মনিরামপুরে চাঁদা না পেয়ে চরমপন্থি দেবুর নেতৃত্বে গুলি চালানো হয়েছিল

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরের মনিরামপুর উপজেলার সমলডাঙ্গা বিলের দখল নিতে ব্যর্থ হয়ে শ্রীপুর গ্রামের মনিরুজ্জামানের কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিলেন চরমপন্থি নেতা দেবু সরকার ওরফে দেবু মেম্বার। কিন্তু চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় ওই চরমপন্থি নেতার নেতৃত্বে গুলি চালিয়ে জখম করা হয় মনিরুজ্জামান এবং তার শ্যালক জাহিদুল ইসলামকে। পুড়িয়ে দেয়া হয় একটি টোংঘর। পরে এ ঘটনায় ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে চরমপন্থি নেতা দেবু মেম্বারসহ ৬ জনকে আটক করে। তাদের কাছ থেকে এ সময় অস্ত্র-গুলিও উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে আটক ৬ চরমপন্থিকে বুধবার আদালতে সোপর্দ করা হলে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক গৌতম মল্লিক এবং মাহাদী হাসান পৃথকভাবে তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে ওই ৬ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। আটক ৬ চরমপন্থি ও চাঁদাবাজ হচ্ছেন, মনিরামপুর উপজেলার কুমারসীমা বেড়িবাঁধ এলাকার জনার্ধন সরকারের ছেলে দেবু মেম্বার, সুবলকাঠি গ্রামের ছুন্নত আলীর ছেলে জনি (চাচা সরাব মেম্বার), আজহার আলীর ছেলে আল মামুন হোসেন, মোতালেব বিশ্বাসের ছেলে জিকু হোসেন, ভোমরদাহ গ্রামের কায়েম গাজীর ছেলে মাসুদ হোসেন ও পাঁচবাড়িয়া জোড়া সমাধী এলাকার তপন মল্লিকের ছেলে সুরঞ্জিত মল্লিক। বুধবার দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম জানান, সমলডাঙ্গা বিল দখল ও পানি সেচ কাজের লিজ নিতে স্থানীয় কয়েকটি সন্ত্রাসী চক্র ও প্রভাবশালী মহল তৎপর। দেবু মেম্বারও বিল দখল ও পানি সেচ কাজের লিজ পাওয়ার চেষ্টা চালিয়েছিলেন। কিন্তু এতে ব্যর্থ হওয়ায় তিনি পানি সেচ কাজের লিজ গ্রহিতা মনিরুজ্জামানের কাছে ভারতীয় একটি মোবাইল ফোন নম্বর ব্যবহার করে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তবে মনিরুজ্জামান তাকে চাঁদা দিতে অস্বীকার করেন। ফলে গত ৩১ জানুয়ারি দিবাগত রাতে দেবু মেম্বারের নেতৃত্বে তার সহযোগী চরমপন্থিরা ওই বিলে গিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে বন্দুক দিয়ে মনিরুজ্জামান এবং তার শ্যালক জাহিদুল ইসলামকে গুলি করেছিলেন। এছাড়া তাদের একটি টংঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেন। এতে প্রায় ২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। পুলিশের ওই মুখপাত্র বলেন, এ ঘটনায় মামলা হলে ডিবি পুলিশকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। পরে ডিবি পুলিশ মনিরামপুর থানা পুলিশের সহযোগিতায় সুবলকাঠি, ভোমরদাহ, পাঁচবাড়িয়া ও কুমারসীমা অভিযান চালিয়ে উল্লিখিত ৬ জনকে আটক করে। এছাড়া দেবু মেম্বারের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে একটি ওয়ান শ্যুটারগান, ২টি শাটারগান এবং ১২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম রব্বানী, ডিবি পুলিশের ওসি মারুফ আহম্মদ প্রমুখ। এদিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই শামীম হোসেন জানান, তারা আটক ৬ জনের বিরুদ্ধে মনিরামপুর থানায় অস্ত্র আইনে আরেকটি মামলা করেছেন। বুধবার আটক ৬ জনকে আদালতে সোপর্দ করা হলে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।