্যাপক ডা. মীরজাদী জানান, ভারতের দিল্লিতে আছেন তিন জন, হরিয়ানায় ১৪ জন, কেরালায় তিন জন, রাজস্থানে দুজন, তেলেঙ্গানায় একজন এবং উত্তর প্রদেশে আট জন, অর্থাৎ মোট ৩১ জন। তবে এদের মধ্যে পর্যটকের সংখ্যাই বেশি। চীনের বাইরে আক্রান্ত দেশ ও রোগীর সংখ্যা বাড়ছে এবং এরমধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান ও ইতালির পরিস্থিতি উদ্বেগজনক, প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এর আগে ইতালি ও আরব আমিরাতে একজন করে এবং সিঙ্গাপুরে পাঁচ বাংলাদেশি আক্রান্ত হন। সিঙ্গাপুরের তিন জন বাড়ি ফিরেছেন, দুই জন আছেন হাসপাতালে। এর বাইরে নতুন করে কোনও বাংলাদেশি আক্রান্ত হয়নি। ইতালিতে যে বাংলাদেশি আক্রান্ত হয়েছেন তিনি হোম আইসোলেশনে আছেন বলে জানান তিনি। যারা আক্রান্ত দেশ থেকে এসেছেন অথবা যাদের জ্বর, কাশি, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্ট রয়েছে তাদের আইইডিসিআরের হটলাইনে যোগাযোগ করার জন্য অথবা নিকটস্থ সরকারি হাসপাতালে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।