মৃত ব্যক্তিদের নামে ঋণ !

0

আসিফ কাজল, ঝিনাইদহ ॥ পরিবারের সদস্যদের অজান্তে মৃত ব্যক্তিদের নামে ৬ লাখ টাকা ঋণ তুলে পকেটস্থ করেছেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার সমাজসেবা অফিসের কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ। এ সব পরিবারের সদস্য কেউ ২২ বছর আগে, কেউবা ১২ বছর আগে মারা গেছেন।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, কালীগঞ্জের আজগার আলীর বাবা আনোয়ার হোসেন ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ১২ বছর আগে। সেই মৃত ব্যক্তির নামে ৪ বছর আগে ঋণ উত্তোলন দেখানো হয়েছে। একই ভাবে নিতাই কুমার মারা গেছেন প্রায় ২২ বছর আগে। তার নামেও চার বছর আগে ঋণ উত্তোলন করা হয়েছে। কালীগঞ্জ উপজেলার সমাজসেবা অফিসের আব্দুল হামিদ এভাবে ৬ জন মৃত ব্যক্তিসহ ২০ জনের নামে ৬ লাখ টাকা ভুয়া ঋণ দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করেছেন। ইতোমধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছেন।
এদিকে অভিযুক্ত সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ দাবি করেছেন, টাকাগুলো মৃত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা নিয়েছিলেন। যা পরিশোধ হয়ে গেছে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা অফিসের পক্ষ থেকে ২০১৬ সালের ১২ ডিসেম্বর উপজেলার ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের গোপিনাথপুর গ্রামের দরিদ্র ২০ ব্যক্তির নামে ঋণ বরাদ্দ হয়। ওই ঋণের টাকাও উত্তোলন করা হয় ডিসেম্বরে। এদের মধ্যে ৬ জন আছেন যারা এই ঋণ বরাদ্দ ও উত্তোলনের অনেক আগেই মারা গেছেন।
এরা হলেন, দলিল উদ্দিনের ছেলে আব্দুস সাত্তার, মকলেচুর রহমানের ছেলে আবুল হোসেন, আফজেল হোসেনের ছেলে আনোয়ার হোসেন, তৈয়ব আলীর ছেলে রবিউল ইসলাম, হিরু লালের ছেলে নিতাই কুমার ও মানিক চন্দ্রের ছেলে শক্তিপদ। এছাড়া আব্দুল মান্নানের ছেলে আব্দুল বারিক ৫ বছর ধরে বিদেশে রয়েছেন। তার নামে ৪ বছর আগে ঋণ উত্তোলন দেখানো হয়েছে। গোপিনাথপুর গ্রামের ব্যাংকার রেজাউল করিম জানান, তার নামেও ঋণ দেখানো হয়েছে। অথচ তিনি এর কিছুই জানেন না। একই গ্রামের আজগার আলী জানান, তার বাবা ১২ বছর আগে এক ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা যান। কিন্তু তার মৃত বাবার নামেও ঋণ উত্তোলন করা হয়েছে। একই গ্রামের শাহাদত হোসেন জানান, তার বাবা আব্দুস সাত্তার ঋণ এর টাকা উত্তোলনের আগেই মারা গেছেন। সম্পূর্ণ ভুয়া ভাবে এই ঋণ উত্তোলন করা হয়েছে। ব্যাংকার রেজাউল করিম আরও জানান, কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা অফিস থেকে আব্দুল হামিদ নামের ওই কর্মকর্তা এসে বিষয়টি মিটিয়ে নিতে বলেছেন। তিনি ইতোমধ্যে টাকাও পরিশোধ করেছেন বলে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ সাইদুর রহমান রেজা জানান, যারা অভিযোগ করেছেন তদন্ত কাজে তারা অসহযোগিতা করছেন। তারপরও তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে তদন্ত রির্পোট জমা দিয়েছেন।