হরিণাকুণ্ডুতে চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা মুখোমুখি,পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান-মেম্বারদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগে আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। পরিষদের ৭ জন মেম্বার চেয়ারম্যান রাকিবুল হাসান রাসেলের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, চেয়ারম্যান কোন মিটিং না ডেকেই সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ করে যাচ্ছেন। সরকারি নীতিমালা না মেনে আরএমপিতে ১০ জন মহিলা নিয়োগ দিয়ে টাকা নিয়েছেন। চেয়ারম্যান রাকিবুল হাসান রাসেল ও সচিব নজরুল ইসলাম যোগসাজসে এসব করছেন। অন্যদিকে চেয়ারম্যান রাসেল তার বিরুদ্ধে অভিযোগ খন্ডন করে বলেছেন, ’অভিযোগকারী মেম্বাররা ভাতার কার্ড করে দেয়ার নামে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। আরএমপিতে মহিলা নিয়োগ দেয়ার নামে ৩০ হাজার করে ঘুষ নিয়েছেন। এসব অবৈধ কাজ আমি করিনি বলে তারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। তিনি আরো বলেন, এই ৭ জন মেম্বারের মধ্যে গোলাম সারোয়ার অভিযোগপত্রে স্বাক্ষর করেননি। তাকে ভুল বুঝিয়ে দলে ভেড়ানো হয়েছে’।
এদিকে মেম্বারদের অভিযোগ, সোনালী ব্যাংক হরিণাকুণ্ডু শাখা থেকে হাট-বাজারের ১% এর ১ লাখ ১২ হাজার টাকা ও পরবর্তীতে আরো ১ লাখ টাকা উঠিয়ে আত্মসাৎ করেছেন চেয়ারম্যান। গত ২/৩ বছরের ইউপি ট্যাক্সের ১০০% আদায়কৃত ১৩ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা করা হয়নি ও সাড়ে ৩ বছরের ট্রেড লাইসেন্সের প্রায় ৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা জমা রেখে খরচ চালিয়ে যাচ্ছেন। ২০১৭-১৮, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের এলজিএসপি-৩ এর কাজ নিজের পছন্দের ঠিকাদার দিয়ে করানো হয়েছে। ভিজিডি কার্ড করে দেয়ার জন্য গরীব ও দুস্থদের কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা করে ঘুষ নিয়ে ও সঞ্চয় বাবদ আরো ১ হাজার টাকা করে নিয়ে ব্যাংক বা কোন এনজিওতে জমা দেয়া হয়নি। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী জন্ম নিবন্ধন বাবদ ২৫ থেকে ৫০ টাকা নেয়ার কথা থাকলেও ২ শ থেকে ৩ শ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের জায়গা থাকা সত্ত্বেও তথ্য কেন্দ্রটি চেয়ারম্যানের বাড়ির পাশে ভাড়া বাড়িতে স্থাপন করা হয়েছে। এতে করে প্রতিনিয়ত জনসাধারণ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এছাড়া এডিপি ও টিআর, কাবিখা প্রকল্পে নলকূপ দেয়ার কাগজপত্রে নাম থাকলেও কোথাও কোন নলকূপ স্থাপন করা হয়নি। এসব বিষয়ে ইউপি সদস্যরা প্রতিবাদ করলে চেয়ারম্যান রাকিবুল হাসান রাসেল খারাপ আচরণ করেন। সম্প্রতি দুই মেম্বারকে পিটিয়ে মারাত্মক জখম করেছেন চেয়ারম্যানের বাহিনী। এ ব্যাপারে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রাকিবুল হাসান রাসেল জানান, মেম্বাররা জেলা প্রশাসকের কাছে যে অভিযোগ করেছেন তা সত্য নয়। বরং তারাই বয়স্কভাতা দেয়ার কথা বলে টাকা নেন। আরএপিতে ১০ জন মহিলা নিয়োগ দেবার কথা বলে অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। তিনি বলেন, আমাকে হয়রানী করার জন্য তারা এই অভিযোগ দিয়েছেন। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগকারীরা হলেন, মেম্বার বশির উদ্দিন, সাইদুর রহমান, গোলাম সরোয়ার, সোহরাব হোসেন, রেজাউল ইসলাম, আলী হোসেন মালিথা, আতিয়ার রহমান ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মোমেনা খাতুন।