ইসির নির্দেশ সত্ত্বেও সরেনি ফুটপাতের নির্বাচনী ক্যাম্প

0

লোকসমাজ ডেস্ক ॥ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচন উপলক্ষে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ফুটপাতের ওপর স্থাপিত নির্বাচনী ক্যাম্প অপসারণে নির্দেশ দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গত মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে জারি করা ওই নির্দেশনায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এসব ক্যাম্প অপসারণের কথা বলা হলেও শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরেও বিভিন্ন এলাকার ফুটপাত এবং সড়কের পাশে সেসব ক্যাম্প দেখা গেছে।
ডিএনসিসির রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবুল কাসেমের ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, ‘ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ফুটপাতের ওপর মেয়র, সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীদের স্থাপিত নির্বাচনী ক্যাম্প অপসারণের জন্য নির্বাচন কমিশন নির্দেশনা প্রদান করেছে। এ অবস্থায় আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাস্তার ফুটপাতের ওপর স্থাপিত সব নির্বাচনী ক্যাম্প অপসারণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।’ কিন্তু এমন নির্দেশনার ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) ডিএনসিসি এলাকায় এমন ক্যাম্প দেখা গেছে। অন্যান্য সব এলাকার পাশাপাশি বাড্ডা এলাকায়ও একজন কাউন্সিলর প্রার্থীর পক্ষে এমন নির্বাচনী ক্যাম্প দেখা গেছে। গুদারাঘাট সংলগ্ন কাঁচা বাজারের পাশে এমন তিন-চারটি নির্বাচনী ক্যাম্পে গিয়ে দেখা যায়, ক্যাম্পর ভেতরে ব্যানার-ফেস্টুনে ভরা। সাজিয়ে রাখা আছে টেবিল-চেয়ার।
এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে ওই ক্যাম্পের কর্মী সাইফুর রহমান বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এসব ক্যাম্প অপসারণে ইসির নির্দেশের পর আমরা আর তেমনভাবে ব্যবহার করছি না। তবে অপসারণ এখনো করা হয়নি। ডেকোরেশনের লোক এসে এসব প্যান্ডেল, চেয়ার, টেবিল নিয়ে যাবে। আমরা শুধু মাঝে মাঝে বসি। তবে নির্বাচনী ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করছি না। এদিকে নির্বাচনীবিধি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাত ১২টায় ঢাকার দুই সিটির (ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি) নির্বাচনের প্রচার শেষ হয়েছে। আগামীকাল শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টায় ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে শুরু হবে ভোটগ্রহণ। চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। নির্বাচনের প্রচারণার অংশ হিসেবে পুরো ঢাকা শহর ব্যানার-পোস্টারে ছেয়ে গেছে।
উত্তর ও দক্ষিণ অংশে বিভক্ত ঢাকার দুই নগরপিতা নির্বাচনের এ আনুষ্ঠানিকতা ঘিরে বহু আগে থেকেই চলে আসছিল নির্বাচনী আমেজ। ব্যানার-পোস্টারে অনানুষ্ঠানিকভাবে বেশ আগে থেকেই চলছিল প্রচার-প্রচারণা। আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর পর লেমিনেটেড পোস্টারে সয়লাব হয়ে যায় পুরো ঢাকা। এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (এসডো) ভাষ্যে, এ নির্বাচনের প্রচারণা শুরুর প্রায় ১২ দিনের মধ্যেই ২ হাজার ৪৭২ টন লেমিনেটেড প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপন্ন হয়েছে। পুরো নির্বাচনে পোস্টার থেকে বর্জ্য জমবে ২ হাজার ৫০০ টন। এছাড়া নির্বাচনী পোস্টারসহ সব মিলিয়ে গত এক বছরে ঢাকা শহরে ১০ হাজার টন লেমিনেটেড পোস্টারের বর্জ্য তৈরি হয়েছে। পুরো নির্বাচনে পোস্টার থেকে বর্জ্য জমবে ২ হাজার ৫০০ টন, বলছে পরিবেশবাদী সংস্থা এসডো
এদিকে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ বলছে, দুই সিটি নির্বাচনের প্রচারণা উপলক্ষে প্রার্থীদের পোস্টার, ব্যানার, দেয়াল লিখন, বিলবোর্ড, গেইট, তোরণ বা ঘের, প্যান্ডেল ও আলোকসজ্জা ইত্যাদি প্রচারসামগ্রী ও নির্বাচনী ক্যাম্প নির্বাচন শেষে ব্যক্তিগত উদ্যোগে সরিয়ে নিতে বলা হবে। এরপর যথাযথ ব্যবস্থা নিতে মাঠে নামবে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। এখনো বহাল নির্বাচনী ক্যাম্প, অথচ ইসির নির্দেশনা অনুসারে বুধবার রাতেই এসব ক্যাম্প অপসারণ করে নেয়ার কথা ইসি সূত্র জানা গেছে, ডিএনসিসিতে মোট ভোটার সংখ্যা ৩০ লাখ ১০ হাজার ২৭৩ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ১৫ লাখ ৪৯ হাজার ৫৬৭ এবং নারী ১৪ লাখ ৬০ হাজার ৭০৬ জন। এই সিটিতে মোট ভোটকেন্দ্র এক হাজার ৩১৮টি। অন্যদিকে ডিএসসিসিতে মোট ভোটার সংখ্যা ২৪ লাখ ৫৩ হাজার ১৯৪। এর মধ্যে পুরুষ ১২ লাখ ৯৩ হাজার ৪৪১ এবং নারী ১১ লাখ ৫৯ হাজার ৭৫৩। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা এক হাজার ১৫০।