মোল¬াহাটে স্ত্রী সেজে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার ভাতা তুলে নেয়ার অভিযোগ

0

বাগেরহাট অফিস ॥ বাগেরহাটের মোল¬াহাট উপজেলায় ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী সেজে ভাতা ভোগ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন হাওয়া বিবি ও তার পরিবার। নিজের স্বামীর নাম ও গেজেটভুক্ত একজন মুক্তিযোদ্ধার নাম এক হওয়ায় এই সুযোগ নিয়েছে ওই পরিবারটি। উপজেলার নগরকান্দি গ্রামের মৃত মোমিন উদ্দিন মোল্লার ছেলে মমতাজ উদ্দিন মোল্লা ওরফে মোন্তাছের মোল্লা ওরফে মোন্তাছের সর্দারের স্ত্রী হাওয়া বিবি। পাঁচ ছেলে পুত্র ও চার মেয়ের জননী তিনি। ১৯৮৭ সালে তার স্বামী মমতাজ উদ্দিন মোল্লা মারা যান। একই গ্রামে মোন্তাছের শেখ নামের একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। যিনি ১৯৯৬ সালে মারা যান।
২০১৪ সালে সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের ওয়ারিশদের ভাতা দেওয়া শুরু করে। তখন নিজের স্বামীর নামেও মোন্তাছের থাকায় হাওয়া বিবি মুক্তিযোদ্ধা মোন্তাছের শেখের স্ত্রী দাবি করেন। প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা মোন্তাছেরের স্ত্রী হিসেবে প্রমাণিত হন। হাওয়া বিবি ও তার সন্তানরা। ভোগ করতে থাকেন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা মোন্তাছের শেখের ভাতা। জানা যায়, হাওয়া বিবি ও তার পরিবার ভাতা পাওয়ায় মুক্তিযোদ্ধা মোন্তাছেরের বৈধ উত্তরাধিকারীরা তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হন। এক পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা মোন্তাছের শেখের ছেলে মবজেল শেখ ও তার তিন ভাই, এক বোন তাদের ন্যায্য পাওনা পেতে এবং হাওয়া বিবির ভাতা বন্ধ করতে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী বরাবরে আবেদন করেন। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে মোল্লাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে রিপোর্ট দিতে বলেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তদন্ত করে মন্ত্রণালয়ে রিপোর্ট পাঠিয়ে দেন। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব নজরুল ইসলাম প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা মোন্তাছের শেখের বৈধ উত্তরাধিকারীদের ভাতা দেওয়ার নির্দেশ দেন। একই সাথে মিথ্যা তথ্য দিয়ে এ পর্যন্ত নেয়া সুযোগ সুবিধা ফেরত নিয়ে হাওয়া বিবির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করার নির্দেশ দেন। এই চিঠির প্রেক্ষিতে তৎকালীন মোল্লাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম হাসান হাওয়া বিবির ভাতা বন্ধ করে দেন। মোন্তাছেরের বৈধ উত্তরাধিকারী মবজেল শেখসহ তার ভাইবোনদের অনুকূলে ভাতা চালু করে দেন। কিন্তু এরপরও হাওয়া বিবি ও তার সন্তানরা বিভিন্ন ভাবে মুক্তিযোদ্ধা মোন্তাছের শেখের ভাতা ভোগ করার চেষ্টা করছেন। এমনকি মুক্তিযোদ্ধা মোন্তাছের শেখের বৈধ উত্তরাধিকারীদের ভয়ভীতিসহ বিভিন্ন সমস্যায় ফেলার চেষ্টা করছেন। হাওয়া বিবির বড় ছেলে মুক্তিযোদ্ধা মোল্লা সহিদুল ইসলাম বলেন আমার পিতার নাম মোন্তাছের শেখ। আমার পিতাই মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। ওরা মিথ্যে দাবি করছে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ফিরোজ শেখ বলেন, মোন্তাছের শেখের উত্তরাধিকারী হচ্ছেন মবজেল শেখসহ পাঁচজন। আর হাওয়া বিবির স্বামীর নাম মমতাজ উদ্দিন মোল্লা ওরফে মোন্তাছের মোল্লা। কে আসল মুক্তিযোদ্ধা এ বিষয়ে আমার জানা নেই।