অবাধ নির্বাচনের জন্য মাহবুব তালুকদারের পাঁচ ‘নি’ তত্ত্ব

0

লোকসমাজ ডেস্ক ॥ সংবিধান নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন সত্তা হিসেবে বিকশিত হওয়ার সুযোগ দিয়েছে। সংবিধান নির্বাচন কমিশনকে যে অপরিমেয় ক্ষমতা দিয়েছে, পৃথিবীর খুব কম দেশের কমিশন, এমন কি ভারতের নির্বাচন কমিশনও এমন ক্ষমতার অধিকারী নয়। কিন্তু ক্ষমতা থাকলেই কেবল হবে না। ক্ষমতার প্রয়োগ না হলে সে ক্ষমতা অর্থহীন। বর্তমান নির্বাচন কমিশন তার ক্ষমতার কতটুকু প্রয়োগ করতে পেরেছে, তা সময়ই বিচার করতে পারবে। গতকাল সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত ইটিআই ভবনে নির্বাচন কমিশনে সদ্য যোগ দেয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে তিনি ৫ টি ‘নি’ তত্ত্ব তুলে ধরেন। বলেন, আজ বর্তমান নির্বাচন কমিশনের তিন বছর পূর্ণ হয়েছে।
এই তিন বছরে আমাদের কমিশনের আছে অনেক অর্জন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিসর্জন। আমি আজ অতীতের কোনো মূল্যায়ন করতে যাব না। এই মূহূর্তে আমি সামনের দিকে তাকাতে চাই। আগামী বাকি দুটি বছর যাতে কমিশনের অর্জনের পাল্লা ভারী হয়, সেটাই আমার প্রত্যাশা। তিনি বলেন, গণতন্ত্র-নির্বাচন অভিন্ন সূত্রে বাঁধা। তাই গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচন খুব গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য আমরা কোনো অবস্থাতেই মানুষের ভোটধিকারকে লঙ্ঘিত ও ভূলুষ্ঠিত হতে দিতে পারি না। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনী ব্যবস্থাপনায় নিশ্চয়তা, নিরপেক্ষতা, নিরাপত্তা, নিয়মনীতি ও নিয়ন্ত্রণ কমিশনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি। অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য পঞ্চ ‘নি’ তত্ত্ব দিলেন মাহবুব তালুকদার। প্রথম ‘নি’ হচ্ছে ‘নিশ্চয়তা’-এটা নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার নিশ্চয়তা। এ নিশ্চয়তার অর্থ ভোটার ও রাজনৈতিক দলের আস্থা সৃষ্টি। দ্বিতীয় ‘নি’ হচ্ছে নিরপেক্ষতা’-নির্বিঘ্নে ভোট প্রদান ও ভোট কার্যক্রম চালানোর প্রতিশ্রুতি। কমিশনের পক্ষে এই নিরপেক্ষতা অপরিহার্য। তৃতীয় ‘নি’ হচ্ছে ‘নিরাপত্তা’-এই নিরাপত্তা ভোটার, রাজনৈতিক দল ও অন্য অংশীজনের নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি। এ বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে কার্যকরভাবে নির্বাচনকালে কমিশনের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে নিয়ে আসা দরকার। চতুর্থ ‘নি’ হচ্ছে ‘নিয়ম-নীতি’- নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সবাইকে কঠোরভাবে বিধি-বিধান পরিচালনের আওতায় আনা প্রয়োজন। পঞ্চম ‘নি’ হচ্ছে ‘নিয়ন্ত্রণ’-নির্বাচন অবশ্যই নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে থাকতে হবে। স্বনিয়ন্ত্রণই নির্বাচন কমিশনের মূল কথা। ইসি সচিব মো. আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) শাহাদাত হোসেন চৌধুরীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।