যুক্তরাষ্ট্র অস্ট্রেলিয়া ও থাইল্যান্ডে প্রথম মৃত্যু

0

লোকসমাজ ডেস্ক ॥ বিশ্বব্যাপী ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে করোনা ভাইরাস। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী ইতিমধ্যে এতে বিশ্বব্যাপী আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৮৭ হাজার মানুষ। তবে চিকিৎসার পর ইতিমধ্যে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে গেছেন ৪২ হাজার ১৬৪ জন। ভাইরাসটি পৌঁছে গেছে ৬৪টি দেশে। গত ৯ দিনে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৩৩টি দেশ। বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার। মৃত্যুর খবর আসছে নতুন আক্রান্ত দেশগুলো থেকে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন প্রথম মার্কিন নাগরিক। এ ছাড়া, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতেও করোনা ভাইরাসের লক্ষণ নিয়ে একজন করে মৃত্যুবরণ করেছেন। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরান ও কুয়েতের অবস্থা সব থেকে ভয়াবহ। ইরানে সরকারি হিসাবে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৯৭৮। তবে বিবিসি জানিয়েছে, দেশটিতে প্রকৃত অবস্থা অনেক বেশি ভয়াবহ। ইতিমধ্যে সেখানে দুই শতাধিক মৃত্যুর খবর দিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি। অপরদিকে কুয়েতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬ জনে। পাকিস্তানেও নতুন করে আরো দুইজন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
করোনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে তোড়জোড়
বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টিকারী এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই জোরালো করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। শনিবার যুক্তরাষ্ট্রে মারা যাওয়া ব্যক্তি কভিড-১৯ বা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর জটিল অবস্থায় ছিলেন। এরপর সিয়াটলের কাছে কির্কল্যান্ডে অবস্থিত এভারগ্রিন হেলথ হাসপাতালে তিনি মারা গেছেন। ওয়াশিংটনের স্বাস্থ্য বিভাগের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জেফ্রে ডাচিন বলেছেন, কীভাবে ওই ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন সে বিষয়ে কর্মকর্তারা নিশ্চিত নন। কির্কল্যান্ডে আরো দু’জন ব্যক্তি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বলে জোরালোভাবে মনে করা হচ্ছে। সেখানে কমপক্ষে ৫০ জন অধিবাসী ও স্টাফের মধ্যে করোনার লক্ষণ দেখা দিয়েছে। জেফ্রে ডাচিন বলেন, এই মুহূর্তে এই ভাইরাস এখানে ব্যাপকভাবে স্থানীয়দের মধ্যে বিস্তার ঘটেনি। দীর্ঘমেয়াদি কেয়ার ফ্যাসিলিটিগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত থাকা থেকেই এই সংক্রমণ ঘটে থাকতে পারে। কির্কল্যান্ডে আরো যে দু’জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তার মধ্যে একজন স্বাস্থ্যকর্মী। তার বয়স ৪০-এর কোটায়। তার অবস্থা স্থিতিশীল। আক্রান্ত ৭০ বছর বয়সী একজন নারীর বসবাস ওই এলাকায়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। এটা দুঃখজনক যে, করোনা ভাইরাসে ওয়াশিংটনে একজন মারা গেছেন। তার পরিবার ও বন্ধুদের প্রতি আমাদের সমবেদনা জানিয়েছেন রাজ্যের গভর্নর জে ইন্সলি। তিনি বলেছেন, আমরা আমাদের প্রস্তুতিকে শক্তিশালী করছি এবং সাড়া দেয়ার চেষ্টাকেও শক্তিশালী করছি। আমরা ওয়াশিংটনের মানুষকে সুস্বাস্থ্য ও নিরাপদ রাখতে চাই।
বিশ্বজুড়ে করোনার ভয়াবহ রূপ
করোনা ভাইরাসে সব থেকে ভয়াবহ অবস্থা এর উৎপত্তিস্থল চীনের। সেখানে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ২৮৭০ জন। শনিবার নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরো ৫৭৩ জন। এটি পূর্বের দিনের থেকে বেশি। ফলে নতুন করে আবারো বাড়তে শুরু করেছে চীনে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। তবে আক্রান্তদের ৫২ শতাংশ সমপূর্ণ সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে গেছেন। মোট ৭৮ হাজার আক্রান্তের মধ্যে ৪২ হাজারই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন।
চীনের বাইরে সব থেকে ভয়াবহ অবস্থা দক্ষিণ কোরিয়ার। সেখানে শনিবার নতুন করে ২১০ জন আক্রান্ত হয়েছেন এ ভাইরাসে। এতে দেশটিতে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ালো ৩৭৩৬ জনে। এখন পর্যন্ত দেশটিতে মারা গেছেন ১৮ জন। এ ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানের অবস্থাও ভয়াবহ। সেখান থেকে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে না। তবে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, দেশটিতে মৃতের সংখ্যা দুই শতাধিক। মারা গেছেন ইরানের একজন সাংসদও। করোনার বিস্তার রোধে ইরানের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে আজারবাইজান। তবে ইরানের দাবি, করোনা আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে মৃত্যু সংখ্যা ৫৬। মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে কাতার। এ ছাড়া, অঞ্চলটিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে দ্রুত বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। শনিবার এ সংখ্যা ছিল ১৯। শনিবার করোনা ভাইরাসে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে থাইল্যান্ডে। এশিয়ার বাইরে সব থেকে ভয়াবহ অবস্থা ইউরোপের দেশ ইতালির। সেখানে এখন পর্যন্ত ১১০০ জনেরও বেশি করোনা আক্রান্ত চিহ্নিত হয়েছেন। মারা গেছেন কমপক্ষে ২৯ জন। ইতালি ছাড়া ইউরোপের অন্য দেশগুলোতেও করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। এরমধ্যে ফ্রান্সে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে।