যবিপ্রবির শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী ছাত্রী মা চাইলেন,বলছেন ভুল বোঝাবুঝি

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) শিক ড.শিমুল সাহা লাঞ্ছনার ঘটনায় মা চেয়েছেন ওই ছাত্রী ও তার পিতা। আলোচনা সৃষ্টিকারী এ ঘটনাকে এখন ভুল বোঝাবুঝি বলা হচ্ছে। গতকাল যশোর পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তৌহিদুল ইসলামের দফতরে গিয়ে লিখিতভাবে মা চেয়েছেন তারা। এদিকে যবিপ্রবি শিককের বিরুদ্ধে ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনা সত্য নয় বলে দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ। শনিবার সংবাদপত্রে প্রেরিত এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. শিমুল সাহার বিরুদ্ধে যে ছাত্রী হেনস্তার অভিযোগ করেছিল, তা সর্বৈব মিথ্যা বলে ওই ছাত্রী ও তার পিতা স্বীকার করে লিখিতভাবে ক্ষমা চেয়েছেন। তবে লিখিতভাবে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত ভিসি কিছু জানেন না বলে লোকসমাজকে জানান তিনি।
শনিবার রাতে যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. আমজাদ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ড. ইকবাল কবীর জাহিদ স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, বিনা কারণে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন ও আইন-আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ড. শিমুল সাহার বিরুদ্ধে যে কল্পিত অভিযোগ আনা হয়, তা শিক্ষক সমিতির সভায় তীব্র নিন্দা জানানো হয়। বিবৃতিতে ড. শিমুল সাহার বিরুদ্ধে অভিযোগকারী ওই ছাত্রী ও তার পিতা ঘটনা মিথ্যা বলে স্বীকার করে লিখিতভাবে ক্ষমা চেয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়। তবে রাতে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপচার্য ড. মো. আনিসুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, এ ধরনের লিখিতপত্র এখনো আমার কাছে এসে পৌছেনি। হয়তো রেজিস্ট্রারের কাছে আসতে পারে। পরে তিনি আমাকে দিবেন। ভারপ্রাপ্ত ভিসি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন ছুটি শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসলে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। তবে আমার জানামতে গতকালই বিষয়টি জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তার অফিসে বসে মীমাংসা হয়ে গেছে। এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. ইকবাল কবীর জাহিদের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে যশোরে এক সহকারী পুলিশ সুপারের মধ্যস্ততায় সুষ্ঠু সমাধান হয়েছে। একটি সামান্য ঘটনার সূত্রপাতে ভুল বুঝাবুঝির অবসান হয়েছে। এ ঘটনার জন্য অভিযোগকারী শিক্ষার্থী ও তার বাবা স্যরি বলেছেন এবং শিক্ষক শিমুল সাহা ক্ষমা করে দিয়েছেন। এমন একটি লিখিত মীমাংসাপত্র আমার কাছে আজ পৌঁছেছে বলে তিনি দাবি করেন। মীমাংসা হয়ে গেলে এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতি কেনো নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে কেনো বিবৃতি দিলেন – এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেহেতু আমরা সংগঠন করি এবং এ বিষয়ে সংবাদপত্রে সংবাদ প্রকাশ পেয়েছে। সেজন্য নিয়ম রক্ষার জন্য আমরা বিবৃতি দিয়েছি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ওই ছাত্রী ও তার পিতা লিখিতভাবে মা চেয়েছেন। তারা এ ঘটনাকে ভুল বুঝাবুঝি দাবি করেছেন বলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান। তাহলে শিক লাঞ্ছনাকারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিককে মারধর নয়,ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। প্রসঙ্গত. গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে যবিপ্রবির একটি বাস পালবাড়ি মোড়ে এসে পৌঁছালে কিছু শিার্থী সেখানে নেমে যান। এ সময় তিন যুবক বাস থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক ড. শিমুল সাহাকে নামিয়ে লাঞ্ছিত করেন। একপর্যায়ে শিার্থীরা তাদের নিবৃত্ত করেন। পরে শিক ও শিার্থীরা বাস নিয়ে ক্যাম্পাসে চলে যান। রসায়ন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ২২ শিার্থীকে নিয়ে নরসিংদীতে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্যুরে গিয়েছিলেন ওই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শিমুল সাহা ও সহকারী অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম। ঘটনার পরদিন এ বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ঘটনাটি খুবই ছোট্ট। এনিয়ে সংবাদ করার মতো নয়। বিষয়টি তাৎক্ষনিক মিমাংসা হয়ে গেছে বলে তিনি সেময় জানান। তবে সহকারী অধ্যাপক ডা. শিমুল সাহা এ বিষয়ে সাংবাদিকদের কাছে কথা বলতে রাজি ছিলেন না। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত ভাইস চ্যান্সেলর এ বিষয়ে যেকেউ দোষী বা মিথ্যা প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।