এ মাসেই আঘাত হানবে কালবৈশাখী তাপমাত্রা অতিক্রম করবে ৪৯ ডিগ্রি

0

আকরামুজ্জামান ॥ হাড় কাঁপানো শীত বিদায়ের পর এবার তীব্র গরম ও ঝড়-বৃষ্টির আভাস দিচ্ছে আবহাওয়া অফিস। চলতি মাসেই যশোরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে তাপমাত্রা বাড়বে। এ সময়ে তাপমাত্রা ৪০ ডিগি সেলসিয়াস অতিক্রম করতে পারে। পাশাপাশি স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সাথে দুই বা ততোধিক কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। কোথাও কোথাও বজ্রবৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এ পরিস্থিতির জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবকে দায়ী করেছেন পরিবেশবিদরা।
যশোর বিমান বাহিনী নিয়ন্ত্রিত আবহাওয়া অফিসের সূত্রে জানা গেছে, ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহের দিক থেকে যশোরসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের তাপমাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। যা এখন ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি মার্চের মাঝামাঝি সময়ে গিয়ে ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করবে। শেষের দিকে আরও বেড়ে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রিরও ওপরে উঠতে পারে। সূত্রটি জানায়, চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত শুরু হতে পারে। কোথাও কোথাও এক থেকে দুইদিন ধরে ঝড় এবং শিলাবৃষ্টি হতে পারে। আবহাওয়া অফিসের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা বলেন, গত বুধবার থেকে আকাশে বৃষ্টি বলয় সৃষ্টি হয়েছে। এটি চলতি সপ্তাহেই জমিন স্পর্শ করতে পারে। এ সময়ে আঘাত হানতে পারে মৌসুমের প্রথম কালবৈশাখী ঝড়। বৃষ্টির শেষ হওয়ার পরই তাপমাত্রা বাড়তে পারে অস্বাভাবিকভাবে। বিশেষ করে যশোরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে এর প্রভাবটা বেশি পড়বে বলে তিনি জানান। আবহাওয়াবিদরা জানান, সাধারণত অন্যান্য বছরে শীতের বিদায়ের পর এপ্রিল মাস থেকে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি কালবৈশাখী ঝড়ের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। কিন্তু এ বছর প্রায় এক মাস আগেই কালবৈশাখী ঝড় আসার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। একই পরিস্থিতি ছিলো শীতের ক্ষেত্রে। এই প্রথম শীত নভেম্বর মাস থেকে শুরু হয়ে তা ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত বহাল ছিলো। শীত মৌসুমে এবছর বাংলাদেশে যে কনকনে ঠান্ডা ছিলো তা অনেক দিন ধরে কেউ উপলব্ধি করেনি। এরই ধারাবাহিকতায় এবার গরমও পড়বে ঠিক সেই মাত্রায়। এদিকে দ্রুত আবহাওয়ার এ পরিবর্তনের লক্ষণকে ভালোভাবে নিচ্ছেন না পরিবেশবিদরা। তারা বলছেন, আবহাওয়ার সাম্প্রতিক যে পরিস্থিতি চলছে তাতে করে সামনে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি পড়তে হবে প্রকৃতিকে।
এ বিষয়ে যশোর সরকারি এমএম কলেজের সহকারী অধ্যাপক সোলজার হোসেন বলেন, আবহাওয়ার এ পরিস্থিতির জন্য আমরাই দায়ী। তিনি বলেন, দেশে উন্নয়নের নামে যেসব কাজ চলছে তাতে আবহাওয়া পরিবর্তনের জন্য বড় ধরনের প্রভাব পড়ছে। উন্নয়ন কাজে রাসায়নিক দ্রব্য ও রাসায়নিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের যত্রতত্র ব্যবহার দ্রুত আবহাওয়া পরিবর্তনের জন্য বড় কারণ। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে যশোরসহ সারাদেশে যেভাবে প্রাকৃতিক সম্পদ গাছ কেটে ফেলা হয়, তাতে আবহাওয়ার জন্য বড় ধরনের হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। এর পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের যে চেষ্টা চালানো হচ্ছে তার বড় প্রভাব পড়েছে আমাদের দেশের আবহাওয়ার জন্য। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে আমাদেরকে আরও শীত ও গরম সহ্য করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। আর বড় প্রভাব পড়বে যশোরাঞ্চলের ওপর দিয়ে।