সিপিডির সেমিনারের তথ্য : ২০৩০ সালে দেশ থেকে অর্থ পাচার ১৪ বিলিয়ন ছাড়াবে

0

লোকসমাজ ডেস্ক ॥ আমদানি ও রপ্তানির আড়ালে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হয়ে যাচ্ছে। ২০৩০ সাল নাগাদ এটি ১৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ওয়াশিংটন ভিত্তিক গবেষণা ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই)। বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে হোটেল লেকশোরে ‘ডেলিভারিং এসডিজি ইন বাংলাদেশ: রোল অব নন স্টেট একটরস’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসডিজির চার বছরে বাংলাদেশের অগ্রগতি শীর্ষক বইয়ে জিএফআই’র প্রতিবেদনের এ তথ্য তুলে ধরা হয়। সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো, সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেনে হলেনস্টেইন, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ এমপি, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বর্তমানে প্রতিবছর যে ভয়াবহ আকারে বাংলাদেশ থেকে অর্থপাচার হয়ে যাচ্ছে এভাবে চলতে থাকলে ২০৩০ সালে এটি ১৪.১৩ বিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অর্থপাচারের এই প্রবণতা ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি সফলভাবে বাস্তবায়নে বাংলাদেশের ক্ষমতাকে উল্লেখযোগ্যভাবে বাধাগ্রস্ত করবে। বক্তারা বলেন, বৈশ্বিক অনেক সূচকেই বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। তবে অনেক ক্ষেত্রেই পিছিয়ে রয়েছে দেশটি।
পরিবেশ দূষণ, যানজট, দুর্নীতির মতো সমস্যা রয়েছে। বাড়ছে আয় বৈষম্য। প্রচলিত ভূমিকার বাইরে অভ্যন্তরীণ ও বিকল্প উৎস থেকে সম্পদ আহরণের ক্ষেত্রে দেশ পিছিয়ে রয়েছে। তবে ২০১৫ সালের পর বেসরকারি খাতের ক্ষেত্রেও দৃষ্টিভঙ্গিতে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বেসরকারি খাত আরো বেশি সক্রিয় হয়েছে। এছাড়া এসডিজি নিয়ে সংসদে আলাদা অধিবেশন করার তাগিদও এসেছে আলোচনায়।
সেমিনারে সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, এসডিজি নিয়ে সংসদে আলাদা অধিবেশন হওয়া দরকার। তার আগে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি সংলাপ হওয়া উচিত। সিপিডির ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বৈষম্য, জলবায়ু পরিবর্তন ও রুলস অব জাস্টিজ। ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি বাস্তবায়নে এসব ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আনতে হবে। সেইসঙ্গে ঘটাতে হবে উত্তরণ। এসডিজি বাস্তনায়নে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অর্ন্তভুক্তির আহবান জানান তিনি। ইউএনএফপিএ’র কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ আসা আর্কেলসন বলেন, বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের সমালোচনামূলক অবস্থান রয়েছে। বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকলেও বেশকিছু ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে। প্রান্তিক, দলিত ও বিশেষ জনগোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দ আরও বাড়াতে হবে। এ জন্য দরকার প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার। প্রতিবেদনে জিএফআই উল্লেখ করেছে, কোনও দেশ থেকে অবৈধভাবে আর্থিক মূল্যবান সম্পদগুলো সরিয়ে দিলে তা ওই জাতিকে দেশের কর আয়ের হাত থেকে বঞ্চিত করে। এটি সে দেশের অর্থনীতিকে মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে।