৫০ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেয়ার খবর বিদেশী মিডিয়ায়

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ বাংলাদেশের জোয়ারি হাই স্কুলে ৫০ ছাত্রের মাথার চুল কেটে দেয়ার খবর এখন স্থান পেয়েছে বিদেশী মিডিয়ায়। সম্প্রতি নাটোরের বড়াইগ্রামে অবস্থিত ওই স্কুলে লম্বা চুল রাখার কারণে স্কুলটির প্রধান শিক্ষক সেকান্দার আলী (৬০) কাঁচি দিয়ে শিক্ষার্থীদের মাথার চুল কেটে দেন। এ নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানাতে থাকেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা, স্থানীয় লোকজন। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রশাসনে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। এ অবস্থায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। বার্তা সংস্থা এএফপির বরাতে এ খবর প্রকাশিত হয়েছে লন্ডনের প্রভাবশালী ডেইলি মেইলে। স্থানীয় পুলিশ প্রধান দিলীপ কুমার দাস বলেছেন, গত রোববার প্রধান শিক্ষক সেকান্দার আলী কাঁচি দিয়ে শিক্ষার্থীদের চুল কাটা শুরু করেন। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
তা সত্ত্বেও তিনি তাদের মাথায় একের পর এক কাঁচি চালাতে থাকেন। প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেন। কিছু শিক্ষার্থী বলেছে, এ সময় তারা আহত হয়েছে। ওই শিক্ষাকের মধ্যে পুরনো দিনের স্কুল শিক্ষার মানসিকতা রয়েছে। শৃংখলা ভঙ্গকারী শিক্ষার্থীদেরকে তিনি শাস্তি দিয়ে শৃংখলার মধ্যে আনার চেষ্টা করছিলেন।
কিন্তু ঘটনায় দ্রুত শহরে উত্তেজনা দেখা দেয়। কয়েকশত শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় লোকজন স্কুলে সমবেত হয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি তোলেন। শহরে প্রশাসনিক পর্যায়ে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দাখিল করে শিক্ষার্থীরা। এরপরই তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ওই শহরের প্রশাসক আনোয়ার পারভেজ বলেছেন, ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ওই রিপোর্টে আরো বলা হয়, বাংলাদেশ ১৬ কোটি ৮০ লাখ মানুষের একটি রক্ষণশীল দেশ। এখানকার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের বেত্রাঘাত সহ বিভিন্ন রকম শারীরিক শাস্তি নতুন কিছু নয়। নৃশংসভাবে শিক্ষার্থীদের বেত্রাঘাতের ফলে তারা মারাত্মক আহত হয়। এমন ধারাবাহিক রিপোর্টের পর ২০১১ সালে সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সব রকম শারীরিক ও মানসিক শাস্তি দেয়াকে নিষিদ্ধ করে। এমন শাস্তিকে নিষ্ঠুর, অমানবিক এবং অপমানজনক বলে আখ্যায়িত করা হয়। এ অবস্থায় ওই প্রধান শিক্ষকের কর্মকান্ডের নিন্দা জানিয়েছেন অধিকার বিষয়ক কর্মীরা। বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের মুখপাত্র রেজাউল করিম বলেছেন, ওই প্রধান শিক্ষক মানবাধিকার ও আইন দুটিই লঙ্ঘন করেছেন।
তদন্ত কমিটি যদি তার বিরুদ্ধে অপরাধের প্রমাণ পায় তাহলে চাকরি হারাতে পারেন ওই প্রধান শিক্ষক। সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের শারীরিকভাবে আহত করার কারণে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হতে পারে।