খুবির হলে মাদকাসক্ত হয়ে রাতভর ৫ শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুবি) জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের একটি কে মাদকাসক্ত হয়ে পাঁচ শিার্থীকে রাতভর নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী ওই পাচঁজন ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিার্থী। নির্যাতনকারীরা একই বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের শিার্থী। এ বিষয়ে গত মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) ভুক্তভোগী শিার্থীরা বিভাগের প্রধান বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করার জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত এক বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় তথাকথিত মিটিংয়ের নামে ভুক্তভুগীদের মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছিল। যার ােভ থেকে তারা চতুর্থ বর্ষের মশিউর রাজাকে আপত্তিকর দুইটি খুদেবার্তা পাঠান। ুদেবার্তা পাঠানোর কারণ জানতে মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে রাজা দ্বিতীয় বর্ষের আখতারুল ইসলামকে মোবাইল ফোনে বঙ্গবন্ধু হলের ২০৭ নম্বর কে ডেকে নেন রাজা। এ সময় রাজার সঙ্গে ছিলেন একই ডিসিপ্লিনের চতুর্থ বর্ষের শিার্থী রাজ বর্মন (বিধান), মিনহাজুর রহমান, ফাহাদ রহমান ( অঝোর) এবং মাস্টার্সের শিার্থী সাবেরুল বাশার (নিরব)। লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়, ওই কে উপস্থিত অভিযুক্ত শিার্থীরা মাদক সেবনরত অবস্থায় তাস খেলছিলেন। তাস খেলা শেষে তারা আখতারুল ইসলামের কাছে ুদে বার্তা পাঠানোর কারণ জানতে চান। একপর্যায়ে আখতার ভীত হয়ে বলতে না চাইলে তাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। প্রথমে চুল ধরে তার গালে কয়েকটি চড় মারা হয়। তখন আখতার ভুল স্বীকার করে কাঁদতে কাঁদতে রাজার পা ধরে মা চান। কিন্তু এরপরও তারা অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে যায়। নির্যাতনের একপর্যায়ে আখতারের মাধ্যমে ফোনে তার সহপাঠী মো. আশিকুর রহমানকে ওই রুমে ডেকে আনা হয়। আশিক রুমে আসলে তার ওপরও শুরু হয় নির্যাতন। একপর্যায়ে তাকে লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। এরপর ভোর ৪টার দিকে দ্বিতীয় বর্ষের আরেক শিার্থী মো. মহিদুজ্জামানকে রুমে আনা হয়। সেসময় তার সামনেই আশিক ও আখতারকে ফের শারীরিক নির্যাতন করা হয়।
এরপর ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে দ্বিতীয় বর্ষের শিার্থী মেহেদী হাসানকে একই কে ডেকে একই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে তার অভিভাবকের ফোন নম্বর নেয়া হয়। ফোন নম্বর দেয়ার পরও রাজা তাকে থাপ্পড় মারেন এবং বিধান তাকে কানে আঘাত করে জামার কলার ধরে টানাহেঁচড়া করে। পরবর্তীতে ভোর ৬টায় মহিদুজ্জামান ও আশিকের মাধ্যমে ২য় বর্ষের তানজিম হাসান অপু, হাবিবুর রহমান এবং রাকিব হাসানকে তাদের মেসের রুম থেকে বঙ্গবন্ধু হলের একই কে ডেকে নেয়া হয়। সবাই উপস্থিত হলে মেহেদি হাসানকে বিধান তার বাবা-মা তুলে গালিগালাজ করেন। পরে জোরপূর্বক তাদের মধ্যে থেকে পাঁচজনের লিখিত বিবৃতি ও স্বার নিয়ে তা ভিডিও করে রাখেন। মারধরের কারণ জানতে মশিউর রহমান রাজার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে জানান। লিখিত অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইংরেজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক এ আর এম মুস্তাফিজার রহমান। তিনি বলেন, ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে প্রফেসর মো. ইমদাদুল হককে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভিযুক্তদের নামে এর আগেও এ ধরনের অভিযোগ আছে বলে উল্লেখ করেছেন কয়েকজন শিক। তিনি বলেন, আগামী রোববার থেকে তদন্ত শুরু হবে। যত দ্রুত সম্ভব তারা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিবেন। এছাড়াও বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক এবং উপচার্যকে জানানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক প্রফেসর মো. শরিফ হাসান লিমন বলেন, ওই শিার্থীদের বিরুদ্ধে মাদক সেবনের অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বলেন, ইংরেজি বিভাগে যে অভিযোগ উঠেছে সেটা এক প্রকার সন্ত্রাসী কার্যক্রম। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে দোষীদের কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।