বিদায় সংবর্ধনার নামে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে উপঢৌকন আদায় কোচিং সেন্টারের!

0

স্টাফ রিপোর্টার, মনিরামপুর (যশোর) ॥ যশোরের মনিরামপুরে এসএসসি, দাখিল এবং সমমানের পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিদায় সংবর্ধনার নামে ফার্নিচার, মাইক্রোওভেনসহ নামিদামি বিভিন্ন উপঢৌকন আদায়ের অভিযোগ উঠেছে কোচিং ও প্রাইভেটবাজ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। সামর্থ না থাকলেও অভিভাবকরা প্রায় বাধ্য হয়েই সন্তানদের মাধ্যমে এই শিক্ষকদের বিভিন্ন উপঢৌকন দিয়ে সন্তুষ্ট করতে হিমশিম খাচ্ছেন। তবে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা আফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকার জনিয়েছেন কোচিংবাজ ও প্রাইভেটবাজ শিক্ষকদের এবার পরীক্ষা কেন্দ্রে কোন প্রকার দায়িত্ব দেওয়া হবে না।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মনিরামপুর পৌরশহরসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কোচিং ও প্রাইভেট শিক্ষকদের দাপট বেড়েছে। পৌরশহরে গণিত শিক্ষক আমিনুর রহমান, আবদুস সবুর, শাহিনুর রহমান, ফিরোজ আলম, জসিম উদ্দিন, আবুল মান্নান, রবিউল ইসলাম, সঞ্জয় কুমার, কনক কুমার, ধিমান অধিকারীসহ এমন শিক্ষক রয়েছেন শতাধিক। এসব শিক্ষক নিজ বাড়ি ছাড়াও ঘরভাড়া করে অথবা স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশেষভাবে কোচিং বাণিজ্য করে আসছেন। এসএসসি, দাখিল এবং সমমান পরীক্ষা উপলক্ষে সরকার গত ২৫ জানুয়ারি থেকে দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়ে পরিপত্র জারি করেছে বেশ আগেভাগে। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, সঠিক মনিটরিংয়ের অভাবে মনিরামপুরে এসব শিক্ষক তাদের অবৈধ বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, ফিরোজ আলম, শাহিনুর রহমানসহ অধিকাংশ শিক্ষক বিদায় সংবর্ধনার নামে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে পছন্দের নামিদামি সব উপঢৌকন আদায় করছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন অভিভাবক জানান, তার সন্তান (এসএসসি পরীক্ষার্থী) দোলখোলা এলাকার রেসিডেন্সিয়াল স্কুলে ফিরোজ আলমের কোচিংয়ে লেখাপড়া করে। সকাল-বিকেল দুই শিফটে এখানে কাশ নিয়ে থাকেন ফিরোজ আলম। এবার বিদায়ী সংবর্ধনার নামে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা মূল্যের ওয়্যারড্রব আদায় করেছেন। শাহিনুর রহমান নামে অপর এক শিক্ষক পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করেছেন মাইক্রোওভেন। শুধু ফিরোজ আলম বা শাহিনুর রহমান নন, একই অভিযোগে রয়েছে প্রায় অধিকাংশ কোচিং ও প্রাইভেটবাজ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। এ ক্ষেত্রে ফিরোজ আলমের দাবি, পরীক্ষার্থীরা বিদায় অনুষ্ঠানে যদি শখ করে কোন উপহার সামগ্রী দেয়, তাহলে দোষের কিছু নেই। একই দাবি শাহিনুর রহমানেরও। এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকার জানান, ইতিমধ্যে এসএসসি, দাখিল, ভোকেশনাল এবং কারিগরি পরীক্ষার মোট ১৪ টি কেন্দ্রের সচিবদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কোচিংবাজ এবং প্রাইভেটবাজ শিক্ষকদের কোন অবস্থাতেই পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্ব না দিতে।