দিল্লিতে সহিংসতার পর মোদির বাংলাদেশে আসা কতটা শোভন: মির্জা ফখরুল

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ দিল্লিতে সহিংসতার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর ‘কতটুকু শোভনীয়’ তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একই সঙ্গে দুই বন্ধুপ্রতীম দেশের মধ্যে বিদ্যমান দীর্ঘদিনের সমস্যাগুলোর কতটুকু সমাধান ভারতের প্রধানমন্ত্রী করেছেন তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি মহাসচিব। সোমবার জাতীয় প্রেসকাব মিলনায়তনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) উদ্যোগে ঐতিহাসিক পতাকা উত্তোলন দিবস উপলে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব প্রশ্ন তোলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আপনি কখন আসছেন, ‘যখন দিল্লিতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপস্থিতিতে নিকৃষ্টতম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবং অভিযোগ আসছে বিভিন্ন মহল থেকে এই দাঙ্গার সঙ্গে আপনার দল অভিযুক্ত। সেই সময় আপনার বাংলাদেশে আসাটা কতটুকু শোভনীয় হচ্ছে সে বিষয়ে চিন্তা করা দরকার’। তিনি বলেন, ‘২ মার্চ জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রবকে কেন সম্মান জানানো হচ্ছে না বলে অনেকে আপে করেছেন। কেন এ দিবসটি পালন করা হচ্ছে না, এটা তো রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালন করা। কিন্তু এখন যারা মতায় আছেন তাদের সঙ্গে স্বাধীনতার কতটুকু সম্পর্ক সেটা এখন জনগণের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজকের একাত্তরের সেই স্বাধীনতা যুদ্ধের যে চেতনা, যুদ্ধের পরে মানুষের যে আশা-আকাঙ্া ছিল এবং বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে মানুষ যে স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছিল তার আশা-আকাঙ্া এখন পর্যন্ত পূরণ হয়নি’। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকার জনগণের ম্যান্ডেট না নিয়ে জোর করে মতায় বসে আছে। তারা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের যে চেতনা সেটাকে ধূলিসাৎ করে দিয়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চাপিয়ে দিতে চাচ্ছে। তারা প্রত্যেকটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা আজকে শুধু আব্দুর রবকে ভুলে যাচ্ছে না, স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা অবদান রেখেছিলেন দিয়েছেন তাদের স্মরণ করেন না। ২৬ মার্চ যখন দেশ দিশাহারা হয়ে পড়েছিল তখন চট্টগ্রামের কালুরঘাট থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান, তাকেও তারা মনে করে না। মনে করে না তারা এমএজি ওসমানীকে, মনে করে না মওলানা ভাসানীকে। তারা কখনোই স্বীকার করতে চায় না এই স্বাধীনতা যুদ্ধের সঙ্গে দেশের সমস্ত মানুষ জড়িত ছিল’। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকের সরকার আমাদের সমস্ত অর্জনগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এই সরকারের সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা একে একে সমস্ত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভেঙে দিয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া শুধু বিএনপি চেয়ারপারসন নয়, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, তাকে আজকে বেআইনিভাবে, অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে আটক করে অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসা সুযোগ দিচ্ছে না। তার জামিন পাওয়ার অধিকার, সে অধিকারটুকু তাকে দেওয়া হচ্ছে না’। তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের শপথ নিতে হবে, এই দেশকে যেমন ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করে স্বাধীন করেছিলাম, আজ আবারো আমাদের প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে হলেও স্বাধীনতাকে রা করতে হবে। আসুন আজকে আমরা যারা দেশকে ভালবাসি, গণতন্ত্রকে ভালবাসি তারা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাবানলের মতো একটা শক্তি সমস্ত কিছু ধ্বংস করে দিচ্ছে, তাকে আমরা পরাজিত করে। জনগণের শাসনকে প্রতিষ্ঠা করি’। সভায় বক্তব্য দেন জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কাদের সিদ্দিকী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়া, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুরু প্রমুখ।